অরুণা লক্ষ্মী, জনার্দন রেড্ডি এবং সোমশেখর রেড্ডি। ফাইল চিত্র।
গত আড়াই দশক ধরে তাঁদের উপরে নির্ভর করেই ‘খনির শহর’ বল্লারি-সহ কল্যাণ-কর্নাটকের (অন্ধ্রপ্রদেশ লাগোয়া এই অংশ হায়দরাবাদ-কর্নাটক নামেও পরিচিত) ৭টি জেলায় ভোটে লড়েছে বিজেপি। মাঝে ২০১৩ সালে তাঁদের বিদ্রোহের জেরেই ওই অংশে বিপর্যস্ত হয়েছিল পদ্ম-শিবির। কিন্তু এ বার বল্লারির সেই রেড্ডি ব্রাদার্সের অন্দরেই ভাঙন ধরেছে। বুথ ফেরত কয়েকটি সমীক্ষায় ইঙ্গিত, এ বার তার ফল ভুগতে হতে পারে বিজেপিকে।
১৯৯৯ সালের লোকসভা ভোটে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীর বিরুদ্ধে বল্লারিতে লড়তে নেমেছিলেন বিজেপি নেত্রী সুষমা স্বরাজ। তাঁর হাত ধরেই উত্থান ঘটে তিন রেড্ডি ভাই— জনার্দন, সোমশেখর এবং করুণাকরের। পরবর্তীতে তিন জনেই একাধিক বার বিধায়ক হয়েছেন। জনার্দন ও করুণাকর মন্ত্রিত্বও সামলেছেন। পাশাপাশি, অবৈধ খনন-সহ নানা দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছে তিন ভাই এবং তাঁদের ঘনিষ্ঠ প্রভাবশালী বিজেপি নেতা বি শ্রীরামালুর।
রেড্ডিদের সবচেয়ে প্রভাবশালী ভাই জনার্দনের নাম কয়েক বছর আগে বল্লারির ডেপুটি মেয়র খুনের ঘটনায় উঠে এসেছিল। তার পর থেকেই বিজেপির সঙ্গে তাঁর দূরত্ব বাড়তে শুরু করে। গত ডিসেম্বরে কর্নাটক ছেড়ে নিজের দল ‘কল্যাণ রাজ্য প্রগতি পক্ষ’ গড়েন তিনি। ২০১৩-র বিধানসভা ভোটের আগেও বিজেপি ছেড়ে বিএসআর কংগ্রেস গড়েছিলেন জনার্দন। সে সময় দুই ভাই ছিলেন তাঁর পাশে। ছিলেন বন্ধু শ্রীরামালুও। কিন্তু এ বার তেমনটা হয়নি। বাকিরা বিজেপিতেই রয়ে গিয়েছেন।
এই পরিস্থিতিতে বল্লারি সিটি কেন্দ্রে ভাই সোমশেখরের বিরুদ্ধে জনার্দন নিজের স্ত্রী অরুণা লক্ষ্মীকে ‘ফুটবল’ চিহ্নে প্রার্থী করেছেন। নিজে লড়ছেন তাঁর পুরনো আসন কোপ্পল জেলার গঙ্গাবতীতে। অন্য দিকে, রেড্ডিদের বড় ভাই বিজয়নগর জেলার হরপনাহল্লির বিদায়ী বিজেপি বিধায়ক করুণাকরও পদ্ম-চিহ্নে সেই কেন্দ্রে লড়ছেন। একদা পরিবারের সবচেয়ে প্রভাবশালী জনার্দনের এই ‘নিঃসঙ্গতার’ জন্য অরুণাকে ‘প্রধান কারণ’ বলছে বল্লারির বিজেপি নেতা-কর্মীদের একাংশ। যদিও বাস্তব পরিস্থিতি বলছে বেশ কিছু আসনে ভোট কেটে বিজেপির ‘যাত্রা ভঙ্গ’ করতে পারে জনার্দনের দল।
অনগ্রসর নেতা জনার্দনের ‘কল্যাণ রাজ্য প্রগতি পক্ষ’ এ বার কল্যাণ কর্নাটকের ৪০টি আসনের মধ্যে গোটা তিরিশেকে লড়ছে। অধিকাংশ বুথ ফেরত সমীক্ষার পূর্বাভাস সেখানে বিজেপিকে পিছনে ফেলতে চলেছে কংগ্রেস। শেষ পর্যন্ত রেড্ডিদের এক ভাইয়ের জন্যই কি বেঙ্গালুরুর গদি হারাবে বিজেপি?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy