ভারত-চিন কোর কমান্ডার পর্যায়ের চতুর্থ বৈঠক শীঘ্রই। —ফাইল চিত্র
গালওয়ান উপত্যকায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে দু’দেশই প্রত্যাহার করেছে সেনা। ৩ কিলোমিটারের বাফার জোন তৈরির প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে। এ বার ভারতের নজর, প্যাংগং লেকের ফিঙ্গার পয়েন্টগুলি পুনরুদ্ধার। এই প্রেক্ষিতেই চতুর্থ কোর কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠকে বসতে চলেছে নয়াদিল্লি-বেজিং। ভারতীয় সেনার তরফে দ্রুত চতুর্থ বৈঠকের জন্য জোর তৎপরতা শুরু হয়েছে।
সেনার একটি সূত্রে খবর, আগামিকাল মঙ্গলবারই দু’পক্ষের সেনা কর্তাদের বৈঠক হতে পারে। যদিও নয়াদিল্লি বা বেজিং কোনও পক্ষের তরফেই এখনও নিশ্চিত করে কিছু জানানো হয়নি। গালওয়ান উপত্যকা থেকে সেনা সরিয়ে নিলেও প্যাংগং উপত্যকার চারটি ফিঙ্গার পয়েন্ট থেকে এখনও পুরোপুরি সেনা প্রত্যাহার করেনি বেজিং। পরবর্তী কোর কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠকে নয়াদিল্লির তরফে এই ফিঙ্গার পয়েন্টগুলি যাতে পুরোপুরি চিনা বাহিনী মুক্ত করা যায়, সেই প্রচেষ্টাই চালানো হবে বলে সেনা সূত্রে খবর।
প্যাংগং লেকে ১ থেকে ৮ পর্যন্ত মোট আটটি ফিঙ্গার পয়েন্ট রয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী এই আটটি ফিঙ্গার পয়েন্টই ভারতের দখলে। এর মধ্যে ফিঙ্গার পয়েন্ট ৪-এর প্রায় কাছাকাছি পর্যন্ত গাড়ি চলাচলের রাস্তা রয়েছে। ওই পর্যন্ত যাওয়ার পর ফিঙ্গার-৮ পর্যন্ত হেঁটে টহল দেয় ভারতীয় সেনা। অন্য দিকে বেজিংয়ের দাবি, ফিঙ্গার ৮ থেকে ফিঙ্গার-৪ পর্যন্ত তাদের এলাকা। এই দাবির উপর ভিত্তি করেই গত প্রায় দু’দশকে ফিঙ্গার ফোর পর্যন্ত পাকা রাস্তা তৈরি করে ফেলেছে। তৈরি হয়েছে নির্মাণও। অর্থাৎ কার্যত ফিঙ্গার ৪ থেকে ফিঙ্গার ৮ পর্যন্ত কার্যত নিজেদের এলাকা বলেই ধরে নিয়েছে বেজিং। ফলে ফিঙ্গার-৪ থেকে ফিঙ্গার ৮ পর্যন্ত ভারতীয় সেনা টহলদারিতে গেলে মাঝেমধ্যেই বাধা দেয় চিনা বাহিনী। হাতাহাতির ঘটনাও আকছার ঘটে।
আরও পড়ুন: ৩ চিনা রাজনীতিকের উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা, প্রত্যাঘাত করল বেজিংও
গত ৪ মে থেকে প্যাংগং লেকের এই ফিঙ্গার পয়েন্টগুলিতে বিপুল সেনা মোতায়েন করে। ধীরে ধীরে গালওয়ান উপত্যকা-সহ পূর্ব লাদাখের প্রায় পুরো সীমান্ত জুড়েই আগ্রাসন শুরু হয়। ১৫ জুন গালওয়ানে সেনা সংঘর্ষের পর আরও বেশি সেনা ও রসদ মজুত করে পিএলএ। তার পরেও এক দফা কোর কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে, কিন্তু জট কাটেনি। অবশেষে গত ৬ এপ্রিল জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে চিনা বিদেশমন্ত্রীর ওয়াং ই-র দীর্ঘ ভিডিয়ো বৈঠকে সমাধানসূত্র বেরোয়। গালওয়ান থেকে সেনা সরাতে রাজি হয় বেজিং। সেই অনুযায়ী ধাপে ধাপে গালওয়ানের তিনটি পেট্রোলিং পয়েন্ট ১৪, ১৫ ও ১৭ থেকে সরে গিয়েছে চিনের পিএএলএ। ডোভাল-ওয়াং ভিডিয়ো বৈঠকের সূত্র অনুযায়ী ৩ কিলোমিটারের বাফার জোন নির্ধারণের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: সনিয়া-রাহুল আলোচনায় রাজি, সচিনকে বার্তা সুরজেওয়ালার
কিন্তু ফিঙ্গার পয়েন্টগুলিকে এখনও পুরোপুরি চিনা আগ্রাসনমুক্ত করা যায়নি। ভারতীয় সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, গালওয়ানে সেনা সরানোর প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর ফিঙ্গার-৪ থেকে বেশ কিছু তাঁবু ও সাঁজোয়া গাড়ি সরিয়ে নিয়েছে পিএলএ। কিন্তু এখনও সেখানে ভারী সেনা মোতায়েন রয়েছে বলেই জানা গিয়েছে। তাই পরবর্তী কোর কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠকে ভারতের পক্ষ থেকে এই ফিঙ্গার-৪ থেকে ফিঙ্গার-৮ পর্যন্ত সেনা সরানোর বিষয়টিকেই প্রাধান্য দেওয়া হবে বলে সেনা কর্তাদের সূত্রে খবর। কোন পথে চিনা বাহিনীকে রাজি করানো যাবে, তার রণকৌশল নির্ধারণ নিয়েও চর্চা শুরু হয়েছে সেনার শীর্ষ স্তরে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy