Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

জরিমানায় ভাঙচুরের ক্ষতি পূরণ করবে রেল

পশ্চিমবঙ্গেও রেলের সম্পত্তি ভাঙচুরে জড়িতদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণের টাকা আদায়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল মন্ত্রক।

বিক্ষোভকারীদের রোষে ট্রেন। ছবি: পিটিআই।

বিক্ষোভকারীদের রোষে ট্রেন। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:১৩
Share: Save:

যোগী-সরকারের মডেল এ বার পশ্চিমবঙ্গে প্রয়োগ করতে চলেছে রেল।

উত্তরপ্রদেশে নাগরিকত্ব (সংশোধিত) আইন (সিএএ)-বিরোধী বিক্ষোভে সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তি ভাঙচুরে জড়িতদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যোগী আদিত্যনাথের সরকার। সেই পথে হেঁটে এ বার পশ্চিমবঙ্গেও রেলের সম্পত্তি ভাঙচুরে জড়িতদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণের টাকা আদায়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল মন্ত্রক। রেল কর্তাদের দাবি, সিএএ-বিরোধী বিক্ষোভে পশ্চিমবঙ্গে রেলের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৭০ কোটি টাকা। ভাঙচুরকারীদের কাছ থেকে জরিমানা বাবদ সেই টাকা উদ্ধার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চাইছে রেল মন্ত্রক। চিহ্নিতকরণের পদ্ধতি গোপন রাখা হলেও, রেল সূত্রে খবর— স্থানীয় প্রশাসনের সাহায্য নিয়েই ভাঙচুরে জড়িতদের বিষয়ে খোঁজ-খবর নেওয়া শুরু হয়েছে।

রেল কর্তাদের একাংশের দাবি, শুরুতেই রাজ্যের পুলিশ প্রশাসন সক্রিয় হলে এ ভাবে ভাঙচুরের সাহস পেত না বিক্ষোভকারীরা। যে ভাবে চলন্ত ট্রেনে পাথর ছোড়া হয়েছে, তাতেও উদ্বিগ্ন কর্তারা। রেলের এক কর্তার কথায়, ‘‘কথায়-কথায় রেলের সম্পত্তি ভাঙচুর আটকাতেই হবে। রেল যে জাতীয় সম্পত্তি, তা বুঝতে হবে মানুষকে। এ বার কড়া পদক্ষেপ করার সময় এসেছে।’’ রেল সূত্রের খবর, ভাঙচুরের একাধিক ভিডিয়ো রেলের কাছে রয়েছে। সাহায্য নেওয়া হচ্ছে সিসিটিভি-র ফুটেজের। ভাঙচুর হওয়া স্টেশনগুলির কর্মীদের কাছ থেকেও তথ্য সংগ্রহ শুরু হয়েছে। এর পরে দুষ্কৃতীদের তালিকা বানাবে রেল। আইনি পথে আদায় করা হবে জরিমানা। প্রয়োজনে ভাঙচুরে দায়ীদের ছবিও স্টেশনে টাঙিয়ে দেওয়া হবে।

আরও পড়ুন: গুলিচালনায় অভিযুক্ত পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে এফআইআরে নারাজ যোগী

পশ্চিমবঙ্গে স্টেশন ভাঙচুর হয়েছে সাঁকরাইল, উলুবেড়িয়া এবং শিয়ালদহ-বজবজ শাখার আক্রায়। মালদহে ভালুকা রোড-হরিশচন্দ্রপুর লাইনে উপড়ে ফেলায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে উত্তরবঙ্গ। পূর্ব রেলের লালগোলা ও কৃষ্ণপুর স্টেশনে জ্বালানো হয় দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেন। বোর্ড চেয়ারম্যান বিনোদকুমার যাদবের কথায়, ‘‘অসম ও পশ্চিমবঙ্গ মিলিয়ে রেলের ক্ষতি হয় প্রায় ৮০ কোটি টাকা। যার মধ্যে পূর্ব রেলেই ৭০ কোটি টাকার সম্পত্তি ভাঙচুর হয়েছে। সেই টাকা জরিমানার মাধ্যমে তোলা হবে।’’

রেলের আইনে বলা রয়েছে, রেলের সম্পত্তি ভাঙচুরে দোষী সাব্যস্ত হলে সাত বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। কিন্তু সমস্যা হল, আইন-শৃঙ্খলা রাজ্যের বিষয়। এ ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গে কেন্দ্র-বিরোধী সরকার ক্ষমতায়। ফলে রাজ্য প্রশাসনের কতটা ‘আন্তরিক’ সাহায্য পাওয়া যাবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তবে যাদব বলেন, ‘‘সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আমরা আশাবাদী।’’ তিনি জানান, রাজ্য প্রশাসন সহযোগিতা না-করলে প্রয়োজনে আদালতের দ্বারস্থ হতে পারে রেল। ইতিমধ্যেই এ নিয়ে একটি মামলা হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। ৯ জানুয়ারি ওই মামলার পরবর্তী শুনানিতে হলফমানা জমা দিয়ে সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতির হিসেব দেবে রেল।

অন্য বিষয়গুলি:

Indian Railways CAA NRC Violence
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE