কেরল সিপিএমের রাজ্য সম্মেলনে এ বিজয়রাঘবন এবং আর বিন্দু।
কয়েক মাস আগেও যিনি ছিলেন ভারপ্রাপ্ত রাজ্য সম্পাদক, নতুন রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে তিনি নেই!
মুখ্যমন্ত্রী বাইরে গেলে সরকার পরিচালনার ভার যাঁর উপরে দেওয়া হয়েছিল, সম্পাদকমণ্ডলীর তালিকায় তাঁর নাম নেই!
কোভিড মোকাবিলায় কৃতিত্ব দেখিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের স্বীকৃতি আদায় করেছিলেন যিনি, নতুন মন্ত্রিসভার পরে তাঁর দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতেও জায়গা হল না!
রাজ্য সম্পাদক পদে কোনও পরিবর্তন না হলেও দল পরিচালনার কমিটি গঠনে বড়সড় চমক নিয়ে এল কেরল সিপিএম। কোচিতে সদ্যসমাপ্ত দলের ২৩তম রাজ্য সম্মেলনে গঠিত রাজ্য কমিটিতে ৭৫ বছরের বেশি বয়সের কাউকে রাখা হয়নি। একমাত্র ব্যতিক্রম মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। কিন্তু রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর বাইরে রাখা হয়েছে এমন কয়েক জন প্রথম সারির নেতা-নেত্রীকে, যাঁদের বয়স ঊর্ধ্বসীমা পেরোয়নি, রাজনীতিতেও তাঁরা প্রবল ভাবে সক্রিয়। এমন ঘটনায় চর্চা শুরু হয়েছে, সিপিএম রাজনীতির সমীকরণে তা হলে কি বদল এল?
তৃতীয় বারের জন্য কেরলে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক হয়েছেন কোডিয়ারি বালকৃষ্ণন। নিজের অসুস্থতা এবং ছেলে বিনীশ কোডিয়ারির বিতর্কে জড়িয়ে জেলে যাওয়ার ঘটনার জেরে তাঁকে মাঝে বেশ কিছু দিন দায়িত্ব থেকে সরে থাকতে হয়েছিল। সেই সময়ে ভারপ্রাপ্ত রাজ্য সম্পাদক ছিলেন এ বিজয়রাঘবন। তিনি একই সঙ্গে কেরলে বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের (এলডিএফ) আহ্বায়ক। কিন্তু ১৭ সদস্যের নতুন রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে তাঁর জায়গা হয়নি! সিপিএমের একটি সূত্রের অবশ্য ইঙ্গিত, আসন্ন পার্টি কংগ্রেসে বয়সের কারণে এস আর পিল্লাইকে অব্যাহতি দিয়ে তাঁর জায়গায় বিজয়রাঘবনকে পলিটবুরোয় নেওয়া হতে পারে। সে ক্ষেত্রে কেরল থেকে প্রাক্তন সাংসদ বিজয়রাঘবনকে আবার দিল্লি গিয়ে কাজ করতে হবে।
এরই মধ্যে এ বারে রাজ্য সম্মেলনে অবশ্য অন্য একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনাও ঘটেছে। দলে মহিলাদের মতামতকে যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া হয় না এবং মহিলা নেতা-কর্মীদের করা অভিযোগের ঠিক মতো সুরাহা হয় না, সংগঠনের নেতৃত্বে অনের সময়ই নারীবিদ্বেষী মনোভাব কাজ করে— এমন অভিযোগে সরব হয়েছিলেন আর বিন্দু। তিনি ছিলেন ত্রিশূরের প্রথম মহিলা মেয়র, অধুনা রাজ্যের উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী। পলিটবুরোর সদস্য বৃন্দা কারাটের উপস্থিতিতেই দলে মহিলাদের দুরবস্থা নিয়ে সরব হয়েছিলেন বিন্দু, যিনি বিজয়রাঘবনের স্ত্রী। সম্মেলনের শেষ দিনে দেখা যায় বিন্দুকে রাজ্য কমিটির বিশেষ আমন্ত্রিত সদস্য করা হয়েছে, আর বিজয়রাঘবন সম্পাদকমণ্ডলীতে জায়গা পাননি! কেরল সিপিএমের নেতৃত্ব অবশ্য দুই ঘটনার মধ্যে যোগসূত্র অস্বীকার করেছেন।
কিছু দিন আগেও বিজয়ন-বালকৃষ্ণনদের পরে কেরলে দলের হাল ধরার জন্য এম ভি গোবিন্দন মাস্টারের নাম নিয়ে চর্চা হত। দ্বিতীয় বার বিজয়ন ক্ষমতায় ফেরার পরে তিনি মন্ত্রী হয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সরকারের দায়িত্বও সামলেছেন। কিন্তু গোবিন্দনও রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে নেই। প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে কে শৈলজা, সিটু নেতা এবং রাজ্যসভার সক্রিয় সাংসদ এলামালাম করিমও জায়গা পাননি। দলীয় সূত্রের খবর, সম্মেলনে বালকৃষ্ণন যে সাংগঠনিক রিপোর্ট পেশ করেছেন, সেখানে বলা হয়েছে গোবিন্দন, শৈলজারা তিরুঅনন্তপুরমে থাকলেও রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর বেশ কিছু বৈঠকে গরহাজির থাকতেন।
অন্য দিকে, বিজয়নের আগের মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য হলেও ই পি জয়রাজনকে আবার তিরুঅনন্তপুরমে দলের রাজ্য কেন্দ্রে সক্রিয় ভূমিকা নিতে বলা হয়েছে। জয়রাজনের ব্যাখ্যা, ‘‘সম্পাদকমণ্ডলীতে সকলের জায়গা হয়নি ঠিকই। তবে দলের নিয়মে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যেরা রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে থাকতে পারেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy