পথের প্রান্তে চলছে স্নাযু যুদ্ধ। ছবি: এএফপি।
‘স্যর আপকে করোনা টেস্ট কা রিপোর্ট আয়া হ্যায়’। মুখে-সুপুরি উচ্চারণে ঘুম চটকাল।
এক রাত আগে লেপের উপর কম্বল চাপা দিয়ে শুয়েছিলাম। কাচের জানলার একটা পাল্লা কিছুতেই বাগে আসে না। উপরের ছিটকিনি লাগে, নীচেরটা লাগে না। আর সেখান দিয়েই চোরা আক্রমণে বাতাস ঢুকে স্নায়ু নিষ্ক্রিয় করে দেয়। লে-র হোটেলে আমার মাথার উপরের ঘরের নম্বর ২১৩। যতবার ছাদে উঠেছি, একবার করে বুক ছ্যাৎ করে উঠেছে। দরজায় সাঁটা সরকারি নোটিস। ‘ফরটিন ডেজ কোয়রান্টিন... ভিজিটার্স নট অ্যালাউড’। করোনাকালে রবিবাবুর অমলকে সুধা কি অমনি ভাবে ডাকতো? হলফ করে বলতে পারি, অন্য যে কোনও সময় হলে ও ঘরে একবার অন্তত নক করতাম। সময়ের দাবি মেনে যতবার ও ঘরের বাইরে দিয়ে গিয়েছি, গো করোনা, গো জপেছি।
দিল্লির ৪২ ডিগ্রি গরমেও গায়ে বালাপোশ দিয়ে শোয়ার সুযোগ হচ্ছে এয়ারকন্ডিশনারের দৌলতে। ভোরের স্বপ্ন সত্যি যখন হবে হবে করছে, সেই বাজারে বিকট ফোনের চিৎকারে আধঘুমে ফোন তুলে ‘করোনা’শুনেই সোজা হয়ে বসতে হল। দিল্লিতে এই মুহূর্তে করোনা মিটার ৭৮ হাজারে চলছে। ‘ক’শুনলে আগে কলকাতা মনে হত, এখন করোনা মনে হয়!
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারির পর পথে ৪ হাজার বেসরকারি বাস, স্বস্তি যাত্রীদের
‘‘লে থেকে বলছিলাম। আপনার করোনা টেস্ট হয়েছিল না বিমানবন্দরে?’’ সম্বিত ফিরল... বটেই তো, লে অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের সঙ্গে শেষ ঝগড়ায় বেশ উঁচু গলায় বলেছিলাম, এতই যদি কড়াকড়ি, রিপোর্ট পাঠাচ্ছেন না কেন? নেগেটিভ এলে বেরিয়ে পড়ি। এক দিনেই তো পরীক্ষা হয়ে যায়। অভিযোগ নথিভুক্ত হয়েছিল।দেড় সপ্তাহ বাদে তার ফলোআপ কল। সুপুরি-গলা বলছে, চাইলে রিপোর্ট নিয়ে যেতে পারি। সেখানে লেখা আছে ‘রিপিট টেস্ট’!
ভারতীয় ভূখণ্ড থেকে হানাদারদের হঠাতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ভারতীয় সেনা। ছবি: আইস্টক।
বলে কী? আবার নাকের ভিতর ড্রিল? আগের পরীক্ষায় সন্দেহজনক কিছু মিলেছে বুঝি? ‘‘নেহি স্যরজি আপকা রিপোর্ট ইনভ্যালিড হ্যায়। কোয়রান্টিন সে অভি ছুট্টি নেহি মিলনেওয়ালা। অউর এক বার টেস্ট করা লিজিয়ে,’’ আন্তর্জাতিক এক সংবাদ সংস্থা থেকে যাওয়া সহকর্মী ঠিক এ কথাই বলেছিলেন। এক সপ্তাহের মাথায় দ্বিতীয়বার পরীক্ষার কথা জানানো হয়েছিল তাঁকে। সঙ্গে আরও এক সপ্তাহ কোয়রান্টিন। ঘুম ঘেঁটে দেওয়ার একরাশ গ্লানি নিয়ে সুপুরি-গলাকে বলা গেল, দিল্লি এসে পরীক্ষা করে যাবেন... অনেক ধন্যবাদ।
বছরের এই সময়টা দিল্লি যখন আগুন হয়ে থাকে, লাদাখে সেনাবাহিনীর মেলা বসে যায়। হাজার হাজার জওয়ান শীতল মরুভূমিতে বচ্ছরকার ট্রেনিংয়ে যায়।
রে-ব্যানের পুলিশ অ্যাভিয়েটর সানগ্লাস পরে যে ছেলেটি লে এয়ারপোর্টে চেক ইন কাউন্টারে পিছনে এসে দাঁড়াল, এক ঝলকেই তার সঙ্গে কথা বলতে ইচ্ছে করে। চাবুক চেহারা। পরনে এয়ারফোর্সের ট্র্যাক প্যান্ট, গায়ে ধূসর ভি-নেক টি-শার্ট সুঠাম শরীরের প্রতিটি পেশীকে আলগা করে ছুঁয়ে রেখেছে। বয়স খুব বেশি হলে ২৫। ইংরেজিতে সড়গড় নয়। হিন্দি, প্রান্তীয় দিল্লির। হরিয়ানা ঘেঁষা। বোঝাই যাচ্ছে এই প্রথম কমার্শিয়াল ফ্লাইটে চড়ছে। কীসের পর কী, সে বিষয়ে ধারণা নেই।
দিল্লি ফেরার ফ্লাইট ধরতে খানিক আগেই চলে এসেছি বিমানবন্দরে। কে বলতে পারে, কখন কী ঘটে যায়।মাথায় গেঁথে বসে আছে ঢোকার অভিজ্ঞতা। লাউঞ্জে ছেলেটি বসে আছে সাংবাদিকের চেয়ে হাত দশেক দূরে।ট্র্যাক করতে করতে এক সময় সামাজিক দূরত্ব মেনে ছেলেটির এক সিট ছেড়ে বসে পড়া গেল।
দোরগোড়ায় যুদ্ধের আবহ। চলছে অতন্দ্র প্রহরা। ছবি: এপি।
ফৌজি?
ছেলেটি ভিডিয়ো কলে কথা বলছিল টি-শার্ট পরা প্রেমিকার সঙ্গে। সাংবাদিকের প্রশ্নে ভুরু কুঞ্চিত হল। প্রেমিকা ফোন কাটল। ‘‘জি স্যর। আপ পত্রকার?’’ গোটা লাউঞ্জে সাংবাদিক বলতে কেবল এই অধম আর খানিক দূরত্বে যুগল। সঙ্গের লাইভ ভিউ বুঝিয়ে দেয় তাঁরাও বুম সেপাই। নইলে বোঝার উপায় নেই। মাথায় আর্মি হ্যাট, পরনে জংলা ছোপ।
উধমপুর থেকে লাদাখ এসেছিল ছেলেটি শীত কাটতে না কাটতেই। খারদুংলা-র থেকে খানিক দূরে ১০ হাজার ফুট থেকে ঝাঁপ দিয়েছিল পিঠে প্যারাস্যুট বেঁধে। সেই যে ট্রেনিং শুরু হল, লাদাখের কোণে কোণে তা চলতেই থাকল, মে মাসের শেষ পর্বে হাই অ্যালার্ট জারি হওয়ার আগে পর্যন্ত।
মে মাসের শেষেই হাই অ্যালার্ট? ছেলেটি কর্ণপাত করল না। সেনাবাহিনীর কেউই ইদানীং কোনও প্রশ্নে কর্ণপাত করছেন না। রোবটের মতো চেয়ে থাকছেন কেবল। মনে পড়ছে দু’দিন আগে ট্রাকের পিছনে ক্যারিয়ার লাগিয়ে যে জওয়ান ত্রিপলে ঢাকা ট্যাঙ্ক নিয়ে যাচ্ছিলেন পাহাড়ি পথে, তাঁর সঙ্গেও মুখোমুখি হতে হয়েছিল একবার। ‘জয়হিন্দ’ ছাড়া কোনও কথা বলেননি।
গালওয়ান উপত্যকায় চলছে কড়া নজরদারি।ছবি: পিটিআই।
মে মাস এড়িয়ে গেল ছেলেটি। চোখের মণি দু’বার ডান-বাম করল। ১২০ কিলোমিটারে সংঘাত চলছে এখনও? পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জে প্রশ্ন। ছেলেটি স্নাইপারে হাত পাকিয়েছে। দূরবীন মেপে গুলি করে... পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্কের খেলায় এখনও আনকোরা। ‘‘হেলিপ্যাড ওয়াপাস লেনা হ্যায়’’, সাংবাদিকতায় ইউরেকা মুহূর্ত বড় একটা আসে না। রাতবিরেতে খারদুংলা-র পাহাড় দেখতে দেখতে কাউন্টারে সিগারেট চলছিল যাঁর সঙ্গে। কথায় কথায় দু’টো জায়গার নাম বলেছিল সেই ছেলেটি। কর্মসূত্রে দু’টি জায়গার সঙ্গেই সে পরিচিত। কেন বলেছিল জানা নেই। ওর কথা যে বিশ্বাস করিনি, তাও বুঝেছিল বেমালুম। হয়তো শান্তিও পেয়েছিল। বিমানবন্দরে বসে একটা জায়গা ক্রস চেক করা গেল। যদিও এখনও তা বিশ্বাস করা যায় কি না, জানি না। না আঁচালে বিশ্বাস নেই, এ তো রিপোর্টিংয়ের গোড়ার শর্ত।
জাতীয় গণমাধ্যমে প্রতিদিন সংবাদ শুনছি গালওয়ান ক্রাইসিসের। একের পর এক সেনা-স্তরের ফ্ল্যাগ মিটিং ভেস্তে যাচ্ছে। এক সেনা অফিসার ভারী হেসেছিলেন রিপোর্টারের প্রশ্ন শুনে, ‘‘ভেস্তে যাচ্ছে মানে? ফ্ল্যাগ মিটিংয়ে কখনও ফয়সালা হয় না কি? দুই পক্ষ দু’পক্ষের হাতে অভিযোগ তুলে দেয়। জানিয়ে দেয় নিজেদের দাবি। সেই দাবি পৌঁছয় কূটনৈতিক স্তরে। এরপর কিছু খবর খাওয়ানো হয়, কিছু হয় আপস মীমাংসা। সেনার দায়ও নয়, দায়িত্বও নয় দু’দেশের মৈত্রীবন্ধনের।’’
ভারত-চিন সীমান্তে প্যাংগং লেক এলাকায় ফৌজি ট্রাকের আনাগোনা। ছবি: এপি।
কারা যেন বলেছিল, চুসুলের ফ্ল্যাগ মিটিংয়ে দুই দেশ সেনা সরানোর প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে? এই অধমও সেই কাহিনি গোগ্রাসে গিলেছিল। ব্যানার হেডলাইনে ছেড়েছিল পরদিনের সংবাদভাষ্যে। তওবা তওবা!
ছেলেটি পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক প্রশ্নে মুহূর্তের জন্য ফাঁদে ফেসেছিল। ‘‘ওই হেলিপ্যাডটা না পেলে আমরা সরব না।’’এই হেলিপ্যাডের কাহিনিই তো শুনেছিলাম চিলেকোঠার ছাদে। সেনাবাহিনীর খাতায় জায়গার নাম ১২০ কিলোমিটার... ভারতীয় হেলিপ্যাড কব্জা করে রেখেছে চিনের সেনা। এ ছাড়াও ডেপসং অঞ্চলের পিপি-১০, পিপি-১১, পিপি-১১এ, পিপি-১২ এবং পিপি-১৩— এই পুরো অঞ্চলটাই বোতলের গলার মতো ঘিরে রেখেছে চিনা সেনা। স্যাটেলাইট ইমেজে প্যাংগং-এর ফিঙ্গারটিপে চিনের ম্যানডারিন দেখা গেল কি না, সেটা বড় কথা নয়, হেলিপ্যাড স্ট্র্যাটেজিক লোকেশন। সেই জায়গা ফেরত না পাওয়া পর্যন্ত সেনার শান্তি নেই। এখনও জানি না। এ খবর সত্য কি না। তাবৎ সেনা আধিকারিককে কয়েকশো বার প্রশ্ন করেছি এ বিষয়ে, তাঁরা হয় শুনতে পাননি, নইলে এড়িয়ে গিয়েছেন।
‘‘আপ ফৌজি হো?’’মহিলা পুলিশ অফিসার বার দশেক ঘুরে গিয়েছেন সামনে দিয়ে। মেপেছেন কয়েক লক্ষবার। শেষকালে প্রশ্ন যখন করলেন, উত্তর দিল ছেলেটি। ‘‘পত্রকার।’’
আসন থেকে তুলে নিয়ে গেলেন ভদ্রমহিলা। সিকিয়োরিটি চেকের গোলার্ধ্ব ছাড়িয়ে আরও খানিক দূর। নোট বই হাতে সেখানে দাঁড়িয়ে আর এক সাদা পোশাকের মহিলা। সম্ভবত আইবি। রুটিন প্রশ্ন। সংবাদমাধ্যমের নাম... সাংবাদিকের নাম, ঠিকানা, কত দিন পেশায় আছি। কথায় কথায় মহিলা হাওয়ায় ভাসালেন একটা কথা। যেন নির্দেশ দিচ্ছেন অধস্তন অফিসারকে,‘‘সিসিটিভির ফুটেজ কিন্তু স্টোর করতে হবে।কিচ্ছু ফেলা যাবে না।’’বুঝতে অসুবিধা হয় না, কার উদ্দেশে এ কথা বর্ষিত হল।
লোটাকম্বল নিয়ে ফিরে যাওয়া গেল সেই একই আসনে। ছেলেটি চলে গিয়েছে অন্তত ১০০ মিটার দূরে। হাত নাড়লাম। ও নাড়ল না। দিল্লি বিমানবন্দরে লাগেজের বেল্টে হাই বললাম, হ্যালো বলল না। যেন চেনেই না।এই ছেলেটিই ঘণ্টাখানেক আগে হরিয়ানা-দিল্লি সীমানায় বাউন্সার গ্রামের গল্প বলছিল না? সাংবাদিককে তুলে নিয়ে যাওয়ার পরে আইবি কি ওর সঙ্গেও কথা বলেছিল? কোথা থেকে কী হইয়া গেল।
গালওয়ান উপত্যকায় পাহাড়ের কোলে টহলদারি ভারতীয় সেনার। ছবি: এফপি।
কী থেকে যে কী হয়ে যায়, তা নিয়েই বিড়ম্বনায় লে। একদা কাশ্মীরে যখন ছিল, বিধানসভায় সংখ্যালঘুর গ্লানি ছিল। কিন্তু হিল কাউন্সিল ছিল। টাকা এলে হিল কাউন্সিল গুরুত্ব বুঝে সে টাকা খরচ করত। কেবলই মনে হত আলাদা রাজ্য হলে টাকা বাড়বে। শীতের লাদাখ আর একটু স্বাচ্ছন্দ্য পাবে। আপাত শীতল লে-তে বাজি ফেটেছিল সেই দিন, কাশ্মীর থেকে মুক্তি হল যবে। তারপর দেখা গেল, হিল কাউন্সিলের হাতে আর কোনও ক্ষমতাই নেই। যা কিছু করার সবটাই করবে কেন্দ্র।
লাদাখে র্সূর্যাস্ত। ফের প্রতীক্ষা শান্তির ভোরের।ছবি: শাটারস্টক।
ব্যাডমিন্টন খেলে ফিরলে গাল দু’টো লাল হয়ে থাকে ইলিয়াসের। ১৯৯৯ সালে কার্গিলে পোর্টারের কাজ করেছিল। ওঁরা পোর্টার বলেন, শেরপা বলেন না। মাপ করবেন পাঠক। যুদ্ধের সময় সেনা লাদাখে কল দিয়েছিল। স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কারা যোগ দিতে চান। ইলিয়াসদের কাজ ছিল বেসক্যাম্প থেকে ২০-২৫ কেজির মাল পিঠে নিয়ে মর্টার দেখতে দেখতে শৃঙ্গে পৌঁছনো। ওই মালের বস্তায় জওয়ানদের জল থাকত, গোলাবারুদ থাকতো... ইলিয়াসরা না থাকলে টোলোলিংয়ে তেরঙা উড়ত? যুদ্ধের পর পোর্টারদের কেউ মনে রাখে না। ইলিয়াসরা মনে রাখে সৈন্যকে। আজও যুদ্ধ হলে স্বেচ্ছাসেবক হতে তৈরি ওঁরা। শুধু একটাই আক্ষেপ। মূলস্রোতের ভারত তাঁদের ‘চিংকি’বলে ডাকে!‘‘এতটাই অসম্মান, কেন্দ্রশাসিত লাদাখে হিল কাউন্সিলটা অকেজো হয়ে গেল।’’, ব্যাডমিন্টন খেললেও এতটা লাল হয় না ইলিয়াসের গাল!
গিলগিটের দিকে একবার যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল। ছবি তুলতে। শর্ত ছিল, যা হবে ৩৫ মিলিমিটার লেন্সে।. টেলি লেন্সে অনেকটা দূর দেখতে পাইনি। যত দূর চোখ যায়নি, সেখানে নাকি বিশ হাজার সেনা সাজিয়েছে পাকিস্তান। ওই যে, আগের দিন ঘেরার কাহিনি বলছিলেন রিগজিন! ঘিরবেন কে? ইমরান খান? ছোটবেলা থেকে দিদির ঘরে যাঁর পোস্টার দেখে এলাম!
আরও পড়ুন: মোট সম্পত্তির হিসেবে আগের সব রেকর্ডকে ছাপিয়ে গেলেন আমাজন কর্তা
সাংবাদিকরা স্টোরি লেখেন। সত্য তাই যা রচিবে পাঠক। লাদাখ থেকে ফেরা ইস্তক এক ভদ্রলোকের কথা বার বার মনে পড়ছে। অন্ধ ধৃতরাষ্ট্রকে কুরুক্ষেত্রের ধারাবিবরণী শুনিয়েছিলেন সঞ্জয়। ব্যাসদেব বলেছিলেন, ‘ব্যাসকূট’বোঝেন কেবল ছেলে শূকদেব আর সঞ্জয়। গণেশ তা-ই লিখেছিলেন যা তাঁকে বোঝানো হয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy