ছবি সংগৃহীত।
ইউক্রেন যুদ্ধের আগে থেকেই শনৈ শনৈ বাড়ছিল জ্বালানির দাম। যুদ্ধ বেধে যাওয়ার পরে সেই মূল্যবৃদ্ধির হার আরও গতি পেয়েছে। এই অবস্থায় ডিজ়েল খাতে খরচ কমাতে রেলপথের বিদ্যুদয়নের উপরে জোর দেওয়ার পরেও ওই খরচ আরও কমাতে আদাজল খেয়ে নেমে পড়েছে রেল। সেই জন্য এলএইচবি কোচের আলো, পাখা এবং বাতানুকূল যন্ত্র চালানোর জন্য জেনারেটর কারের ব্যবহার পুরো বন্ধ করতে চায় তারা।
পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব রেল ইতিমধ্যেই তাদের সব এলএইচবি রেকে ওভারহেড তার থেকে ইঞ্জিনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ টেনে নিয়ে কামরার আলো, পাখা এবং বাতানুকূল যন্ত্র চালানোর ব্যবস্থা করার কাজ সম্পূর্ণ করেছে। সারা দেশে ৯৯২টি রেক ব্যবহার করে চলা ১৫৮৬টি ট্রেনে ওই কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। রেল সূত্রের খবর, ডিজ়েল খাতে খরচ কমানো ছাড়াও বায়ুদূষণ কমাতে বছর চারেক আগে রেল ইঞ্জিনে বিশেষ ধরনের ট্রান্সফর্মার ব্যবহার করে কামরায় বিদ্যুতের জোগান দেওয়ার কাজ শুরু হয়। ওই ব্যবস্থার পোশাকি নাম ‘হেড অন জেনারেশন’ বা এইচওজি। মূলত ডব্লিউএপি-৭ সিরিজের ইঞ্জিনে বিশেষ ধরনের ট্রান্সফর্মার ব্যবহার করে দূরপাল্লার এক্সপ্রেস ট্রেন চালানো শুরু হয়। জেনারেটর কার ব্যবহারের তুলনায় এই ব্যবস্থার সুবিধা বেশি।
অতীতে এক্সপ্রেসের বাতানুকূল কামরা এবং অন্যত্র বিদ্যুতের জোগান দিতে অন্তত দু’টি করে জেনারেটর কার ব্যবহারের প্রয়োজন হত। একটি চললে বিশ্রাম পেত অন্যটি। কিন্তু সেই প্রক্রিয়ায় বিদ্যুতে ট্রেন চললেও জেনারেটরের ডিজ়েল জোগান দিতে বিপুল খরচের পাশাপাশি বায়ুদূষণ হত। ট্রেনের সামেন-পিছনে জেনারেটর কার ব্যবহার করে বিদ্যুতের জোগান দেওয়ার ওই ব্যবস্থাকে বলা হয় ‘এন্ড অন জেনারেশন’ বা ইওজি। জেনারেটর কার জুড়তে গিয়ে ট্রেনের বাড়তি কামরা বহনের ক্ষমতাও কমত।
রেল সূত্রের খবর, এখন সরাসরি ওভারহেড তার থেকে ইঞ্জিনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ মেলায় ডিজ়েল খাতে বছরে ৩৮৫৪ কোটি টাকা সাশ্রয় হচ্ছে। সাশ্রয়ের মাত্রা আগামী দিনে বাড়বে বলে আশাবাদী রেলকর্তারা। নতুন ব্যবস্থায় বছরে ৫.৮ লক্ষ মেট্রিক টন কার্বন নিঃসরণ কমেছে। রেল সূত্রের খবর, বিভিন্ন ইঞ্জিন বা লোকোমোটিভে থ্রি-ফেজ় এসি উৎপাদনের সুবিধা যোগ করতে মাত্র ৬০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এত দিন ডিজ়েলের অন্যতম প্রধান ক্রেতা ছিল রেল। যে-সব ক্ষেত্রে অতিমাত্রায় ডিজ়েলের প্রয়োজন হয়, সেখানে বিদ্যুৎ ব্যবহার করায় ডিজ়েল খাতে রেলের সাশ্রয় ক্রমেই বাড়ছে।
এক রেলকর্তা জানান, এখন রাজধানী, দুরন্ত এক্সপ্রেসের মতো হাতে গোনা কিছু ট্রেনে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে জেনারেটর কার রাখা হচ্ছে বা অল্প মাত্রায় তা ব্যবহার করা হচ্ছে। খুব তাড়াতাড়ি সেটাও বন্ধ হয়ে যাবে বলে রেলকর্তাদের দাবি। ডিজ়েলের খরচ ছাড়াও দূষণ কমানোর তাগিদে এখন ডিজ়েল ইঞ্জিনের ব্যবহার কমিয়ে আনা হচ্ছে। ভবিষ্যতে বন্যা বা যুদ্ধের মতো পরিস্থিতি ছাড়া ডিজ়েল ইঞ্জিন ব্যবহার করা হবে না বলেও জানিয়েছেন ওই রেলকর্তা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy