প্রতীকী ছবি।
পরপর দু’দিন ড্রোন-আতঙ্ক দেখা দিল জম্মু-কাশ্মীরে। আগামিকাল যদি ফের শত্রু ড্রোন হামলা করতে আসে তাহলে তাদের গোড়াতেই কী ভাবে রুখে দেওয়া যাবে সেই প্রশ্নে কার্যত দিশাহীন নিরাপত্তাবাহিনী। সূত্রের মতে, খুব দ্রুত ওই সমস্যা সমাধান হওয়ার নয়। শত্রু ড্রোনকে সীমান্তে চিহ্নিত করে সেখানেই সেটিকে নিষ্ক্রিয় বা গুলি করে নামিয়ে আনার মতো প্রযুক্তি কার্যকর করতে এখনও বেশ সময় লাগবে ভারতের। তবে ড্রোনের মাধ্যমেই ড্রোনের মোকাবিলা করার পথে হাঁটছে দিল্লি।
এত দিন ড্রোনের মাধ্যমে পাঠানো হচ্ছিল অস্ত্রশস্ত্র, মাদক, জাল টাকা। এ বার ড্রোনের মাধ্যমে জঙ্গিরা সরাসরি হামলা শুরু করায় রীতিমতো দুশ্চিন্তায় কেন্দ্র। কারণ, বর্তমানে ভারতের হাতে ড্রোন মোকাবিলায় সেই অর্থে কোনও তৈরি প্রযুক্তি নেই। নেই অনেক দেশের মতো ‘কিলার ড্রোন’ও। হামলাকারী ড্রোনগুলিকে রেডারে চিহ্নিত করা কঠিন। এই পরিস্থিতিতে ভরসা হলেন একমাত্র স্নাইপাররা। বর্তমানে পঞ্জাব ও জম্মু সীমান্তে দিনের বেলা অনুপ্রবেশ করা ড্রোনগুলিকে মূলত গুলি করেই মাটিতে নামানো হয়ে থাকে। কিন্ত তারও সীমাবদ্ধতা রয়েছে। কারণ ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে থাকা তিন হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত বরাবর স্নাইপারদের মোতায়েন করা কার্যত অসম্ভব ব্যাপার। তাই শত্রু ড্রোনগুলিকে চিহ্নিত করে তাদের ধ্বংস করতে সীমান্ত বরাবর জ্যামার বসানোর সিদ্ধান্ত অনেক আগেই নিয়েছে ভারত। প্রায় বছর দুয়েক আগে এ বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হলেও বিদেশি ওই প্রযুক্তি খরচসাপেক্ষ হওয়ায় আপাতত থমকে গিয়েছে সেই কাজ।
সূত্রের মতে, খরচ কমাতে পরিবর্তে দেশীয় জ্যামিং প্রযুক্তি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই প্রযুক্তি হাতে আসার বিষয়টি বেশ সময়সাপেক্ষ। আমেরিকা বা চিনের মতো দেশগুলি ড্রোন রুখতে ইতিমধ্যেই ‘লেজ়ার গানে’র ব্যবহার শুরু করে সাফল্য পেয়েছে। পরিবর্তে ভারতীয় সেনা সে পথে না হেঁটে অনুপ্রবেশকারী ড্রোনগুলিকে ড্রোনের মাধ্যমে তাড়া করে সেগুলিকে ধ্বংস করার নীতি নিয়েছে।
সরকারের পক্ষ থেকে আপাতত দু’ধরনের ড্রোন ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একটি হল দুটি ডানা রয়েছে এমন ড্রোন। যা কাশ্মীরের মতো উঁচু পাহাড়ি এলাকায় উড়তে সক্ষম। ওই ড্রোনগুলি আকারে বেশ বড় হওয়ায় সেগুলি বিস্ফোরক বহন এবং অনেক উঁচু থেকে সেই বিস্ফোরকের মাধ্যমে নিশানায় নিখুঁত হামলা চালাতেও সক্ষম। দ্বিতীয়ত শত্রু ড্রোনের হামলা রুখতে ‘সোয়ার্ম ড্রোনে’র ব্যবহার করার কথা ভেবেছে কেন্দ্র। মূলত ঝাঁকে ওড়া ওই ড্রোনগুলি যেমন শত্রু ড্রোনকে চিহ্নিত করে তাদের সিগন্যাল জ্যাম করে দিয়ে নিচে নামিয়ে আনতে বা নিষ্ক্রিয় করে দিতে সক্ষম তেমনই ড্রোনের ওই ঝাঁক শত্রু দেশে বড় এলাকাতেও হামলা চালানোর উদ্দেশ্যেও ব্যবহার করা যেতে পারে। ওই ড্রোনগুলির পরীক্ষামূলক ব্যবহার শুরু হলেও এখনও তা সম্পূর্ণ ভাবে নিরাপত্তাবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়নি।
গত কাল জম্মুর হানা প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় সূত্রে বলা হয়েছে, সম্ভবত ওই বিমানবন্দরে থাকা সেনার এম-১৭ হেলিকপ্টারকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্য ছিল জঙ্গিদের। সেই উদ্দেশ্যেই ওই ড্রোনগুলি পাঠানো হয়েছিল। বিমানবন্দরে হওয়া বিস্ফোরকে আরডিএক্স ছিল কি না তা অবশ্য এখনও জানা যায়নি। স্বরাষ্ট্র সূত্র জানিয়েছে, ফরেন্সিক রিপোর্ট হাতে পেলে সে বিষয়ে নিশ্চিত ভাবে বলা সম্ভব হবে।
কাশ্মীরে স্থিতাবস্থা নষ্ট করার পাশাপাশি এ দিন হামলা ও হামলার চেষ্টার নয়া ব্যাখ্যাও দিয়েছে কেন্দ্রের একটি সূত্র। ওই সূত্রের মতে, গত সপ্তাহে পাকিস্তানের মদতে পুষ্ট জঙ্গি সংগঠন লস্কর ই তইবা প্রধান হাফিজ় সইদের লাহৌরের বাড়ির সামনে একটি গাড়ি বোমা বিস্ফোরণ ঘটেছিল। সেই কাজের পিছনে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা র-এর হাত রয়েছে ধরে নিয়ে তার প্রতিশোধ হিসেবে জম্মু বিমানবন্দর-সহ একাধিক হামলার পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy