প্রতীকী ছবি।
গালওয়ান উপত্যকায় চিন ভারতের জমি দখল করে বসে থাকলেও, এ দেশে জ্বর, সর্দি-কাশি থেকে ক্যান্সারের ওষুধ তৈরির জন্য সেই প্রতিবেশী দেশটিই ভরসা।
মোদী সরকারের তথ্য বলছে, কোভিডের বছরে চিন থেকে প্রায় ১৯ হাজার ৪০০ কোটি টাকার ওষুধ ও ওষুধ তৈরির রাসায়নিক আমদানি করতে হয়েছে। কোভিডের আগের বছরের থেকে তা প্রায় ১৯ শতাংশ বেশি। কোভিডের প্রথম ঢেউয়ের সময় থেকেই চিনের সেনা লাদাখ থেকে গালওয়ান উপত্যকায় ভারতের জমিতে ঢুকে পড়েছিল। এখনও অনেক এলাকায় চিনের সেনা ভারতীয় জওয়ানদের সীমান্তে টহলদারির পথে বাধা দিচ্ছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও ওষুধ তৈরির জন্য সেই চিন থেকেই রাসায়নিক আমদানির ভরসাতেই থাকতে হয়েছে।
২০২০ সালের মে মাসে চিনের সেনা লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে ভারতের এলাকায় অনুপ্রবেশ করে। তার পরে পূর্ব লাদাখে চিনের সেনা কিছুটা পিছিয়ে গেলেও ভারতীয় সেনাকে পিছিয়ে আসতে হয়েছে। ডেমচক, ডেপসাং-সহ একাধিক জায়গায় এখনও চিনের সেনা ভারতীয় জওয়ানদের টহলদারির পথ আটকে রয়েছে। ২০২০-র জুনে চিনের সেনার সঙ্গে সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। দু’দেশের সেনা স্তরে ১৩ বার বৈঠক হলেও বিবাদ মেটেনি। কিন্তু তা সত্ত্বেও চিন থেকে ওষুধ বা ওষুধ তৈরির রাসায়নিক আমদানি বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। উল্টে কোভিডের উপসর্গের চিকিৎসায় ওষুধের চাহিদা বেড়েছে। ফলে চিন থেকে আমদানিও বেড়েছে।
কেন্দ্রের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২০-২১ বা অতিমারির প্রথম বছরে ভারতকে প্রায় ৩৯ হাজার কোটি টন ওষুধ বা ওষুধ তৈরির রাসায়নিক আমদানি করতে হয়েছে। যার মূল্য ২৮,৫২৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে শুধু চিন থেকেই ১৯,৪০২ কোটি টাকার পণ্য আমদানি হয়েছে। কোভিডের জন্য চিন থেকে ওষুধের রাসায়নিক জোগানে সমস্যা তৈরি হয়েছিল। তাতেও ভারতের আমদানি কমেনি।
কেন্দ্রীয় রসায়ন ও সার মন্ত্রকের বক্তব্য, ওষুধ বা ফার্মাসিউটিক্যাল শিল্পে ভারত বিশ্বে তৃতীয় বৃহত্তম। কিন্তু ওষুধ তৈরির কাঁচামাল বা রাসায়নিক, কেএসএস (কি-স্টার্টিং মেটিরিয়াল) ও এপিআই (অ্যাক্টিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রেডিয়েন্ট) চিন-সহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করতে হয়।
এমনকি প্যারাসিটামলের মতো সাধারণ ওষুধ তৈরির জন্যও চিনের রাসায়নিকের ভরসায় থাকতে হয়। এই কেএসএম, এপিআই তৈরিতে বিশেষ মুনাফা হয় না বলে---- দেশের ওষুধ সংস্থাগুলি তা নিজেরা তৈরি না করে চিন থেকে আমদানি করে। চিন এই রাসায়নিক উৎপাদনে বিশ্বে প্রথম স্থানে রয়েছে। তাই এ দেশের ওষুধ তৈরির শতকরা ৭০ ভাগ রাসায়নিকই চিন থেকে আমদানি হয়।
চিকিৎসার ওষুধের ক্ষেত্রে চিনের উপর এই নির্ভরতার জন্যই কি মোদী সরকার চিনের অনুপ্রবেশ নিয়ে নীরব রয়েছে? রসায়ন-সার মন্ত্রক সূত্রের ব্যাখ্যা, কোভিডের সময় চিন থেকে কেএসএস-এপিআই জোগানে সমস্যা দেখা দেওয়ায় দেশে ওষুধ উৎপাদনে বাধা পড়েছিল। তখনই স্পষ্ট হয়ে যায় যে, ভারতের ওষুধ শিল্পকে স্বনির্ভর হতে হবে।
তার পরেই মোদী সরকার এ দেশে ওষুধ তৈরির ৪১ রকম রাসায়নিক তৈরিতে উৎপাদন ভিত্তিক উৎসাহভাতা ঘোষণা করেছে। ওষুধ তৈরির ড্রাগ পার্ক গড়ে তোলার প্রকল্প ঘোষণা হয়েছে। ওষুধ তৈরিতেও উৎসাহভাতা ঘোষণা হয়েছে। তিন ক্ষেত্রেই পাঁচ থেকে দশ বছরে কত অর্থ খরচ হবে, তারও রূপরেখায় মঞ্জুরি দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy