সঞ্জয় নিরুপম। ফাইল চিত্র।
সনিয়া গাঁধী সভানেত্রীর পদে ফেরার পর দলের নবীন বনাম প্রবীণ ফাটল চওড়া হতে শুরু করেছিল। প্রবীণ ব্রিগেডের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছিল, তাঁরাই দলের রাশ হাতে নিচ্ছেন, কোণঠাসা হয়ে পড়ছেন নবীন নেতারা।
দলের মধ্যে সেই অন্তর্কলহ আজ প্রকাশ্যে এনে ফেললেন মুম্বইয়ের কংগ্রেস নেতা সঞ্জয় নিরুপম। মহারাষ্ট্রের বিধানসভা ভোটে টিকিট বিলি নিয়ে ক্ষুব্ধ নিরুপম আজ অভিযোগ করেছেন, দিল্লি থেকে ‘ষড়যন্ত্র’ হচ্ছে। কিছু লোক রাহুল গাঁধীর সঙ্গে কাজ করে আসা নেতাদের ছোট করে দেখাচ্ছেন। তাঁদের দলীয় ব্যবস্থার বাইরে ছুড়ে ফেলা হচ্ছে। নিরুপম বলেন, ‘‘আমি নিজে এর উদাহরণ। হরিয়ানায় অশোক তানওয়ারের সঙ্গে একই ঘটনা ঘটেছে। ত্রিপুরা কংগ্রেসের প্রধান প্রদ্যোৎকিশোর মাণিক্য দেববর্মণ একই সমস্যায় পড়েছেন।’’
সকলে এখনও নিরুপমের মতো মুখ খোলেননি। কিন্তু কংগ্রেসের বড় অংশের মত, নিরুপম খুব ভুল বলছেন না। এই নবীন প্রজন্মের নেতাদের আঙুল মূলত আহমেদ পটেলের দিকে। তালিকায় রয়েছেন মল্লিকার্জুন খড়্গে, ভূপিন্দর সিংহ হুডার মতো প্রবীণ নেতারাও। অভিযোগ, পটেলের নেতৃত্বে বৃদ্ধ-ব্রিগেড সনিয়াকে সামনে রেখে দলের নিয়ন্ত্রণ হাতে নিয়ে নিচ্ছেন। ‘টিম রাহুল’-এর সদস্যদের ঘাড়ে লোকসভা নির্বাচনের পরাজয়ের দায় চাপিয়ে তাঁদের সরানো হচ্ছে। নিরুপম বলেন, ‘‘সনিয়া গাঁধীর পরের স্তরের কিছু নেতা, যাঁরা এখন চামচা হয়ে উঠেছেন, তাঁরাই এখন অগ্রাধিকার পাচ্ছেন। দলের নিচুতলার মতামত শোনা হচ্ছে না।’’ মহারাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত নেতা খড়্গেকে নিশানা করে নিরুপমের মন্তব্য, ‘‘ভারপ্রাপ্ত এআইসিসি নেতা বিরাট ক্ষমতাশালী হয়ে উঠেছেন। দলের ক্ষমতার কাঠামোর মধ্যেই ত্রুটি রয়েছে। ভবিষ্যতে আরও সমস্যা হবে।’’
কংগ্রেসের নবীন এক নেতা বলেন, ‘‘আর্থিক সঙ্কটের কুফল সকলে টের পাচ্ছেন। বিজেপি-র এনআরসি-র হুঁশিয়ারিতে বহু রাজ্যের মানুষ আতঙ্কিত। গাঁধীর দেড়শো-তম জন্মবার্ষিকী নিয়ে কংগ্রেস কোথায় মাঠে নামবে, তা নয়, বিজেপি-আরএসএস পুরো ফায়দা তুলে নিচ্ছে।’’ টিম রাহুল-এর এক সদস্যর প্রশ্ন, ‘‘লোকসভা নির্বাচনে যে রকম খারাপ ফল হয়েছে, তার পরে হারানোর কিছু নেই। তা হলে সর্বশক্তি দিয়ে কংগ্রেস মাঠে নামছে না কেন?’’
কংগ্রেস নেতৃত্ব এ দিন বিদ্রোহ ধামাচাপা দিতে ব্যস্ত থেকেছেন। এআইসিসি-র মুখপাত্র মণীশ তিওয়ারি বলেন, ‘‘নিরুপমকে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে তিনি সংযত হন। কল্পনায় তৈরি এ সব ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব আকাশে ওড়ানো উচিত নয়।’’ হরিয়ানার সদ্য-প্রাক্তন প্রদেশ সভাপতি অশোক তানওয়ারকেও সতর্ক করে তিওয়ারি বলেন, দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা দুই নেতার বোঝা উচিত, তাঁদের মন্তব্যে বিজেপির যেন সুবিধা না হয়।
হরিয়ানায় নবীন কংগ্রেস নেতা অশোক তানওয়ারকে প্রদেশ সভাপতি করেছিলেন রাহুল। কিন্তু প্রবীণরা তাঁকে কাজই করতে দেননি বলে অভিযোগ। এ বার তানওয়ারকে সরিয়ে হুডা, কুমারী শৈলজা-র হাতে হরিয়ানার ভোটের ভার দেওয়া হয়েছে। তানওয়ার বা তাঁর ঘনিষ্ঠ নেতাদের কাউকে প্রার্থী করা হয়নি। তানওয়ার অবশ্য সমস্ত নির্বাচন কমিটি থেকে পদত্যাগ করেছেন।
উত্তরপ্রদেশে রাহুল-ঘনিষ্ঠ রায়বরেলীর বিধায়ক অদিতি সিংহও যে দলীয় নেতৃত্বের উপর ক্ষুব্ধ, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন। দলীয় নির্দেশ অমান্য করে তিনি ২ অক্টোবর বিধানসভার অধিবেশনে যোগ দিয়েছিলেন। আজ তাঁকে দলের তরফে শো-কজ নোটিস দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy