১০ বছর ধরে বর্ডার সিকিয়োরিটি ফোর্স তিলে তিলে তৈরি করেছে এই সুড়ঙ্গপথ। ৫০ মিটার অন্তর আছে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা। ২৫০ মিটার অন্তর বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২০ ১৪:৫১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১২
দেশের পার্বত্য অঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন ডানা যোগ করল অটল টানেল। হাথরসকাণ্ডে দেশজুড়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই শনিবার এই সুড়ঙ্গ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
০২১২
সমুদ্রতল থেকে ১০ হাজার ফুট উচ্চতায় এই টানেল তৈরি করা হয়েছে পিরপঞ্জাল পাহাড় কেটে। এত উচ্চতায় এটাই বিশ্বের দীর্ঘতম সড়ক-সুড়ঙ্গ।
০৩১২
৯.২ কিমি দৈর্ঘ্যের এই সুড়ঙ্গের ব্যবহারে মানালি এবং লে-এর মধ্যে দূরত্ব কমবে ৪৬ কিলোমিটার। ফলে আগের চেয়ে সময় কমপক্ষে চার ঘণ্টা কম লাগবে।
০৪১২
অশ্বক্ষুরাকৃতি এই টানেলে দু’টি লেন। দু’দিকেই ফুটপাত। রাস্তার প্রস্থ আট মিটার। ওভারহেড ক্লিয়ারেন্স ৫.৫২৫ মিটার। দৈনিক তিন হাজার ছোট চার চাকার গাড়ি এবং দেড় হাজার ট্রাক ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার সর্বোচ্চ গতিবেগে যাতায়াত করতে পারবে।
০৫১২
২০০২ সালে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পরে টানেলের জন্য প্রথম বিস্ফোরণে পাথর ফাটানো হয়েছিল ২০১০ সালে। শেষ বার ব্লাস্ট ঘটানো হয় ২০১৭-এ। ‘নিউ অস্ট্রিয়া টানেলিং মেথড’-এর মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে সুড়ঙ্গটি নির্মিত হয়।
০৬১২
১০ বছর ধরে বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশন তিলে তিলে তৈরি করেছে এই সুড়ঙ্গপথ। ৫০ মিটার অন্তর আছে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা। ২৫০ মিটার অন্তর বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা।
০৭১২
টানেলের অন্দরে অক্সিজেনের মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ প্রযুক্তির ব্যবহার করা হয়েছে। আগুনের মোকাবিলার জন্য রয়েছে জলের পাইপলাইন এবং ৫০ মিটার অন্তর ‘ফায়ার রেটেড ডাম্পার’। নিরাপত্তা নজরদারির উদ্দেশ্যে ২৫০ মিটার অন্তর থাকছে সিসিটিভি ক্যামেরা। টানেলের ‘সাউথ পোর্টাল’-এর অবস্থান মানালি থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে। ‘নর্থ পোর্টাল’-টি লাহুল উপত্যকার তেলিংয়ের সিসু গ্রামে।
০৮১২
দেশের প্রতিরক্ষার দিক দিয়ে ‘অটল টানেল’-এর অবস্থান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সীমান্তে রসদ পাঠানো থেকে সেনা মোতায়েন— সবই আগের চেয়ে অনেক অনায়াসে করা যাবে বলে দাবি প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহর।
০৯১২
সীমান্ত পরিকাঠামোর প্রশ্নে এত গুরুত্বপূর্ণ একটি সুড়ঙ্গ কংগ্রেসের আমলে দীর্ঘসূত্রিতার শিকার হয়েছে, এই অভিযোগে সরব হন মোদী। তিনি বলেন, ‘‘অটলবিহারী বাজপেয়ী জমানার শেষ পর্যায়ে ওই প্রকল্পে কাজ শুরু হয়। কিন্তু ২০০৪ সালে ইউপিএ ক্ষমতায় আসতেই প্রকল্পের কাজ থমকে যায়। ইউপিএ-র দশ বছরে মাত্র ১৩০০ মিটার সুড়ঙ্গ নির্মাণ হয়েছিল।’’
১০১২
মোদীর দাবি, ওই গতিতে কাজ চললে প্রকল্পটি ২০৪০ সালে শেষ হত। কিন্তু তাঁর সরকার এসে সীমান্ত পরিকাঠামো উন্নয়নে নজর দিয়েছে। আগের সরকার যেখানে বছরে গড়ে ৩০০ মিটার নির্মাণের কাজ করেছিল, সেখানে এনডিএ প্রতি বছর ১৪০০ মিটার নির্মাণ করে ছ’বছরে কাজ শেষ করেছে।
১১১২
মোদীর কথায়, ‘‘২৬ বছরের বাকি কাজ মাত্র ছ’বছরে শেষ করা হয়েছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘অটল সুড়ঙ্গের মতোই দৌলত বেগ ওল্ডি এয়ারস্ট্রিপ পাঁচ দশক ধরে বন্ধ ছিল।’’ মোদীর দাবি, তাঁর সরকারের আমলে লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার এক পাশে থাকা দৌলত বেগ এয়ারস্ট্রিপ ফের চালু হয়।
১২১২
প্রসঙ্গত এই এয়ারস্ট্রিপ চালু করা নিয়ে তীব্র আপত্তি ছিল বেজিংয়ের। লাদাখে ভারত-চিন সীমান্ত সংঘর্ষের পিছনে অন্যতম কারণই হল এই এয়ারস্ট্রিপ চালু করা। কূটনীতিগত দিক থেকে দৌলত বেগ এয়ারস্ট্রিপের মতোই গুরুত্বপূর্ণ অটল টানেল, ধারণা বিভিন্ন মহলে।