Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪

৫৬ বছরের যাত্রায় ইতি, থামল বিরাট

অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু চান, বিলাসবহুল হোটেল হোক। সমুদ্রে ডুবিয়ে দেওয়ার প্রস্তাবও রয়েছে। অ্যাডভেঞ্চার-প্রিয় পর্যটকরা ডুবুরি হয়ে জলের তলায় দর্শন করে আসবেন। শেষে কিছুই না হলে শরীর থেকে লোহালক্কর বের করে বেচে দেওয়া হবে। সেই ইস্পাতে হয়তো তৈরি হবে নতুন বাইক বা গাড়ি।

মুম্বই ডকইয়ার্ডে বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ আইএনএস বিরাটের বিদায় অনুষ্ঠানে নৌসেনার অফিসাররা। সোমবার। ছবি: পিটিআই

মুম্বই ডকইয়ার্ডে বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ আইএনএস বিরাটের বিদায় অনুষ্ঠানে নৌসেনার অফিসাররা। সোমবার। ছবি: পিটিআই

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৭ ০৩:৫৩
Share: Save:

অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু চান, বিলাসবহুল হোটেল হোক। সমুদ্রে ডুবিয়ে দেওয়ার প্রস্তাবও রয়েছে। অ্যাডভেঞ্চার-প্রিয় পর্যটকরা ডুবুরি হয়ে জলের তলায় দর্শন করে আসবেন। শেষে কিছুই না হলে শরীর থেকে লোহালক্কর বের করে বেচে দেওয়া হবে। সেই ইস্পাতে হয়তো তৈরি হবে নতুন বাইক বা গাড়ি।

বৃদ্ধা ‘বিরাট’কে নিয়ে কী করা যায়, তা নিয়ে এমনই চিন্তা চলছে দিল্লির প্রতিরক্ষা মন্ত্রকে।

বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ আইএনএস বিরাট আজই অবসর নিয়েছে। ভারতীয় নৌসেনার এই যুদ্ধজাহাজকে রণতরী বংশের বৃদ্ধা ঠাকুরমা বলা হয়। কারণ বিশ্বে এত পুরনো কোনও যুদ্ধজাহাজ সামরিক বাহিনীর হয়ে কাজ করছিল না। ৫৬ বছরের কেরিয়ার। প্রথমে ১৯৫৯ থেকে ১৯৮৪—ব্রিটিশ রয়্যাল নেভিতে। ফকল্যান্ড যুদ্ধে আর্জেন্তিনাকে ব্রিটিশদের ঘোল খাওয়ানো এই যুদ্ধজাহাজে চেপেই। তখন নাম ছিল হার্মেস।

১৯৮৭-তে ভারতে এসে নাম হল বিরাট। আক্ষরিক অর্থেই বিরাট এই যুদ্ধজাহাজের ওজন ২৭,৮০০ টন। বুকে যুদ্ধবিমান-কপ্টার নিয়ে যে ৫,৮৮,২৮৮ নটিকাল মাইল পাড়ি দিয়েছে, তাতে ২৭ বার এই পৃথিবী পাক খেয়ে আসা যায়। বিরাটের বুক থেকেই দিনের পর দিন আকাশে ডানা মেলেছে সি হ্যারিয়ার্সের মতো যুদ্ধবিমান, সি-কিং, চেতকের মতো হেলিকপ্টার।

সোমবার ইতি পড়ল সেই যাত্রায়। সূর্যাস্তে মুম্বই ডকইয়ার্ডে বিরাটের বুকে উড়তে থাকা নৌসেনার পতাকা শেষ বারের মতো নামিয়ে আনা হল। ১৯৮৯-এ শ্রীলঙ্কায় ভারতীয় সেনার ‘পিসকিপিং মিশন’-এ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল বিরাট। ২০১১-র সংসদ হামলার পরে পাকিস্তানকে চোখ রাঙানো ‘অপারেশন পরাক্রম’-এও আরব সাগরে ঢেউ তুলেছিল সে। কিন্তু ইদানীং তাকে জলে নামালে কাজের থেকে খরচ হতো বেশি।

এখন প্রশ্ন, বিরাটের ভবিষ্যৎ কী? উপকূলবর্তী রাজ্যগুলির কাছে কেন্দ্র জানতে চেয়েছিল, কোনও পরিকল্পনা রয়েছে কি না। অন্ধ্রের চন্দ্রবাবুর প্রস্তাব, বিরাটকে বিশাখাপত্তনমে নিয়ে এসে বিলাবহুল হোটেল তৈরি করতে চান। সঙ্গে জাদুঘর। সমস্যা হল, এতে খরচ হবে ১০০০ কোটি টাকা। যার অর্ধেক কেন্দ্রের কাছেই চাইছেন চন্দ্রবাবু। নৌসেনা প্রধান অ্যাডমিরাল এস লাম্বার প্রস্তাব, এত কাণ্ড না করে বিরাটকে কোনও উপকূলের কাছে ডুবিয়ে দেওয়া যায়। ডুব দিয়ে দেখবে সবাই। তার আগে চার-ছ’মাস ধরে বিরাটের শরীর থেকে অস্ত্রশস্ত্র ও যোগাযোগের সরঞ্জাম খুলে নেওয়া হবে।

কিছুই না হলে বিরাটের গতি হবে গুজরাতের অলং, জাহাজ ভাঙার কারখানায়। আইএনএস বিক্রান্তের ভাগ্যে তাই ঘটেছিল। সে অবশ্য অন্য রূপে ফিরে এসেছে। বজাজ সংস্থা ভি১৫ বাইক বাজারে ছেড়ে জানিয়েছে, বিক্রান্তের ধাতুতেই তৈরি এই বাইক। বৃদ্ধা বিরাটের ভাগ্য এখন প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পর্রীকরের হাতে।

অন্য বিষয়গুলি:

INS Viraat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy