ছবি: রয়টার্স।
লাদাখে ভারতীয় সেনাবাহিনীর দলের উপরে চিনা হামলার কথা বাকি বাহিনী প্রায় ছ’ঘণ্টা পরে জানতে পেরেছিল বলে দাবি সেনা সূত্রের।
সেনার নর্দার্ন কমান্ড সূত্রের দাবি, গলওয়ান উপত্যকায় সেনার দলের উপরে হামলার ঘটনা ঘটে মঙ্গলবার রাত পৌনে দুটো নাগাদ। নর্দার্ন কমান্ডের এক শীর্ষ কর্তার বক্তব্য, ‘‘আমাদের যে দলটি ঘটনাস্থলে ছিল তাদের সঙ্গে রেডিয়ো সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ওই দলের সঙ্গে তিন জন রেডিয়ো অপারেটর ছিলেন। পরে জানা গিয়েছে তাঁরা সকলেই নিহত হয়েছেন। আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম রেডিয়োর ব্যাটারি ডাউন হয়ে গিয়েছে। শূন্যের নীচে তাপমাত্রায় অনেক সময়েই ব্যাটারি ডাউন হয়ে যায়।’’
সেনা সূত্রের দাবি, সকাল আটটা নাগাদ গলওয়ানে ঘটনাস্থলের কাছাকাছি তিন ভারতীয় সেনার দেহ দেখতে পায় অন্য একটি টহলদারি দল। কিন্তু সকাল সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত ঘটনাস্থলে ভারতীয় সেনাকে যেতে দিতে রাজি হচ্ছিল না চিনা সেনা। শেষ পর্যন্ত দীর্ঘ দর কষাকষির পরে ওই এলাকায় ঢোকে ভারতীয় সেনা। ওই সেনা কর্তার কথায়, ‘‘কয়েক জন সেনার জমে যাওয়া দেহ পাওয়া যায় শিয়োক নদীর তীরে। বাকি দেহগুলি নদী থেকে উদ্ধার করা হয়। কয়েক জন সেনার মুখ তাঁদেরই মাথার ব্যান্ড দিয়ে বাঁধা ছিল।’’
আরও পড়ুন: লাদাখে সেনা বাড়াচ্ছে দুই দেশই || আমরা জবাব দিতে তৈরি: মোদী
আরও পড়ুন: উত্তর চান বিরোধীরা, কাল সর্বদল প্রধানমন্ত্রীর
আহত সেনাদের কোথা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে তা স্পষ্ট নয়। সেনা জানিয়েছে, ২০ জন সেনা নিহত হয়েছেন। ২৩ জন গুরুতর আহত। ৯০ জনের আঘাত তেমন গুরুতর নয়। আহতদের মধ্যে চার জনকে উধমপুরের কমান্ড হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে।
যাঁরা প্রাণ দিলেন
নাম বাড়ি
• কর্নেল বিকুমাল্লা সন্তোষ বাবু হায়দরাবাদ
• নায়েব সুবেদার নুদুরাম সোরেন ময়ূরভঞ্জ
• নায়েব সুবেদার মনদীপ সিংহ পাটিয়ালা
• নায়েব সুবেদার সতনাম সিংহ গুরুদাসপুর
• হাবিলদার কে পাঝানি মাদুরাই
• হাবিলদার সুনীল কুমার পটনা
• হাবিলদার বিপুল রায় মেরঠ সিটি (আদি বাড়ি আলিপুরদুয়ার)
• নায়েক দীপক কুমার রেওয়া
• সিপাই রাজেশ ওরাং বীরভূম
• সিপাই কুন্দনকুমার ওঝা সাহেবগঞ্জ
• সিপাই গণেশ রাম কাঁকে
• সিপাই চন্দ্রকান্ত প্রধান কন্ধমাল
• সিপাই অঙ্কুশ হামিরপুর
• সিপাই গুরবেন্দ্র সাংরুর
• সিপাই গুরতেজ সিংহ মনসা
• সিপাই চন্দন কুমার ভোজপুর
• সিপাই কুন্দন কুমার সহর্ষ
• সিপাই আমান কুমার সমস্তিপুর
• সিপাই জয়কিশোর সিংহ বৈশালী
• সিপাই গণেশ হাঁসদা পূর্ব সিংভূম
হতাহতদের প্রথমে নিয়ে আসা হয়েছিল লে-র জেলা হাসপাতালে। সেখানকার শীর্ষস্থানীয় চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, অধিকাংশ সেনারই আঘাত লেগেছে মাথায়। তাঁদের লোহার রড ও বন্দুকের বাট দিয়ে আঘাত করা হয়েছে বলেই ধারণা চিকিৎসকদের।
এপ্রিল মাসে খোলা হয়েছিল শ্রীনগর-লে জাতীয় সড়ক। এখন সেই সড়ক কেবল সেনা কনভয়ের জন্য খোলা রাখা হয়েছে। গান্ধেরবাল পুলিশ জানিয়েছে, অন্য কোনও গাড়িকেই সোনমার্গ ট্রাফিক চেকপোস্ট পেরিয়ে যেতে দেওয়া হচ্ছে না।
লাদাখ পার্বত্য উন্নয়ন পরিষদের সদস্য সালাতিয়াজ গারবোর বক্তব্য, ‘‘গোটা লাদাখের পরিস্থিতিই সঙ্কটজনক। কোনও সাধারণ নাগরিককেই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার কাছাকাছি এলাকায় যেতে দেওয়া হচ্ছে না। লে বিমানবন্দরে কেবল সেনার কপ্টার ওঠানামা করছে।’’ গারবোর দাবি, লাদাখ আলাদা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষিত হওয়ার পর থেকেই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে চিনা সেনার অনুপ্রবেশ শুরু হয়েছিল। গত দু’সপ্তাহ ধরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে ভারী অস্ত্রশস্ত্র পাঠাচ্ছিল সেনা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy