লালকেল্লায় নরেন্দ্র মোদী।
আমি ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারি না। আমি কর্মফলে বিশ্বাসী। দেশের যুসমাজ, মেয়ে, কৃষকের উপর আমার আস্থা আছে। এঁরা সব করতে পারে। লক্ষ্যপূরণ থেকে কেউ বিরত করতে পারে না এঁদের। ২০৪৭ সালে স্বাধীনতার ১০০তম বর্ষে যেই প্রধানমন্ত্রী হোন না কেন, উনি আজকে নেওয়া সিদ্ধান্তেরই সিদ্ধিলাভ করবেন। ২১ শতকে ভারতকে স্বপ্নপূরণ থেকে কেউ রুখতে পারবে না।
দেশকে আত্মনির্ভর করে তুলতে স্বদেশি পণ্য কেনা আমাদের কর্তব্যের মধ্যে পড়ে।
গোটা দুনিয়া ভারতকে নতুন দৃষ্টিতে দেখছে। ভারত সন্ত্রাসবাদ এবং সম্প্রসারণবাদের বিরুদ্ধে লড়ছে এবং কড়া মোকাবিলাও করছে। আমাদের প্রতিরক্ষা বাহিনীকে সতর্ক থাকতে হবে। দেশকে আত্মনির্ভর করে তুলতে সকলকে উদ্যোগী হতে হবে। দেশবাসীকে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, সেনার হাত মজবুত করতে চেষ্টায় কোনও ত্রুটি রাখব না।
৩৭০ ধারা বিলোপ হোক, জিএসটি হোক, রাম জন্মভূমি বিবাদের শান্তিপূর্ণ সমাধান, বছরের পর বছর ধরে চলে আসা সমস্যার সমাধান করেছি আমরা। ভারতের সঙ্কল্পশক্তি লাগাতার বৃদ্ধি পাচ্ছে। করোনার সময়ও ভারতে রেকর়্ বিদেশি বিনিয়োগ আসছে। বিদেশি মুদ্রা ভাণ্ডারও সবচেয়ে বেশি। সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করে শত্রুদের নিজেদের ক্ষমতা বুঝিয়ে দিয়েছে ভারত। ভারত কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
সরকার ঠিক করেছে দেশের সমস্ত সৈনিক স্কুলগুলিকে মেয়েদের জন্যও খুলে দেওয়া হবে। মেয়েরাও সেখানে পড়াশোনা করতে পারবেন। জাতীয় নিরাপত্তা যেমন জরুরি, তেমনই পরিবেশগত নিরাপত্তাও জরুরি।
আমার প্রমাণ পেয়েছি, খেলার ময়দানে ভাষা কিন্তু প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়ায়নি। তাতেই যুবসমাজ সফল হয়েছে। নতুন শিক্ষানীতিতে খেলাকে অতিরিক্ত বিষয় করে না রেখে, পঠনপাঠনের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। একটা সময় খেলাধুলোকে গুরুত্ব দেওয়া হত না। আজ দেশে ফিটনেস এবং খেলা নিয়ে সচেতনতা তৈরি হয়েছে। এ বার অলিম্পিকেও আমরা তা অনুভব করেছি। আমাদের মেয়েরাও আজ খেলাধুলোয় নাম করছেন। সব ক্ষেত্রে মহিলাদের সমান অধিকার সুনিশ্চিত করতে হবে।
৭০-৭৫ বছর ধরে জমে থাকা সমস্যা কয়েক বছরে মিটবে না। তাই শাসনকার্যেও মানুষের অংশীদারিত্ব বাড়াতে মিশন কর্মযোগী প্রকল্প শুরু করেছে। কৌশল এবং সামর্থ্য দিয়ে মাটির জন্য জান লড়িয়ে দিতে মরিয়া যুবকদের এর সঙ্গে সংযুক্ত করা হচ্ছে। ২১ শতকের চাহিদা পূরণে নতুন শিক্ষানীতি নিয়ে এসেছে আমাদের সরকার। আমাদের ছেলেমেয়েরা আর পিছিয়ে থাকবে না। ভাষাগত বিভাজনের জন্য আর কাউকে পিছিয়ে থাকতে হবে না। মাতৃভাষায় পড়াশোনা করতে পারবেন সকলে। দরিদ্র পরিবারের সন্তান যখন মাতৃভাষায় পড়াশোনা করে সফল হবেন, তখনই আমাদের লড়াই সফল হবে।
