অন্য দিকে বিষয়টি নিয়ে সরকারের উপর চাপ তৈরি করতে দেখা গিয়েছে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসকে। রাহুল গান্ধী একটি ভিডিয়ো টুইট করেছেন। যেখানে এক ছাত্রী জানাচ্ছেন, ভারতীয় দূতাবাসের পক্ষ থেকে কোনও সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।
ইউক্রেনে আটকে বহু ভারতীয় পড়ুয়া। ছবি— রয়টার্স।
তালিবান আগানিস্তানের দখল নেওয়ার পরে ভারত সমস্ত কূটনীতি ছেড়ে অগ্রাধিকার দিয়েছিল সে দেশে বসবাসকারী নিজেদের নাগরিকদের ফেরানোর দিকে। রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করার পরেও একই ভাবে নয়াদিল্লি তৎপর, সে দেশের আনুমানিক ১৮ হাজার ভারতীয়কে নিরাপদে ফিরিয়ে আনার কাজে। ভারতের ‘মিশন ইউক্রেন’ এখন একমাত্র সেটাই। যুদ্ধ সংক্রান্ত কোনও কূটনৈতিক অবস্থান নেওয়া বা ভূকৌশলগত রাজনীতিতে পক্ষ নিতে এখনও দেখা যায়নি সাউথ ব্লককে।
আজ সন্ধ্যায় মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা সংক্রান্ত কমিটির বৈঠকে বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে অবহিত করেন প্রধানমন্ত্রীকে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনেরা। সূত্রের খবর, খুব শীঘ্রই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
আজ ইউক্রেনে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত পার্থ সৎপথী একটি ভিডিয়ো বার্তা টুইট করেন। সেখানে তিনি বলেন, “আজ আমরা ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে খবর পেলাম, রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করেছে। স্বাভাবিক ভাবেই উদ্বেগ এবং উত্তেজনা চর্তুদিকে। আকাশপথে উড়ান বন্ধ, রেল চলাচল করছে না, রাস্তাও আটকানো। এই পরিস্থিতিতে আমাদের দূতাবাস চব্বিশ ঘণ্টা এখানকার ভারতীয়দের নিরাপত্তার জন্য কাজ করে চলেছে।” ইউক্রেনে বসবাসকারী ভারতীয়দের জন্য তাঁর পরামর্শ, “যে যেখানে আছেন সেখানেই থাকুন। কোথায়ও যেতে গিয়ে আটকে পড়লে ফের নিজের আগের বাসস্থানে ফিরে যান। ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে সংযোগে থাকুন। সর্বোপরি অশান্ত হবেন না, এই সঙ্কটে মাথা ঠান্ডা রাখুন।”
এই বক্তব্যের সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই আজ ইউক্রেনে নিযুক্ত ভারতীয় দূতাবাস একের পর এক নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে। বলা হয়েছে, ‘কিছু কিছু জায়গায় আপনারা সাইরেনের আওয়াজ পাবেন, বোমা পড়ার সতর্কবার্তা পাবেন। এই ধরনের পরিস্থিতিতে পড়লে গুগল ম্যাপ দেখুন। নিকটবর্তী বম্ব শেল্টারে আশ্রয় নিন। ভূগর্ভস্থ মেট্রোয় এমন অনেক জায়গা রয়েছে।’ বিদেশ প্রতিমন্ত্রী ভি মুরলীধরন জানিয়েছেন, “আকাশ পথ বন্ধ করে দেওয়ায় আমরা ভারতীয়দের বিমানে ফেরানোর চেষ্টা বন্ধ করেছি। এখন বিকল্প পথের সন্ধান করা হচ্ছে।” ‘বিকল্প’ হিসাবে স্থলপথে উদ্ধার অভিযানেই এ বারে জোর দিচ্ছে দিল্লি। ইউক্রেনের সীমান্তবর্তী রাষ্ট্র হাঙ্গেরি, পোল্যান্ড, স্লোভাকিয়া এবং রোমানিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে বিদেশ মন্ত্রক। ভারতীয় দূতাবাসের চারটি প্রতিনিধি দল পৌঁছে গিয়েছে এই সব দেশের সঙ্গে ইউক্রেনের সীমান্তে। ভারতীয়দের স্থলপথে ইউক্রেন থেকে বার করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে এই সব দেশের সরকারের সহযোগিতায়। ইউক্রেনের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গেও এ বিষয়ে কথা বলেছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
আজ সকাল থেকেই বহু ভারতীয় ছাত্রছাত্রীকে সুটকেস হাতে কিভে ভারতীয় দূতাবাসের সামনে ভিড় করতে দেখা গিয়েছে। তাঁদের কিছু অংশকে দূতাবাসের ভিতরেই জায়গা দেওয়া হয়েছে। বাকিদের সংলগ্ন নিরাপদ এলাকায় পাঠানো হয়েছে বলে দূতাবাস সূত্রে জানানো হয়েছে।
অন্য দিকে বিষয়টি নিয়ে সরকারের উপর চাপ তৈরি করতে দেখা গিয়েছে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসকে। রাহুল গান্ধী একটি ভিডিয়ো টুইট করেছেন। যেখানে এক ছাত্রী জানাচ্ছেন, ভারতীয় দূতাবাসের পক্ষ থেকে কোনও সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। রাহুল লিখেছেন, ‘বিশ হাজার ভারতীয় ছাত্রছাত্রীদের সুরক্ষাই এখন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। সরকার সেটা নিশ্চিত করুক।’ কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেছেন, ‘করোনার সময় ওঁর ডাকে মানুষ হাজার হাজার কিলোমিটার পথ পায়ে হাঁটতে বাধ্য হয়েছিলেন। আজ তাঁর ইউক্রেন নিয়ে নীরবতা ২০ হাজার ছাত্রছাত্রীর জীবন বিপন্ন করেছে। সঙ্কটের সময় মানুষের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়াটাই কি মোদী মডেল?’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy