মোহিনীমোহন গগৈ, অলকেশ শইকিয়া
মায়ানমার পাড়ি দেওয়ার আগেই নাগাল্যান্ডের মন জেলায় নাগা জঙ্গিদের গোপন ডেরায় হানা দিয়ে ওএনজিসির অপহৃত দুই কর্মী মোহিনীমোহন গগৈ ও অলকেশ শইকিয়াকে উদ্ধার করল সেনাবাহিনী ও আসাম রাইফেলস। কিন্তু তৃতীয় অপহৃত রিতুল শইকিয়ার কোনও সন্ধান মেলেনি এখনও। আলফা স্বাধীনের তরফে জানানো হয়েছে, যৌথ বাহিনীর সঙ্গে তাদের দফায় দফায় সংঘর্ষের ফলে তিন অপহৃতের প্রাণসংশয় হতে পারত। তাই তিন জনকেই তারা মুক্তি দিয়েছে। কিন্তু তার পরেও সেনা এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে থাকে। সম্ভবত গুলিতে রিতুল শইকিয়ার মৃত্যু হয়েছে!
মাত্র ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দুই অপহৃতকে উদ্ধার করার সাফল্যের মধ্যেও তাই থেকে গেল দুশ্চিন্তা! উদ্ধার হওয়া দু’জনের বাড়িতে আনন্দের ঢেউ। নিখোঁজ রিতুলবাবুর বাড়িতে কান্নার রোল।
মঙ্গলবার গভীর রাতে লাকুয়ার তৈলক্ষেত্রে হানা দিয়ে ৫ সশস্ত্র আলফা জঙ্গি ওএনজিসির তিন কর্মীকে অপহরণ করেছিল। সেনা সূত্রে জানানো হয়, মন জেলা হয়ে মায়ামারে ঢুকবে বলে তৈরি ছিল আলফা স্বাধীন জঙ্গিরা। তাদের সাহায্য করছিল এনএসসিএন খাপলাং সংগঠনের ইয়ুং অং শাখার জঙ্গিরা। টকোক চিংন্যু গ্রামে জঙ্গিরা অপহৃতদের রেখেছে বলে খবর পেয়ে রাতেই এলাকা ঘিরে ফেলা হয়। মনের জেলাশাসক থাভাসিলান কে বলেন, “দু’তরফে দফায় দফায় গুলির লড়াই চলেছে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি একে-৪৭ রাইফেল। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে রিতুলবাবুকে এখনও আমরা উদ্ধার করতে পারিনি। তল্লাশি অভিযান চলছে।”
অলকেশ শইকিয়ার মা বলেন, “নাগাড়ে ভগবানকে ডাকছিলাম। সেনা ও প্রশাসনকে অনেক ধন্যবাদ। কিন্তু রিতুল না-ফেরা পর্যন্ত মনে আনন্দ নেই।”
মোহিনীমোহনের স্ত্রী শাশ্বতী শইকিয়া গগৈ বলেন, “এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না যে স্বামীকে উদ্ধার করা গিয়েছে। দ্রুত তাঁকে দেখতে চাই। রিতুলবাবুও আশা করি ফিরে আসবেন।”
যোরহাটে বরহোলা গ্রামের বাসিন্দা ৩৩ বছরের রিতুলবাবুর মা শয্যাশায়ী। পরিবারের বক্তব্য, আলফা বা সেনা প্রকৃত সত্য প্রকাশ করুক। রিতুলের যেন কোনও ক্ষতি না হয়।
আলফা স্বাধীনের তরফে রুমেল অসম জানিয়েছে, সেনার ৭৩ নম্বর ব্রিগেড, ৩৫ নম্বর আসাম রাইফেলস ও নাগাল্যান্ড পুলিশ মিলিয়ে প্রায় ৫০০ জওয়ান গত কাল রাত ১০টা নাগাদ আলফার ঘাঁটি ঘিরে ফেলে। রাত আড়াইটে পর্যন্ত চলেছে সংঘর্ষ। অপহৃতেরা সঙ্গে থাকায় সেনার গুলিতে তাঁদের প্রাণহানির আশঙ্কা ছিল। তাই শেষ পর্যন্ত সিংখু গ্রামের মানুষের তত্ত্বাবধানে তিন জনকেই রেখে দিয়ে আলফা সদস্যরা চলে যায়। কিন্তু তার পরেও সেনা গ্রামে ঢুকে এলোপাথাড় গুলি চালিয়েছে। দুই অপহৃতকে উদ্ধার করার কথা বললেও তারা রিতুলের ব্যাপারে কিছু বলছে না। রুমেল বলে, “আমাদের আশঙ্কা, সেনার গুলিতে রিতুল মারা গিয়েছেন বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে তাঁকে লুকিয়ে রাখা হয়েছে।
রিতুলের কিছু হলে তার দায় কোনও ভাবেই আলফার নয়। গোটা ঘটনার জন্য দায়ী ওএনজিসি। তারা যা করল ভবিষ্যতে তার ভয়াবহ ফল ভুগতে প্রস্তুত থাকুক।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy