পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি) বরাবর সেনা সরানোর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে আগেই। এখন পর্যন্ত যতটা কাজ এগিয়েছে, তা নিয়ে ‘সন্তোষ’ প্রকাশ করেছে দুই দেশই। একটি বিবৃতি দিয়ে জানাল বিদেশ মন্ত্রক। বৃহস্পতিবার দিল্লিতে বৈঠকে বসেছিল ‘ওয়ার্কিং মেকানিজম ফর কনসাল্টেশন অ্যান্ড কোঅর্ডিনেশন অন ইন্ডিয়া-চিন বর্ডার অ্যাফেয়ারস’ (ডব্লুএমসিসি)। ভারত-চিনের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় স্থিতিশীলতা এবং শান্তি বজায় রাখার জন্য তৈরি করা হয়েছিল এই সংগঠন। বৃহস্পতিবার ডব্লুএমসিসির বৈঠকে ভারত এবং চিন পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে সেনা সরানোর বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে।
২৩ অক্টোবর রাশিয়ার কাজ়ানে ব্রিকস সম্মেলনের সময় পার্শ্ববৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। সে সময় পূর্ব লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় সংঘাতের অবসান ঘটাতে দ্বিপাক্ষিক সমঝোতাকে স্বাগত জানান দুই রাষ্ট্রপ্রধান। তার পর উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়ে যে, ডেপসাং ও ডেমচক এলাকায় বিভিন্ন অস্থায়ী সেনা ছাউনি ভেঙে ফেলা হয়েছে। সেখানে টহলদারি শুরু করে দুই দেশের সেনা। দীপাবলিতে দুই দেশের সেনাবাহিনী মিষ্টিও বিনিময় করে। বৃহস্পতিবার দিল্লির বৈঠকে সীমান্তে সমঝোতা আরও একধাপ এগিয়ে গিয়েছে। এখন পর্যন্ত এলএসি থেকে সেনা সরানোর বিষয়ে যে পদক্ষেপ হয়েছে, তাতে খুশি উভয় দেশই। এর পরে বৈঠকে বসবেন দুই দেশের বিশেষ প্রতিনিধিরা। তার প্রস্তুতিও সেরে রাখা হয়েছে। কাজ়ানে দুই রাষ্ট্রনেতা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তা মেনে এই বৈঠক হবে।
আরও পড়ুন:
বিদেশমন্ত্রকের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, দুই পক্ষই সীমান্তের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছে। ২০২০ সালের সংঘাত থেকে শিক্ষা নিয়েছে। নিয়মিত কূনৈতিক স্তরে আলোচনা এবং কথাবার্তার উপর জোর দিয়েছে উভয় পক্ষই। সীমান্তে শান্তি, স্থিতিশীলতা বজায় রাখার বিষয়েও সহমত হয়েছে তারা। চলতি সপ্তাহে লোকসভায় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জানিয়েছিলেন, দুই দেশের সম্পর্কে এখন অনেকটাই উন্নতি হয়েছে।
২০২০ সালের এপ্রিল থেকে পূর্ব লাদাখের বিভিন্ন এলাকায় এলএসি পেরিয়ে আসার অভিযোগ ওঠে চিনা সেনার বিরুদ্ধে। জুন মাসে গলওয়ানে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় দুই দেশের বাহিনীর। সেই ঘটনার পরে এই সব এলাকায় সামরিক নির্মাণের অভিযোগ ওঠে চিনের বিরুদ্ধে। এলএসিতে প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি বৃদ্ধি করে ভারতও। সেখান থেকে সেনা সরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।