আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে আগামিকাল দেশ জুড়ে কর্মবিরতির ডাক দিল ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)। গোটা দেশে এর ফলে স্বাস্থ্য পরিষেবা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা করছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক।
বর্তমানে দেশের চিকিৎসকদের সবচেয়ে বড় সংস্থা হল আইএমএ। আজ সাংবাদিক সম্মেলনে আইএমএ-র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে এবং কর্মরত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীর নিরাপত্তার দাবিতে শনিবার সকাল ৬টা থেকে রবিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করা হবে। সংস্থা জানিয়েছে, ওই সময়ে কেবল জরুরি পরিষেবা বিভাগ চালু থাকবে। ওপিডি-সহ বন্ধ থাকবে বাকি সব কিছুই। যে ধরনের অস্ত্রোপচার পরে করলেও হবে, সেগুলি আগামিকাল না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ওই সংস্থা দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ছাড়াও প্রতিটি হাসপাতালের সুরক্ষা ব্যবস্থা বিমানবন্দরের মতো কড়া করার দাবি করেছে। প্রতিটি হাসপাতালকে সিসিটিভি দিয়ে মুড়ে দেওয়ার পাশাপাশি, নিরাপত্তরক্ষী বাড়ানো, চিকিৎসকদের বিশ্রামের জন্য সুরক্ষিত স্থান নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছে।
আগামিকাল কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে ফ্যাকাল্টি অ্যাসোসিয়েশন অব অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্স (এফএআইএমএস)। জরুরি পরিষেবা কেবল চালু রাখা হবে বলে জানিয়েছে ওই সংগঠন। দিল্লিতে নির্মাণ ভবনের সামনে (স্বাস্থ্য মন্ত্রক) বিক্ষোভ দেখান রেসিডেন্ট ডক্টর অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যেরা। বন্ধ হয়ে যায় যানচলাচল। গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র চিকিৎসকেরা বিক্ষোভ দেখান। প্রতীকী রক্তমাখা পোশাক পরে মিছিল করেন চণ্ডীগড়ের পিজিআইএমইআর-এর চিকিৎসকেরা। উধমপুরেও পথে নামেন সরকারি মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকেরা। দিল্লির বঙ্গ ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখায় কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন এনএসইউআই। আগামিকাল সেখানে বিক্ষোভ দেখাবে সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ ছাত্র সংগঠন এবিভিপি।
আরজি করের ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানোর প্রশ্নে সময় নষ্টের অভিযোগ উঠেছিল। সেই বিষয়টি মাথায় রেখে কর্মরত স্বাস্থ্যকর্মীর সঙ্গে হিংসার ঘটনা ঘটলে সেই প্রতিষ্ঠানের প্রধানকে ঘটনা ঘটার ছ’ঘণ্টার মধ্যে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অধীনস্থ ডিরেক্টর জেনারেল অব হেল্থ সার্ভিস (ডিজিএইচএস)।
আজ মধ্যপ্রদেশ হাই কোর্ট চিকিৎসকদের কর্মবিরতি নিয়ে অবস্থান জানাতে নোটিস দিয়েছে রাজ্য সরকারকে। নোটিস দেওয়া হয়েছে ভোপালের গান্ধী মেডিক্যাল কলেজের ডিন, জুনিয়র ডক্টর্স অ্যাসোিসয়েশন এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্যদেরও। এই কর্মবিরতির বিরোধিতা করে পিটিশন জমা দিয়েছিলেন এক ব্যক্তি।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)