তিস্তা নদী। —ফাইল চিত্র।
তিস্তার জল বন্টন সংক্রান্ত বিষয়ে ভারতের সংসদীয় কমিটির রিপোর্টে যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, তাতে আশার আলো দেখছে ঢাকা। বৃহস্পতিবার এমনটাই জানানো হল বাংলাদেশ সরকারের তরফে।
ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক কী ভাবে মজবুত করা যায়, তা নিয়ে সম্প্রতি সংসদে একটি রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে। যে সংসদীয় কমিটি এই রিপোর্ট পেশ করেছে, সেই কমিটিতে রয়েছেন— তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা পি চিদম্বরম এবং রাজ্যসভার সাংসদ বিজেপির স্বপন দাশগুপ্ত। কমিটির চেয়ারম্যান হলেন বিজেপির পিপি চৌধুরী। কমিটির প্রস্তাব, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতির জন্য দুই দেশেরই উচিত নিজেদের মধ্যে আলোচনায় বসা। তিস্তার জল নিয়ে চুক্তি তার মধ্যে অন্যতম। তার প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার ঢাকায় বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র সেহেলি সাবরিন বলেছেন, ‘‘কমিটির সুপারিশ অবশ্যই উত্সাহজনক এবং অর্থবহ। বিশেষ করে ভারতের সমস্ত রাজনৈতিক দলের সংসদ সদস্যরা এই কমিটিতে রয়েছেন। এ কারণেই এ ধরনের একটি সুপারিশ আমাদের মধ্যে আশা জাগিয়েছে।’’
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে একটি তিস্তা চুক্তির খসড়া তৈরি করে দুই দেশ, যেখানে শুখা মরসুমে ভারতের ৩৭.৫ শতাংশ এবং বাংলাদেশের ৪২.৫ শতাংশ জল পাওয়ার কথা হয়। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই চুক্তির বিরোধিতা করেন। যে-হেতু জল বিষয়টি ভারতের সংবিধান অনুযায়ী রাজ্যের অধিকারভুক্ত, তাই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর আপত্তি সত্ত্বেও এই চুক্তি সম্ভব নয়। ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নিজস্ব রিপোর্টে বলা হয় যে, দুই বাংলার তিস্তা পারের চাষিদের শুখা মরসুমে যে জলের প্রয়োজন, তার ১৬ ভাগের এক ভাগও তিস্তায় থাকে না। গত এক দশকে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। পাশাপাশি গোটা সিকিম জুড়ে অজস্র জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র নদীটিকে প্রায় খুন করার জোগাড় করেছে। অন্য দিকে, তিস্তার জন্মস্থানের কাছাকাছি থাকা অধিকাংশ হিমবাহ জলবায়ু পরিবর্তনের ধাক্কায় গলতে শুরু করেছে। ফলে নদীর শুরুতে জলের পরিমাণ কমছে। আশির দশকের গোড়া থেকেই তিস্তা ক্রমেই শীর্ণকায়া হচ্ছে, গজলডোবা ব্যারাজের ঠিক আগে তিস্তা-মহানন্দা লিঙ্ক ক্যানাল দিয়ে জল পাঠানো এই প্রবণতাকে বাড়িয়েছে মাত্র। শিলিগুড়ি-সহ উত্তরবঙ্গের এক বড় অংশের মানুষ নির্ভরশীল এই জলের উপর। এই তথ্যগুলির উপর দাঁড়িয়ে তিস্তা চুক্তির আলোচনা এগোনোর কথা থাকলেও তা গত এক দশক ধরে রাজনৈতিক ঘূর্ণাবর্তে আটকে আছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy