এমএইচ-৬০ রোমিয়ো সি-হক মাল্টি-রোল কপ্টার
দুর্গাপুজোর ঠিক পরেই সাউথ ব্লকে বিপদঘণ্টি বাজতে শুরু করেছিল— ভারত মহাসাগরে যে কারও সঙ্গে টক্কর দিতে চিন ‘মাল্টি-রোল’ জ়েড-২০ হেলিকপ্টার তৈরি করে ফেলেছে। জাহাজ তো নস্যি, এই হেলিকপ্টার থেকে টর্পেডো দেগে সমুদ্রের নীচে গা-ঢাকা দিয়ে থাকা ডুবোজাহাজও গুঁড়িয়ে দেওয়া যায়। ডুবোজাহাজ যতই গভীরে থাক, ‘মাল্টি-রোল’ হেলিকপ্টার তার গন্ধ পাবেই। এ দিকে ভারতীয় নৌসেনার ঘরে সেই ৪০ বছরের পুরনো বুড়ো ঘোড়া ব্রিটিশ ‘সি-কিং চপার’ ছাড়া আর কিছু নেই।
তখনই টনক নড়েছিল। দেরি না করে এ বার আমেরিকার কাছ থেকে ২৪টি এমএইচ-৬০ রোমিও সি-হক মাল্টি-রোল হেলিকপ্টার কিনছে ভারত। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সফরে যে-সব চুক্তি সই হতে চলেছে, তার মধ্যে এটিই এখনও পর্যন্ত সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। এ দেশের নৌসেনার জন্য মার্কিন সংস্থা লকহিড মার্টিনের তৈরি এই ২৪টি কপ্টারের জন্য ভারতকে ২৬০ কোটি ডলার গুনতে হবে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটি বুধবার এই সিদ্ধান্তে সিলমোহর দিয়েছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কর্তাদের বক্তব্য, মাল্টি-রোল হেলিকপ্টারের অর্থই হল যে, একই সঙ্গে সমুদ্রে নজরদারি এবং হামলা চালাবে তারা। কিন্তু তার আসল কার্যকারিতা হল, সে ডুবোজাহাজ-শিকারি। এর সেন্সরে জলের নীচে ঘাপটি মেরে থাকা ডুবোজাহাজও ধরা পড়ে যায়। নিজের বাহিনীর জাহাজকে বাঁচাতে রোমিয়ো সি-হক সেই ডুবোজাহাজকে নিশানা করে টর্পেডো ছুড়তে পারে। জলের উপরে শত্রুপক্ষের জাহাজ বা বোটকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়তে পারে। অন্য কপ্টারের মোকাবিলায় মেশিনগানও থাকে।
আরও পড়ুন: শাহিন বাগ নিয়ে কথা রাখেননি অমিত শাহ
এমএইচ-৬০ রোমিয়ো সি-হক মাল্টি-রোল কপ্টার
বিশেষত্ব
• জলের তলার ডুবোজাহাজের গন্ধ পেতে রেডার ও সেন্সর
• ডুবোজাহাজকে নিশানা করার জন্য এমকে ৫৪ টর্পোডো
• জলের উপরে জাহাজ নিশানা করতে হেলফায়ার ক্ষেপণাস্ত্র
• শক্তিশালী ৭.৬২ এমএম মেশিনগান
• সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২৬৭ কিলোমিটার
• আকাশে ওঠার গতি সেকেন্ডে ৮.৩৮ মিটার
নির্মাতা
• আমেরিকার লকহিড মার্টিন কেন দরকার?
• ভারত মহাসাগরে চিনের মোকাবিলায়
• শত্রুপক্ষের জাহাজ, বিশেষ করে ডুবোজাহাজ শিকারের জন্য
ভারতের কাছে এ-রকম কপ্টার বলতে এখন ব্রিটেনের তৈরি মাত্র এক স্কোয়াড্রন সি-কিং চপার। কিন্তু তা কেনা হয়েছিল প্রায় ৪০ বছর আগে। তার পরে তার আর আধুনিকীকরণ হয়নি। নজরদারি ও যুদ্ধ করার জন্য সি-হ্যারিয়ার বিমান আগেই অবসর নিয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে শুধু পিএইট-আই বিমান। কিন্তু তার কাজ মূলত নজরদারি করা। নৌসেনার এক কর্তা বলেন, ‘‘মাল্টি-রোল কপ্টার ছাড়া গতি নেই। কারণ শত্রুপক্ষের ডুবোজাহাজ কখন চুপিসারে ছোবল মেরে যাবে, তা জানাই যাবে না। সি-হক হেলিকপ্টার তাই জাহাজের আগে এসকর্টের মতো যাবতীয় বিপদ থেকে রাস্তা সাফ করতে করতে যাবে। চিন সে জন্যেই জ়েড-২০ কপ্টার তৈরি করে ফেলেছে।’’ চিনের মোকাবিলায় তাড়াহুড়ো করে ট্রাম্পের দেশ থেকে কপ্টার কেনা হল। তা হলে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ নীতির কী হবে? প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের যুক্তি, এই ২৪টিতেই নৌসেনার প্রয়োজন মিটবে না। তাই বাকিগুলি ভবিষ্যতে এ দেশেই যৌথ উদ্যোগে তৈরি হতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy