তখনও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বাধেনি লাদাখে। তার ঢের আগে থেকেই সীমান্তে চিনা আগ্রাসন নিয়ে প্রশ্ন তুলে আসছিলেন তিনি। যদিও সেই সময় তাঁর যাবতীয় দাবি নস্যাৎ করে দেয় কেন্দ্র। কিন্তু তার এক সপ্তাহ কাটতে না কাটতেই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় চিনা আগ্রাসনের মুখে পড়ে প্রাণ হারিয়েছেন ২০ জন ভারতীয় জওয়ান। তা নিয়ে এ বার কেন্দ্রকে তীব্র আক্রমণ করলেন কংগ্রস সাংসদ রাহুল গাঁধী। তাঁর দাবি, সরকার ঘুমোচ্ছিল। সমস্যার কথা মানতেই চাইছিল না। জীবন দিয়ে তার মূল্য চোকাতে হল ভারতীয় জওয়ানদের।
লাদাখ নিয়ে শুক্রবার বিরোধীদের মুখোমুখি হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানে উপস্থিত থাকবেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীও। তার আগে এ দিন টুইটারে রাহুল লেখেন, ‘‘এটা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে যে, ১) আগে থেকে পরিকল্পনা করেই গলওয়ানে হামলা চালিয়েছে চিন, ২) ভারত সরকার ঘুমোচ্ছিল এবং সমস্যার মানতেই চায়নি, ৩) জীবন দিয়ে তার মূল্য চোকাতে হয়েছে জওয়ানদের।’’
পরিকল্পনা করেই চিন লাদাখে হামলা চালিয়েছে, প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সে কথা আগেই মেনেছে। বুধবার সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী শ্রীপদ নায়েক বলেন, ‘‘জওয়ানদের আত্মত্যাগ বিফলে যাবে না। আগে থেকে পরিকল্পনা করে হামলা চালিয়েছে চিন। ভারতীয় সেনা উপযুক্ত জবাব দেবে।’’ তাঁর এই মন্তব্যকে হাতিয়ার করেই এ দিন কেন্দ্রকে তীব্র আক্রমণ করেন রাহুল।
It’s now crystal clear that:
— Rahul Gandhi (@RahulGandhi) June 19, 2020
1. The Chinese attack in Galwan was pre-planned.
2. GOI was fast asleep and denied the problem.
3. The price was paid by our martyred Jawans.https://t.co/ZZdk19DHcG
রাহুলের টুইট।
আরও পড়ুন: ব্রেকিং: পাঠানো হল যুদ্ধবিমান, চূড়ান্ত সতর্কবার্তা বায়ুসেনাকে
সীমান্তে জওয়ানদের নিরস্ত্র অবস্থায় হামলার মুখোমুখি হতে হয়েছিল কেন, তা নিয়েও এর আগে কেন্দ্রকে নিশানা করেন রাহুল। তিনি বলেন, ‘‘গলওয়ানে নিরস্ত্র ভারতীয় সেনাদের হত্যা করে চিন জঘন্য অপরাধ করেছে। কিন্তু প্রশ্ন হল, ভারতের বীর সেনানীদের কারা নিরস্ত্র অবস্থায় ওই পরিস্থিতিতে ঠেলে দিলেন?’’ প্রত্যুত্তরে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেন, ‘‘সীমান্তে মোতায়েন সব বাহিনীই সশস্ত্র থাকে, বিশেষত যখন তারা শিবির ছেড়ে বাইরে যাচ্ছে, সেই সময়। গলওয়ানেও ১৫ জুন তা-ই হয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘদিনের প্রথা (১৯৯৬ এবং ২০০৫ সালের চুক্তি অনুযায়ী) মেনে মুখোমুখি সঙ্ঘাতের সময় অস্ত্র ব্যবহার করা হয়নি।”
কিন্তু লাদাখ প্রসঙ্গে লাগাতার কেন্দ্রকে আক্রমণ করায় এ দিন রাহুলকে একহাত নেন বিজেপি সাংসদ বিনয় সহাস্ত্রবুদ্ধি। টুইটারে রাহুল গাঁধীর উদ্দেশে খোলা চিঠি পোস্ট করেন তিনি। তাতে বলেন, ‘‘একজোট হয়ে লাদাখে সেনার উপর হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন রাজনীতিকরা। কিন্তু ভিডিয়ো এবং টুইটের মাধ্যমে রাজনীতিক ফায়দা তুলতে আপনি প্রধানমন্ত্রীকে যে ভাবে ভীরু বলে উল্লেখ করেছেন, তাতে গোটা দেশের অপমান হয়েছে। নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে এই ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করে দেশবাসীর ঐক্যকে বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছেন আপনি।’’
श्री. राहुल गांधी जी @RahulGandhi के नाम मेरी चिठ्ठी “समझना मुश्किल हैं कि प्रधानमंत्रीजी को उल्टा सीधा बोलकर क्या आप चीन का हौसला बढ़ाना चाहते हैं? पहले भी आपने प्रधानमंत्री और हमारे पार्टी के नेताओंको डरपोक या भागनेवाले या छिपे हुवे कहा हैं ।१/१ pic.twitter.com/zRFA7pYlTS
— Dr. VINAY Sahasrabuddhe (@vinay1011) June 19, 2020
বিনয় সহাস্ত্রবুদ্ধির টুইট।
আরও পড়ুন: সীমান্তে শুরু ‘এয়ার ডমিন্যান্স’? সকাল থেকে লাদাখে উড়ছে অ্যাপাশে-চিনুক
রাহুলকে কটাক্ষ করে তিনি আরও বলেন, ‘‘বিশদ তথ্য জেনে, পরিস্থিতি বুঝে যিনি মন্তব্য করেন, তাঁকেই দায়িত্বশীল রাজনীতিক বলে। আপনার বোধ হয় চিনা রাষ্ট্রদূতের কাছ থেকে পাওয়া খবরের উপর আস্থা বেশি। সেখান থেকেই বোধ হয় তথ্য পেয়েছেন আপনি। প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে কুকথা বলে আপনি কি চিনের মনোবল বাড়াতে চাইছেন? এর আগেও আপনি প্রধানমন্ত্রী এবং আমাদের দলের নেতাদের ভীরু বলে কটাক্ষ করেছেন। স্কুলে পড়া বাচ্চাদের মতো ভাষার প্রয়োগে আপনার এবং আপনার দলের সম্মানহানিই হবে।’’ ভবিষ্যতে কোনও মন্তব্য করার আগে দলের অভিজ্ঞ নেতাদের সঙ্গে পরামর্শ করে নেওয়া উচিত বলেও রাহুলকে কটাক্ষ করেন তিনি।