ফাইল চিত্র।
ভোটারদের মধ্যে বিলি করার জন্য ঘরে প্রচুর টাকা মজুত আছে— ‘বিশ্বাসযোগ্য’ সূত্র থেকে এ খবর পেয়েই ডিএমকে প্রধান এম কে স্ট্যালিনের কন্যা-জামাতার বাড়িতে হানা দিয়েছিল। তা-ও এক জায়গায় নয়। রাজ্যে বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকা চার জায়গায়। অথচ সব মিলিয়ে উদ্ধার হল মাত্র ১ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকা! দিনভর তল্লাশিতে পাওয়া এই টাকার উৎসও আয়কর বিভাগের অফিসারদের রীতিমতো কাগজপত্র মিলিয়ে দেখিয়ে দিলেন বাড়ির লোকেরা!
অগত্যা! পুরো টাকাটাই বাড়ির লোকের হাতে ফেরৎ করতে হল আয়কর বিভাগকে। যদিও বিবৃতিতে আয়কর বিভাগ দাবি করেছে, করফাঁকি সংক্রান্ত প্রচুর নথি তারা উদ্ধার করেছে। কিন্তু সেই বিবৃতির পরেও আয়কর বিভাগের সাড়া জাগানো তল্লাশিগুলির সাম্প্রতিক ইতিহাসে এমন ঘটনার কথা মনে করতে পারছেন না অনেকেই। আর সেই সূত্রেই চরমে উঠেছে তামিলনাড়ুর রাজনৈতিক বাগযু্দ্ধ।
বিধানসভা ভোটের ঠিক প্রাক্কালে ডিএমকে-প্রধানের কন্যা-জামাতার বাড়িতে শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে আচমকা ২৫ জন আয়কর অফিসারের নেতৃ্ত্বে শুরু হওয়ার অভিযানের পিছনে প্রথম থেকেই রাজনৈতিক প্রতিহংসা চরিতার্থ করার অভিযোগ তোলে নির্বাচনে বিজেপি-জোটের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ডিএমকে শিবির। তাদের দাবি, এই আয়কর অভিযানের ঠিক আগের দিনই স্ট্যালিনের ছেলে উদয়নিধি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ছেলে জয় শাহের অস্বাভাবিক সম্পদবৃদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বলেই কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের নির্দেশে আয়কর অভিযান হয়েছে।
স্ট্যালিন কন্যা-জামাতার বাড়িতে এই আয়কর অভিযান ঘিরে সকাল থেকেই সুর চড়িয়েছিল ডিএমকে-শিবির। তাদের সঙ্গে যোগ দেয় জোটসঙ্গী কংগ্রেস এবং বামেরাও। তাদের বক্তব্য ছিল, তামিলনাড়ুর ভোটে একটিও আসন কপালে জুটবে না বলেই রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে আয়কর তল্লাশি চালিয়েছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে রাজ্যে বিজেপির জোটসঙ্গী এডিএমকে-র সরকারও। অন্য বিরোধী দলগুলিও এই ঘটনায় একসুরে বিজেপিকে নিশানা করে বলতে শুরু করে, নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের হাতের পুতুল হয়ে গিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি। এমনকি নির্বাচন কমিশন বা অন্য স্বাধীন সংস্থাগুলিও বিজেপির ‘এজেন্ট’ হিসেবে কাজ করছে বলে অভিযোগ তুলতে থাকেন দক্ষিণের রাজ্যটির একাধিক বিরোধী নেতা-কর্মীরা। এই প্রসঙ্গে ভোট এলেই বিভিন্ন রাজ্যে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির তৎপরতাবৃদ্ধি এবং স্বশাসিত সংস্থাগুলি কী ভাবে বিরোধীদের তরফে পাওয়া অভিযোগ নিয়ে নীরব থাকে, সেই সংক্রান্ত উদাহরণ তুলতে শুরু করেন অনেকেই। সোশ্যাল মিডিয়াতেও বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতিশোধমূলক আচরণ নিয়ে সরব হল নেটিজেনদের একাংশ। পাল্টা আক্রমণে নেমে বিজেপি নেতৃত্ব বিষয়টিকে আয়কর বিভাগের রুটিন অভিযান বলে দাবি করলেও তাকে বিশেষ গুরুত্ব দেননি ডিএমকে-নেতৃত্ব। এই তল্লাশি নিয়ে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ ডিএমকে প্রধান গত কালই এক নির্বাচনী সভায় বলেন, ‘‘আমিই এম কে স্ট্যালিন। এই স্ট্যালিন জরুরি অবস্থা এবং মিসার মুখোমুখি হয়েছি। এই সব আয়কর হানায় আমি ভয় পাই না। প্রধানমন্ত্রীর জানা উচিত, আমরা এডিএমকে নেতাদের মতো নই, যাঁরা তাঁর সামনে নতজানু হয়েছে।’’ ছেড়ে কথা বলেননি স্ট্যালিন-পুত্র উদয়নিধিও। কেন্দ্রের আয়কর তল্লাশি নিয়ে সরাসরি বিজেপি সরকারকে নিশানা করে তিনি বলেন, ‘‘আমার বোনের বদলে আমার বাড়িতে হানা দিয়ে দেখান। আমি কলাইনরের (ডিএমকে-র প্রয়াত প্রধান করুণানিধি) নাতি। আমরা এই সব হানায় ভয় পাই না।’’
দিনের শেষ আয়কর অভিযানের ‘ব্যর্থতা’ নিয়ে বিজেপি সরকারকে বিঁধে আরও বেশি সুর চড়িয়েছে ডিএমকে-কংগ্রেস জোট। অন্য দিকে বিজেপি-এডিএমকে নেতারা এ নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy