আধুনিক হচ্ছে ভারতীয় পাসপোর্ট। নতুন রূপে কাগজের বদলে তথ্য জমা হবে একটি মাইক্রোচিপে। পাসপোর্ট বইয়ের ভিতরেই থাকবে চিপ। তাতে ব্যবহারকারীর সফর সংক্রান্ত তথ্যের পাশাপাশি নথিভুক্ত থাকবে গুরুত্বপূর্ণ বায়োমেট্রিক্স তথ্যও। কেন্দ্র আশা করছে, নতুন পরিষেবা পাসপোর্ট জালিয়াতির মতো ঘটনায় রাশ টানতে সাহায্য করবে।
নতুন পাসপোর্ট পরিষেবার নাম দেওয়া হয়েছে ই-পাসপোর্ট। বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, খুব শীঘ্রই দেশের নাগরিকরা এই ই-পাসপোর্ট পরিষেবা পাবেন। এমনকি ই-পাসপোর্টকে নতুন প্রজন্মের পাসপোর্ট বলেও অভিহিত করেছেন বিদেশ মন্ত্রকের পাসপোর্ট এবং ভিসা বিভাগের সচিব সঞ্জয় ভট্টাচার্য। গত বুধবারই তিনি এ ব্যাপারে একটি টুইট করেন। তাতে তিনি লেখেন, ‘ভারত শীঘ্রই তার নাগরিকদের জন্য নয়া প্রজন্মের ই-পাসপোর্ট পরিষেবা আনতে চলেছে।’ ওই টুইটেই ই-পাসপোর্টের বৈশিষ্ট্যও সংক্ষেপে জানিয়েছিলেন সঞ্জয়। সেগুলি কী কী?
ই-পাসপোর্ট কী?
ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট বা বায়োমেট্রিক পাসপোর্ট। যা আন্তর্জাতিক অসামরিক বিমান সংস্থা বা আইসিএও-র পাসপোর্ট সংক্রান্ত নতুন নিয়ম এবং আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে তৈরি হবে।
তবে ই-পাসপোর্ট সাধারণ ভারতীয় নাগরিকদের কাছে নতুন হলেও ভারতে নতুন নয়। পরীক্ষামূলক ভাবে এই ই-পাসপোর্টের ব্যবহার ২০১৭ সাল থেকে শুরু করেছে ভারত। দেশের সরকারি দফতরের কর্মী বা মন্ত্রকের কর্মী মিলিয়ে ২০ হাজার ই-পাসপোর্ট ইতিমধ্যেই দেওয়া হয়েছে বিদেশ মন্ত্রকের তরফে।
কেন ই-পাসপোর্ট?
ই-পাসপোর্টে পাসপোর্ট বইয়ের ভিতরে দ্বিতীয় পাতায় থাকবে একটি মাইক্রোচিপ। যার ভিতরে ব্যবহারকারীর বায়োমেট্রিক্স তথ্যের পাশাপাশি থাকবে ডিজিটাল সিকিওরিটি ফিচার। এর সাহায্যে প্রতিটি দেশকে আলাদা করে চিনতে পারবে এই চিপ। ব্যবহারকারী কোন দেশে যাচ্ছেন তার তথ্যও সহজে নথিভুক্ত করতে পারবে।
বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, এই ধরনের পাসপোর্ট জাল করা শক্ত। ফলে এতে নিরাপত্তা বাড়বে। কমবে প্রতারণার সম্ভাবনা। এ ছাড়া গোটা প্রক্রিয়াটিই বৈদ্যুতিন হওয়ায় দ্রুত এবং সহজ হবে অভিবাসনের কাজও। এ ছাড়া ই-পাসপোর্ট থাকলে বিভিন্ন দেশে ভারতীয়রা ভিসা ছাড়াই যেতে পারবেন বলেও আশা করছে কেন্দ্র।
উল্লেখ্য, এই মুহূর্তে গোটা বিশ্বে পাসপোর্ট দেওয়ার সংখ্যায় চিনের পরেই রয়েছে ভারত। শুধু ২০১৯ সালে ১ কোটি ২৮ লক্ষ পাসপোর্ট দিয়েছে ভারত সরকার। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ভারতীয়দের বিদেশে থেকে কাজ করার প্রবণতাও। ই-পাসপোর্ট গোটা প্রক্রিয়াকে সহজ করবে বলে আশা বিশেষজ্ঞদের।
India
— Sanjay Bhattacharyya (@SecySanjay) January 5, 2022to soon introduce next-gen #ePassport for citizens
- secure #biometric data
- smooth passage through #immigration posts globally
- @icao compliant
- produced at India Security Press, Nashik
- #eGovernance @passportsevamea @MEAIndia #AzadiKaAmritMahotsav pic.twitter.com/tmMjhvvb9W
কী ভাবে পাবেন ই-পাসপোর্ট?
পাসপোর্টের জন্য আবেদন করার পুরনো প্রক্রিয়াই চালু থাকবে এ ক্ষেত্রে। তবে বিদেশ মন্ত্রক ঠিক কবে এই পাসপোর্ট পরিষেবা দেশের সাধারণ নাগরিকদের জন্য চালু করতে চলেছে তা এখনও স্পষ্ট নয়।
সরকারি পাসপোর্ট পরিষেবা ডিজিটাল তথ্যের আওতায় আনার প্রক্রিয়ারই প্রথম পদক্ষেপ ই-পাসপোর্ট। আপাতত দেশে পাসপোর্ট পরিষেবা দেওয়ার ৫১৭টি কেন্দ্র রয়েছে। যার মধ্যে ছ’টি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, ৯৩টি পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্র এবং ৪২৪টি পোস্ট অফিস পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্র রয়েছে।
এ ছাড়া কেন্দ্র জানিয়েছে, ই-পাসপোর্টের ব্যাপারে টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিস (টিসিএস)-এর সাহায্য নেওয়া হবে। এর আগে ২০০৮ সালে সরকারি পাসপোর্ট সেবা প্রকল্প তৈরি করেছিল টিসিএস খুব শীঘ্রই ই-পাসপোর্টের জন্য নতুন পরিষেবা তৈরি করবে তারা।
কোথায় তৈরি হবে ই-পাসপোর্ট?
ই-পাসপোর্টে থাকা মাইক্রোচিপের নিরাপত্তা নিয়ে সব রকম সতর্কতা বজায় রাখছে কেন্দ্র। তাই আইসিএও- নির্ধারিত নিয়ম অনুদিত মাইক্রোচিপ তৈরি করা হবে নাসিকের সরকারি ছাপাখানা ইন্ডিয়ান সিকিওরিটি প্রেসে।