গত ৭ বছরে দেশের মানুষকে অনাবশ্যক আইনি জাল থেকে মুক্তি দেওয়ার চেষ্টা চলছে। করোনা কালেও সরকার ১৫ হাজারের বেশি নীতি নিয়মের বাঁধন আলগা করে দিয়েছে। ২০০ বছর ধরে একটি আইন চলে আসছিল। যার আওতায় মানচিত্র বানানোর অধিকার ছিল না নাগরিকদের। সরকারের অনুমতি নিতে হতো। হারিয়ে গেলে গ্রেফতারির আশঙ্কাও ছিল। আজকাল প্রত্যেক ফোনে মানচিত্র রয়েছে। মানচিত্র, সংবাদমাধ্যম, তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে অনেক বিধিনিয়ম আলগা করে দিয়েছি আমরা। আইনি ফাঁস থেকে মানুষকে মুক্তি দেওয়া প্রয়োজন। কর ব্যবস্থাকেও সহজ করা হয়েছে।
বড় পরিবর্তনের জন্য করাজনৈতিক ইচ্ছাশক্তির প্রয়োজন। দুনিয়া দেখছে, ভারতের রাজনৈতিক ইচ্ছাশক্তিতে খামতি নেই। গুড এবং স্মার্ট গভর্নেন্সে বিশ্বাসী আমরা। গোটা দুনিয়া দেখছে।
বিশ্ব বাজারে ভারতকে নিজের পরিচয় গড়ে তুলতে হবে। ব্যবসায়ীদের বলব, সরকার আপনাদের পাশে রয়েছে। কত শত স্টার্ট আপ তৈরি হয়েছে দেশে। তাদের পণ্যকে বিদেশে পৌঁছে দিতে সাহায্য করছে সরকার। আর্থিক মদত হোক, কর ছাড়া হোক, নিয়ম শিথিল করা হোক, সবরকম সাহায্য করা হচ্ছে। করোনার এই কঠিন সময়েও হাজার হাজার স্টার্ট আপ তৈরি হয়েছে। কাল যা স্টার্ট আপ ছিল, আজ তা ইউনিকর্নে পরিণত হচ্ছে। ভারতের স্টার্ট আপ বাস্তুতন্ত্রকে পৃথিবীর মধ্যে শ্রেষ্ঠতম করে তুলতে হবে।
মোবাইলের আমদানি কমেছে, বেড়েছে রফতানি। ৭ বছর আগে প্রায় ৮০০ কোটি ডলারের ফোন আমদানি করতাম আমরা। বর্তমানে ৩০০ কোটি ডলারের ফোন রফতানিও করছি। বিশ্ব বাজারের কথা মাথায় রেখে সমস্ত পণ্যের গুণমান বাড়াতে হবে আমাদের, কারণ এর সঙ্গে ভারতের পরিচয় জড়িয়ে।
ভারতকে উৎপাদন এবং রফতানি বাড়াতে হবে। বর্তমানে ভারত নিজের যুদ্ধবিমান তৈরি করছে, সাবমেরিন তৈরি করছে, গগনযান মহাকাশে ভারতের তেরঙ্গা উত্তোলন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। স্বদেশি উৎপাদন আমাদের সামর্থ্য বাড়াতে আরও উৎসাহিত করছে আমাদের।
ভারতের রেল পরিবহণ আগের চেয়ে আধুনিক হয়েছে। অমৃত মহোৎসবের ৭৫ সপ্তাহে ৭৫ বন্দে ভারত ট্রেন দেশকে সংযুক্ত করবে। যে গতিতে বিমানবন্দর গড়ে উঠছে, তা অভূতপূর্ব। প্রধানমন্ত্রী গতিশক্তি ন্যাশনাল প্লান্ট খোলা হবে। ১০০ লক্ষ কোটির এই প্রকল্প যুবসমাজের জন্য নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করবে। গতিশক্তি এমন একটি পরিকাঠামোগত প্রকল্প, যা আমাদের অর্থনীতিকে পথ দেখাবে। দেশের পরিবহণ ব্যবস্থাকে সংযুক্ত করবে গতিশক্তি।
অতীতে কৃষি সংক্রান্ত নীতিতে ছোট কৃষকদের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। এখন তাঁদের কথা ভেবে কৃষি আইনে সংশোধন করা হচ্ছে। ন্যূনতম মূল্য বাড়ানো হোক, ক্রেডিট কার্ড দেওয়া হোক, ছোট কৃষকদের হাত মজবুত করতে কাজ করছে আমাদের সরকার। তাঁদের খরচের কথা মাথায় রেখে পিএম কিসাম সম্মান নিধি প্রকল্প আনা হয়েছে। দেড় লক্ষ কোটির বেশি টাকা কৃষকদের অ্যাকাউন্টে জমা করা হয়েছে। ছোট কৃষকদের নিয়েই আগামী দিনে গর্ব বোধ করবে গোটা দেশ।
দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু, সর্দার পটেলের হাত ধরেই ঐক্যবদ্ধ হয়েছে ভারত। বাবাসাহেব অম্বেডকর ভারতকে ভবিষ্যতের পথ দেখিয়েছেন। আজ তাঁদের প্রত্যেককে স্মরণ করছে গোটা দেশ। ওঁদের কাছে চিরকাল ঋণী থাকব আমরা।
উত্তর-পূর্বের সমস্ত রাজ্যের রাজধানীগুলিকে রেলপথে সংযুক্ত করা হবে। শান্তি স্থাপনের জন্য, সব ধরনের চেষ্টা করব আমরা। জম্মু-কাশ্মীরে বিকাশ দেখা যাচ্ছে। আগামী দিনে বিধানসভা নির্বাচন হবে। প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। লাদাখে আধুনিক পরিকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে। সেখানে উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে অনগ্রসর শ্রেণির মানুষের হাত ধরতে হবে, দলিত, আদিবাসী, এবং সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সমাজের বিকাশ কেউ যেন পিছনে পড়ে না থাকেন, তা নিশ্চিত করতে কাজ করছি আমরা। সর্বাত্মক বিকাশই আমাদের লক্ষ্য।
আয়ুষ্মান ভারত যোজনার মাধ্যমে প্রত্যন্ত প্রান্তরেও আধুনিক চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত ৭৫ হাজারের বেশি স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। ব্লক স্তরেও ভালহাসপাতাল এবং গবেষণাগার তৈরিতে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালগুলি নিজস্ব অক্সিজেন প্লান্ট পাবে খুব শীঘ্রই।
অমৃতকালে আমরা যে সিদ্ধান্ত নেব তা স্বাধীনতার ১০০ বছর পূর্তিতে আমাদের উন্নততর হতে সাহায্য করবে। বললেন মোদী। তাঁর কথায়, অমৃত মহোৎসবের লক্ষ্য, ভারতবাসীকে উন্নয়নের নতুন শিখরে পৌঁছে দেওয়া। ৭৫তম স্বাধীনতা দিবসে সেই অমৃত কালের সূচনা হচ্ছে। এই অমৃতকালের লক্ষ্য হবে এমন ভারত নির্মাণ করা যেখানে শহর এবং গ্রামের সুযোগ সুবিধায় কোনও ভেদাভেদ থাকবেন না। অমৃতকালের লক্ষ্যে হবে এমন দেশ নির্মাণ যেখানে সরকার নাগরিক জীবনে অকারণ দখলদারি করবে না। অমৃতকালের লক্ষ্য এমন এক দেশ নির্মাণ করা যেখানে দুনিয়ার সমস্ত আধুনিক পরিকাঠামো থাকবে। যখন ভারত বিশ্বের কোনও দেশের থেকে কম হবে না।
গোটা বিশ্বে সবচেয়ে বড় টিকাকরণ প্রকল্প ভারতেই চলছে বলে জানালেন মোদী। জানালেন, কো উইন অ্যাপের মাধ্যমে টিকাকরণের ডিজিটাল শংসাপত্র দেওয়ার বিষয়টি বিশ্বের অন্য দেশগুলিকেও আকর্ষণ করছে। ভারত নিজের টিকা বানিয়ে বড় সঙ্কট থেকে রক্ষা পেয়েছে। তা না হলে এই পরিস্থিতির উপর ভরসা করতে হলে অতিমারি সামলানো যেত না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy