Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
Narendra Modi

BJP: প্রধানমন্ত্রী মোদীর জন্যই ভারত ‘উন্নতির পথে’, ভোটের আগে জোরদার প্রচারে নামছে বিজেপি

মোদী জমানায় সীমান্তে সড়ক পরিকাঠামো উন্নত করার কাজ দ্রুতগতিতে হয়েছে বলে দাবি করেন নড্ডা।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০২১ ০৬:৩৮
Share: Save:

নাম না করে গত কাল তালিব জঙ্গিদের সন্ত্রাসের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের সমালোচনা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেছিলেন, বিভেদকামী শক্তিরা সন্ত্রাসের মাধ্যমে সাম্রাজ্য বিস্তার করলেও, এদের অস্তিত্ব দীর্ঘস্থায়ী হয় না। আজ পাল্টা আক্রমণে বিরোধী দলের নেতারা দাবি করলেন, বিদেশের কথা না ভেবে প্রধানমন্ত্রী বরং আত্মসমীক্ষা করুন। তাঁদের কথায়, প্রধানমন্ত্রীর উচিত বিজেপিতে তালিব জঙ্গিদের মতো কট্টর মনোভাবাপন্ন যে নেতারা রয়েছেন, তাঁদের নিয়ন্ত্রণ করা। কারণ, তালিব জঙ্গিদের যে মনোভাব, সেই কট্টর মনোভাব ভারতেও রয়েছে।

বছর ঘুরলেই উত্তরপ্রদেশ-সহ একাধিক রাজ্যে নির্বাচন। গত কাল যে ভাবে প্রধানমন্ত্রী তালিবানকে নিয়ে সরব হয়েছিলেন, তাতে আসন্ন নির্বাচনে মেরুকরণের তাস খেলতে বিজেপি যে এই ঘটনাকে প্রচারে কাজে লাগাতে চাইবে, তা স্পষ্ট। বিজেপির লক্ষ্য, জনমানসে এই বার্তা দেওয়া — প্রতিবেশী পাকিস্তান-আফগানিস্তান অশান্ত হলেও ভারত যে ‘উন্নতির পথে’ এগিয়ে চলেছে তার একমাত্র কারণ নরেন্দ্র মোদী। একমাত্র মোদীই পারেন এ দেশকে সুরক্ষিত রাখতে। আজ সেই সূত্র ধরেই উত্তরাখণ্ডের রায়বালায় সৈনিক সম্মান অনুষ্ঠানে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ভারত শক্তিশালী, সুরক্ষিত থাকবে ও দ্রুত গতিতে উন্নয়নের পথে এগোতেও প্রস্তুত।’’

বিজেপি সূত্রের মতে, এ যাবৎ ভোট প্রচারে মেরুকরণের লক্ষ্যে পাকিস্তানকেই হাতিয়ার করে এসেছে দল। মূলত হিন্দু-মুসলিম ভোট বিভাজনের লক্ষ্যে ওই কৌশলে বাড়তি যোগ হয়েছে আফগানিস্তানে তালিবানের ক্ষমতাদখল। রাজনীতির অনেকের মতে, আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক পট পরিবর্তন কাশ্মীরে প্রভাব ফেলতে পারে। এতে দেশে জঙ্গিদের সক্রিয়তা বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন প্রাক্তন সামরিক কর্তাদের একাংশ। তা মাথায় রেখে দেশ যে একমাত্র মোদীর নেতৃত্বেই নিরাপদ, সেই প্রচারে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল। বিজেপির এক নেতার কথায়, উত্তরপ্রদেশ বাদ দিলে উত্তরাখণ্ড, পঞ্জাবের মতো যে রাজ্যগুলিতে নির্বাচন রয়েছে, সেখানে প্রধানমন্ত্রীকে মুখ করে নির্বাচনে লড়তে চলেছে দল। সেই মতো আজ সৈনিক সম্মান অনুষ্ঠানে নড্ডা বলেন, ‘‘দশ বছর আগে ইউপিএ জমানায় প্রতিরক্ষা খাতের বাজেট ছিল ১,৪৩,০০০ কোটি টাকা। চলতি অর্থ বর্ষে তা হয়েছে ৪,৭৮,০০০ কোটি টাকা। ভারতের হাতে রাফালের মতো বিমানের সঙ্গে ১,৩৫,০০০ কোটি বরাদ্দ করা হয়েছে অত্যাধুনিক অস্ত্র কেনার জন্য।’’

মোদী জমানায় সীমান্তে সড়ক পরিকাঠামো উন্নত করার কাজ দ্রুতগতিতে হয়েছে বলে দাবি করেন নড্ডা। তিনি জানান, সীমান্ত এলাকায় সব মিলিয়ে ৩,৮১২ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের লক্ষ্য নিয়েছিল সরকার, যার মধ্যে ইতিমধ্যেই ৩,৩০০ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। নড্ডার দাবি, এর ফলে দেশের সীমান্ত পরিকাঠামো আগের চেয়ে মজবুত। আর এ সব হয়েছে নরেন্দ্র মোদীর ‘দূরদৃষ্টির’ কারণে। সূত্রের মতে, আগামী দিনে নড্ডার সুরেই সরব হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দলের অন্য নেতাদের।

এ দিকে গত কাল তালিব জঙ্গিদের ক্ষমতা দখলের সমালোচনা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আজ পাল্টা আক্রমণে কংগ্রেস নেতা শক্তি সিন গোহিল প্রধানমন্ত্রীকে আত্মসমীক্ষা করার পরামর্শ দেন। বিজেপির ভিতরে তালিবদের মতো যে কট্টর মুখ রয়েছে, তাঁদের মনোভাবের সমালোচনা করে গোহিল বলেন, ‘‘যদি খুব কাছ থেকে দেখা যায়, তা হলে দেখা যাবে এ দেশেও সে রকম কট্টরপন্থীরা রয়েছে। যারা মানবতায় বিশ্বাস করে না। তারা শুধু সন্ত্রাসে বিশ্বাস করে। প্রধানমন্ত্রী যা বলেছেন, তা সকল দেশবাসীর সঙ্গে তাঁর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।’’ কংগ্রেসের কর্নাটকের নেতা দীনেশ গুন্ডু রাও বলেন, ‘‘আমাদের আত্মসমীক্ষা করা উচিত। বিজেপির যে নেতা-কর্মীরা নিজেদের বক্তব্যের মাধ্যমে হিংসা ও দ্বেষ ছড়ান, তাঁদের নিয়ন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী ব্যর্থ। তা হলে অন্য দেশ নিয়ে আলোচনা করে লাভ কী!’’ পাল্টা যুক্তিতে বিজেপি নেতাদের বক্তব্য, গোটা বিশ্ব তালিবানের ভূমিকার সমালোচনায় সরব। সেখানে ভারতের তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ দলের নেতারা সংখ্যালঘু ভোট পাওয়ার আশায় এখন তালিবানের সমর্থনে মুখ খুলছেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Narendra Modi JP Nadda BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy