বিজেপি সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামী।—ফাইল চিত্র।
সংসদ চত্বরের ভিতরে এসে গাড়িটি থেমে আছে মিনিট দশেকের বেশি। গাড়ির ভিতর থেকে চালক, নিরাপত্তাকর্মীরা বাইরে নেমে এসেছেন। কাচ তোলা গাড়ির ভিতরে একা একা বসে দীর্ঘক্ষণ ধরে মোবাইলে কথা বলেই চলেছেন অমিত শাহ।
গাড়ির চার দিকে ততক্ষণে জমতে শুরু করেছে সাংবাদিকদের ভিড়। গুঞ্জন, কী নিয়ে এতক্ষণ ধরে ফোনে কথা বলছেন বিজেপি সভাপতি তথা দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী? গোয়া-কর্নাটকের পরে কি এ বারে আরও কোনও রাজ্য দখলের কৌশল তৈরি হচ্ছে?
গত কয়েক দিন ধরে যে ভাবে চূড়ান্ত আগ্রাসী হয়ে একের পর এক বিরোধী দখলে থাকা রাজ্যকে ‘দখল’ করার চেষ্টা করছেন বিজেপি নেতৃত্ব, তাতে শাসক দলের সকলেই অখুশি। বিজেপিরই অনেকে ভাবছেন, দলের শক্তি বাড়লে সেটা অবশ্যই ভাল। কিন্তু একই সঙ্গে দেশ যদি বিরোধীশূন্য হওয়ার দিকে এগোয়, তা হলে গণতন্ত্রের জন্য তা মোটেই ভাল লক্ষণ নয়। পাশাপাশি নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের শক্তি এ ভাবে আরও বাড়লে, সেটিও বিজেপির সকলের কাছে সুখকর নয়।
বিজেপির অনেক নেতা এ কথা প্রকাশ্যে বলতে পারছেন না। কিন্তু আজ বলেই ফেললেন দলের সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। সাতসকালে টুইট করলেন, ‘‘গোয়া আর কাশ্মীর দেখার পরে আমার মনে হচ্ছে, বিজেপিই যদি একমাত্র দল অবশিষ্ট থাকে, তা হলে দেশের গণতন্ত্র দুর্বল হবে।’’ স্বামী অবশ্য এর একটি সমাধানও দিয়েছেন। সনিয়া গাঁধীর ‘ইতালি’ যোগ নিয়ে বরাবরের সমালোচক স্বামী বললেন, ‘‘ইতালীয় ও তাঁর সন্তানকে যেতে বলুন। তার পর কংগ্রেসকে ঐক্যবদ্ধ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সভাপতি করে দিন। এনসিপি-রও সেই পথ অনুসরণ করে কংগ্রেসের সঙ্গে মিশে যাওয়া উচিত।’’
সুব্রহ্মণ্যম স্বামীকে অবশ্য বিজেপি নেতৃত্ব বেশি গুরুত্ব দেন না। তার অন্যতম কারণ, তিনি একাধিক বার নিজের দলকেই চূড়ান্ত অস্বস্তিতে ফেলেছেন। দলের অনেকের মতে, অরুণ জেটলি অর্থমন্ত্রী থাকার সময়ই তাঁকে সরিয়ে ওই পদটি পেতে চেয়েছিলেন স্বামী। সম্প্রতি কোনও পদ না পেয়ে মোদীর বিরুদ্ধে সরব হচ্ছেন। ভোটের আগে বলেছিলেন, মোদী সরকার অর্থনীতিতে ব্যর্থ হলেও হিন্দুত্বের জন্যই ক্ষমতায় ফিরবে। বালাকোট না হলে ১৬০-এর বেশি আসন বিজেপি পেত না বলেও মন্তব্য করেছেন। মোদীর বদলে নিতিন গডকড়ীকে প্রধানমন্ত্রী করার প্রস্তাব দেন। চলতি অধিবেশনে সংবাদমাধ্যমকে শক্তিশালী করা নিয়ে বিরোধীদের আবেদনে সই করেছেন।
বিজেপির অনেকে মানছেন, স্বামী আজ যা বলেছেন, সেটি শাসক দলের অনেকেরই মনের কথা। কিন্তু তিনশো পার করে ক্ষমতায় ফেরার পরে এখনই সময় দলের শক্তি বাড়ানো। গত ক’দিন ধরেই বিজেপি সাংসদদের সঙ্গে ছোট ছোট দল করে বৈঠক করছেন মোদী-শাহ। প্রতিটি বৈঠকেই প্রধানমন্ত্রী দাওয়াই দিচ্ছেন, কী করে মানুষের আরও কাছে পৌঁছে জনভিত্তি বাড়ানো যায়। আজ মহিলা সাংসদদের সঙ্গে বৈঠক করেন মোদী। তাঁদের স্বাস্থ্য, স্বচ্ছতার মতো বিষয়ে জোর দিতে বলেছেন। গত কাল যুব সাংসদদের সঙ্গে বৈঠকে যুবকদের কাছে টানার বার্তা দিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy