হাহাকার: জঙ্গি হামলায় নিহত আকাশ মেহরার শেষকৃত্যে তাঁর পরিবার। রবিবার জম্মুতে। ছবি: পিটিআই।
জঙ্গিদের গুলিতে ১৭ ফেব্রুয়ারি আহত হয়েছিলেন শ্রীনগরের জনপ্রিয় রেস্তরাঁ ‘কৃষ্ণ ধাবা’-র মালিক আকাশ মেহরা। আজ হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে তাঁর।
শ্রীনগরের সুরক্ষিত দুর্গানাগ এলাকায় রাষ্ট্রপুঞ্জের সামরিক পর্যবেক্ষকের অফিস ও জম্মু-কাশ্মীর হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বাসভবনের কাছেই নিরামিষ খাবারের রেস্তরাঁ ‘কৃষ্ণ ধাবা’। তার মালিক মেহরা পরিবারের সদস্যেরা আদতে জম্মুর বাসিন্দা হলেও দীর্ঘদিন ধরেই থাকেন শ্রীনগরে। ১৭ ফেব্রুয়ারি রেস্তরাঁর কাছেই আকাশকে গুলি করেছিল জঙ্গিরা।
ঘটনার দায় স্বীকার করেছে ‘মুসলিম জানবাজ় ফোর্স’ নামে একটি সংগঠন। পুলিশ জানিয়েছে, এই সংগঠনটি ১৯৯০-এর দশকে কাশ্মীরে সক্রিয় ছিল। তবে এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে লস্কর ই তইবার সঙ্গে যুক্ত একটি সংগঠনের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গোয়েন্দাদের ধারণা, লস্কর ও জইশ প্রবল আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়ায় পুরনো জঙ্গি সংগঠনগুলির নাম ব্যবহার করছে পাকিস্তানি মদতে পুষ্ট জঙ্গিরা।
গোয়েন্দা সূত্রের মতে, আকাশ মেহরার উপরে হামলা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু-কাশ্মীরে নয়া ডোমিসাইল আইনের অধীনে কোনও ‘বহিরাগত’ ডোমিসাইল শংসাপত্র নিলে তাঁকে ভুগতে হবে বলে হুমকি দিয়েছিল জঙ্গি সংগঠনগুলি। গত জানুয়ারি মাসে শ্রীনগরের সরাইবালা এলাকায় স্বর্ণ ব্যবসায়ী সতপাল নিশ্চলকে গুলি করে খুন করে জঙ্গিরা। আদতে পঞ্জাবের বাসিন্দা সতপাল প্রায় চার দশক ধরে শ্রীনগরে স্বর্ণ ব্যবসায়ী হিসেবে কাজ করেছেন। নয়া আইনে ডোমিসাইল শংসাপত্র পাওয়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই তাঁকে খুন করা হয়।
সম্প্রতি গঠিত জঙ্গি সংগঠন ‘দ্য রেজ়িস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ এই ঘটনার দায় নিয়েছে। তাদের তরফে স্পষ্টই বলা হয়েছে, যে ‘বহিরাগতেরা’ ডোমিসাইল শংসাপত্র নিচ্ছেন তাঁরা ‘আরএসএসের এজেন্ট’। তাঁদের নাম, বাসস্থান এবং তাঁরা আদতে কোন এলাকার বাসিন্দা তা তারা জানে। এর পরে কাশ্মীরে বেশ কয়েকটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সামনে সাঁজোয়া গাড়ি মোতায়েন করেছে পুলিশ।
নয়া ডোমিসাইল আইন অনুযায়ী, জম্মু-কাশ্মীরে যাঁরা ১৫ বছর ধরে রয়েছেন তাঁরা ডোমিসাইল শংসাপত্র নেওয়ার পরে সেখানে স্থাবর সম্পত্তি কিনতে পারবেন। এর ফলে কাশ্মীরে জমি, বাড়ির অধিকার ‘বহিরাগতদের’ হাতে চলে যাবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে কাশ্মীরিদের একাংশের মনে। গোয়েন্দাদের মতে, সেই আশঙ্কাই আরও উস্কে দিতে চাইছে জঙ্গিরা। তাতে নয়া কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে শিল্পোন্নয়ন নিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারের পরিকল্পনা বড় ধাক্কা খেতে পারে। আগামী সপ্তাহে কাশ্মীর সফরে যেতে পারেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার আগে এই ধরনের হামলা চালিয়ে জঙ্গিরা সরকারকে বার্তা দিতে চাইছে বলেই মত গোয়েন্দাদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy