প্রতীকী ছবি।
পাক জঙ্গিদের অনুপ্রবেশ এ বছর অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা গিয়েছে। গত বছর ঢুকেছিল ১৩০ জন। চলতি বছরে সংখ্যাটা এখনও পর্যন্ত ৩০। তবে পাকিস্তান চেষ্টা থামায়নি। বদলায়নি তাদের লক্ষ্যও। নিয়ন্ত্রণরেখার ও-পারে লঞ্চ প্যাডে এখনও ২৫০-৩০০ জঙ্গি ওত পেতে রয়েছে ভারতে ঢুকে পড়ার অপেক্ষায়। তাদের অনুপ্রবেশের পথ করে দিতে পাক বাহিনী মাঝেমাঝেই সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করছে। বিনা প্ররোচনায় তারা নিয়ন্ত্রণরেখা ও সীমান্তের ও-পার থেকে গোলাগুলি চালাচ্ছে। সঙ্গে চলছে অস্ত্র পাচারের চেষ্টাও। সেনার ১৫ নম্বর কোরের জিওসি লেফটেন্যান্ট জেনারেল বি এস রাজু শনিবার এ কথা জানিয়েছেন।
পাক বাহিনী গত কাল রাত দেড়টা থেকে পুঞ্চ জেলার মাকোটে সেক্টরে ও পৌনে বারোটা থেকে কাঠুয়া জেলার হীরানগর সেক্টরে অসামরিক এলাকা লক্ষ্য করে গোলাগুলি ছুড়েছে। জবাব দিয়েছে ভারতও। এতে এলাকার মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। পুঞ্চের কসবা সেক্টরে পাক গোলায় জখম হয়েছেন হামিদা বিবি নামে বছর চল্লিশের এক মহিলা। সেনাবাহিনীর সূত্রে শনিবার জানানো হয়েছে, উত্তর কাশ্মীরে কুপওয়ারা জেলার কেরেন সেক্টরে সেনা জওয়ানরা দেখেন, দু’তিন জন লোক দড়ি বেঁধে একটি টিউব কিষেনগঙ্গা নদী দিয়ে ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। দ্রুত টিউবটি তুলে আনেন জওয়ানরা। দেখেন, ভিতরে ৪টি একে-৪৭ রাইফেল, ৮টি ম্যাগাজ়িন ও দু’টি থলিতে ২৪০টি গুলি।
আরও পড়ুন: তাড়াহুড়ো নয় কোভ্যাক্সিনে
জিওসি রাজুর কথায়, “পাক জঙ্গিরা লাগাতার অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালালেও তা আমরা ভেস্তে দিচ্ছি। নিয়ন্ত্রণরেখায় পরিস্থিতি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। এতে কাশ্মীর উপত্যকার পরিস্থিতিরও উন্নতি ঘটবে বলে আমরা আশা করছি। তবে উত্তর কাশ্মীরের চেয়ে দক্ষিণ কাশ্মীরের সমস্যা কিছুটা বেশি। সেখানে জঙ্গি দলে যুবকদের নাম লেখানোর বিষয়টি সমস্যা বাড়াচ্ছে।”
আরও পড়ুন: রামদাস একাই শরিক মন্ত্রী, বাকি বিজেপির!
এক সেনাকর্তার কথায়, “পাকিস্তান যে তাদের উদ্দেশ্য বদলায়নি, এটাই তার প্রমাণ। তবে ভবিষ্যতেও এই ধরনের চেষ্টা আমরা ব্যর্থ করে দেব।” তিনি জানান, দুর্গম প্রত্যন্ত এলাকাতেও অভিযান চালাচ্ছে সেনা। মারা পড়ছে বিদেশি জঙ্গিরা। দক্ষিণ কাশ্মীরে কুলগাম জেলার চিংগাম এলাকায় শুক্রবার রাতেও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে দুই জইশ জঙ্গি নিহত হয়েছে। তাদের এক জন পাক পঞ্জাবের বাসিন্দা। তার নাম সামির ভাই ওরফে উসমান। তারিক আহমেদ মির নামে অন্য জঙ্গি স্থানীয় জঙ্গলপোরার বাসিন্দা। এ ছাড়া আরও দু’জন জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে পুলওয়ামার দাদুরায়। তাদের দেহ শনাক্ত হয়নি।
ওই সেনাকর্তার কথায়, “আমরা দেখেছি যেখানেই কোনও বিদেশি জঙ্গির মৃত্যু হয়, এলাকাটিতে শান্তি ফিরে আসে। গত দু’-তিন মাসের লাগাতার অভিযানে পুলোয়ামা ও শোপিয়ানে শান্তি ফিরেছে অনেকটাই।” সেনা সূত্রের দাবি, গত ছ’মাসে স্থানীয় যুবকদের জঙ্গি দলে ভেড়ানোর ঘটনা কিছুটা কমে আসছিল। কিন্তু মাস খানেক বা তার কিছু আগে থেকে এটা ফের বাড়তে শুরু করে। তবে রাজু বলেন, “আশার আলোও দেখা যাচ্ছে। হিংসার পথে নাম লেখানো অনেক যুবকই আত্মসমর্পণ করছে। এর বিস্তারিত তথ্য আমরা দেব না। তবে বলা যেতে পারে এটা একটা ভাল ইঙ্গিত।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy