লোকসভা নির্বাচনের আগে শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেটে মধ্যবিত্ত সমাজের মন জয়ের চেষ্টা করল মোদী সরকার। প্রতীকী ছবি।
দেশের মধ্যবিত্ত শ্রেণির বরাবরের অভিযোগ, নরেন্দ্র মোদী জমানায় তারা উপেক্ষিত। ফলে ক্রমশ ধস নামছিল বিজেপির মধ্যবিত্ত ভোটব্যাঙ্কে। অবশেষে লোকসভা নির্বাচনের আগে শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেটে সেই মধ্যবিত্ত সমাজের মন জয়ের চেষ্টা করল মোদী সরকার। আয়করে ছাড়ের পাশাপাশি, মধ্যবিত্তদের সঞ্চয় বাড়ানোর একাধিক পথ আজ বাজেটে খুলে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। পদ্ম শিবিরের আশা, আগামী লোকসভা ভোটে এ বার মধ্যবিত্ত শ্রেণির আশীর্বাদ পাবে তারা। আর বিরোধীরা বলছেন, দিশাহীন ভোটমুখী বাজেট, নেই কর্মসংস্থানের দিশাও।
বাজেট বক্তৃতায় নির্মলা দাবি করেছেন, কঠিন সময়ে দাঁড়িয়েও ভারতীয় অর্থনীতি ঠিক পথে এগোচ্ছে। বলেন, তাঁর এ বারের বাজেট দেশের সব প্রান্তের সব মানুষের কথা ভেবেই তৈরি। বিশেষ করে যুব সমাজ, মহিলা, কৃষক, ওবিসি, তফসিলি জাতি ও জনজাতি সমাজ। আয়কর ছাড় ঘোষণা করে শাসক শিবির বুঝিয়েছে, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী থেকে মধ্যবিত্ত— সকল শ্রেণির সমর্থন নিশ্চিত করতে তৎপর তারা।
বিজেপির এক নেতার ব্যাখ্যা, ‘‘এই বাজেটে যেমন এক দিকে আয়কর দাতাদের পাশে পাওয়ার চেষ্টা, তেমনই গরিবদের জন্য কেন্দ্রীয় প্রকল্পে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে।’’ প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, আরও কুড়ি কোটি মানুষের বাড়িতে পানীয় জল পৌঁছনো, জনজাতি উন্নয়ন যোজনায় বরাদ্দ যেমন বৃদ্ধি হয়েছে, তেমনই মধ্যবিত্তদের জন্য রয়েছে কর ছাড়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পরে বাজেটের জন্য নির্মলাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘‘এই বাজেট অমৃতকালের প্রথম বাজেট। যা বিকশিত ভারতের স্বপ্নপূরণের বীজ বপন করল।’’ বাজেটে কমানো হয়েছে কৃত্রিম ভাবে তৈরির হিরের কাঁচামালের শুল্ক। মনে করা হচ্ছে, এই শুল্ক হ্রাস বিপুল ভাবে জয়ের জন্য গুজরাতের মানুষকে উপহার।
বাজারে পণ্যের চাহিদা বাড়াতে মধ্যবিত্তদের হাতে বাড়তি টাকা যাতে থাকে সেই লক্ষ্যে আয়করে ছাড়ের পথে হেঁটেছেন নির্মলা। এ ছাড়া মহিলা ও প্রবীণ নাগরিকদের জন্য ব্যাঙ্ক ও ডাকঘরে সঞ্চয়ের উপরেও বেশ কিছু ছাড়ের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘এ বাজেট বলে দিচ্ছে এ দেশের মধ্যবিত্ত সমাজকেও পাশে পেতে তৎপর হয়েছে দল।’’ দলের পক্ষ থেকে তাই আগামী দু’সপ্তাহ ধরে দেশ জুড়ে ওই বাজেটের ইতিবাচক দিকগুলি তুলে ধরে জেলা স্তরে প্রচারে নামতে বলা হয়েছে সমস্ত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, বিজেপিশাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, বিজেপির রাজ্য সভাপতিদের। রাজ্যসভায় তৃণমূলের সচেতক সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর নামে যোজনা হবেই বা কেন! এগুলি সবই তো মানুষের টাকায় প্রকল্প।’’ বিজেপির পাল্টা, এগুলি সবই প্রধানমন্ত্রীর নামে হয়েছে, ব্যক্তির নামে নয়।
সরকারের ওই বাজটের অভিমুখ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। তিনি বলেন, ‘‘বাজেটের গোড়াতেই দলিত, জনজাতি কিংবা ওবিসিদের কথা বলেও, চলতি অর্থবর্ষে (২০২২-২৩) ওই শ্রেণির মানুষদের উন্নয়নের খাতে বরাদ্দের তুলনায় কম অর্থ খরচ হয়েছে। কম খরচ হয়েছে সংখ্যালঘু উন্নয়নেও।’’ সমাজবাদী পার্টির সাংসদ ডিম্পল যাদবের বক্তব্য, ‘‘বাজেটে ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য, কর্মসংস্থানের বিষয়ে কিছুই বলা হয়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy