Advertisement
E-Paper

Kerala CM: কে ‘আচার্য’, দ্বৈরথ এ বার কেরলেও, সংঘাত রাজ্য ও রাজ্যপালের

রাজ্যপাল আরিফের দাবি, তাঁর নিজে আপত্তি সত্ত্বেও কান্নুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে তিনি সরকারের ‘পছন্দের ব্যক্তি’কে মনোনীত করেছেন।

আরিফ মহম্মদ খান।

আরিফ মহম্মদ খান। —ফাইল চিত্র।

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২১ ০৬:২৯
Share
Save

উচ্চ শিক্ষা দফতরকে না জানিয়ে উপাচার্যদের ডেকে পাঠিয়ে এ রাজ্যে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। উপাচার্য-প্রশ্নেই এ বার দক্ষিণের কেরলে রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্যের বাম সরকারের সংঘাত তুঙ্গে পৌঁছল। উপাচার্য নিয়োগ এবং শিক্ষা দফতরের নানা কাজে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ চলছে বলে অভিযোগ করে আচার্য পদ থেকে সরে যেতে চেয়েছেন কেরলের রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান। শুধু তা-ই নয়, মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নকে কড়া চিঠি লিখে রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীকেই আচার্য হওয়ার ‘প্রস্তাব’ দিয়েছেন! মুখ্যমন্ত্রী বিজয়নও পাল্টা জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার আচার্য পদ চায়নি। নিয়ম মেনে উপাচার্য নিয়োগ করার পরে রাজ্যপালের হঠাৎ ভোল বদলের পিছনে ‘অভিসন্ধি’ আছে কি না, প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

রাজ্যপাল আরিফের দাবি, তাঁর নিজে আপত্তি সত্ত্বেও কান্নুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে তিনি সরকারের ‘পছন্দের ব্যক্তি’কে মনোনীত করেছেন। কিন্তু তার পরে কালাডি শ্রী শঙ্করাচার্য সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদের জন্য একটিই নাম রাজ্যপালের কাছে পাঠানো হয়েছে। একাধিক নামের প্যানেল থেকে রাজ্যপালকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়ার সুযোহ দেওয়া হয়নি। মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠিতে রাজ্যপাল লিখেছেন, ‘আচার্য হিসেবে পদে পদে অসম্মান এবং রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ মেনে নেওয়া যায় না। তার চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীই আচার্য হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করুন। কেরল বিধানসভার অধিবেশন এখন বন্ধ। এই মর্মে অধ্যাদেশ (অর্ডিন্যান্স) তৈরি করে আমার কাছে পাঠালে আমি সঙ্গে সঙ্গে সই করে দেব’!

রাজ্যপালের এমন ক্ষোভ সংবলিত চিঠি পাওয়ার পরের দিন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী কে বালগোপাল এবং অর্থসচিবকে রাজভবনে পাঠিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাতে পরিস্থিতির বদল হয়নি। সূত্রের খবর, তার পরে মুখ্যমন্ত্রী বিজয়নই ফোন করেছিলেন রাজ্যপালকে। আইনের বাইরে গিয়ে তাঁরা কিছু করেননি, সে কথাই রাজ্যপালকে বোঝানোর চেষ্টা করেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু আরিফ বলে দেন, এই বিষয়ে তাঁদের মত ও দৃষ্টিভঙ্গি যে হেতু একেবারেই ভিন্ন মেরুর, তাই আলোচনা করে লাভ নেই! সরকারকে তোপ দেগে সপ্তাহখানেকের জন্য দিল্লি চলে গিয়েছেন আরিফ। যাওয়ার পথে বলেছেন, ‘‘সরকারের কর্মসূচি রূপায়ণ করা আমার কাজ নয়!’’

আলোচনার পথে কাজ হচ্ছে না দেখে এ বার সুর চড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী বিজয়নও। কান্নুরেই সিপিএমের জেলা সম্মেলনে গিয়েছিলেন দলের পলিটবুরো সদস্য বিজয়ন। তার অবসরে রবিবার তাঁর মন্তব্য, ‘‘নিয়ম মেনে কান্নুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে নিযোগ করেছেন রাজ্যপালই। এখন হঠাৎ মত বদলের কারণ কী? তার মানে হয় এই ভোল বদলের পিছনে কোনও অভিসন্ধি আছে। অথবা তাঁর উপরে তেমন চাপ তৈরি করা হয়েছে।’’ সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর ব্যাখ্যা, ওই ক্ষেত্রে সার্চ কমিটি একটি নামই দিয়েছে। ইউজিসি সদস্যের মতও তা-ই। এখন উপাচার্য পদে যদি সর্বসম্মত নাম আসে, তা হলে রাজ্যপালের কাছে অন্য কিছু কী ভাবে পাঠানো হবে?

কেন্দ্রের নাগরিকত্ব সংশোধন আইনকে (সিএএ) চ্যালেঞ্জ করে কেরল সরকারের আদালতে যাওয়ার প্রশ্নেও গত বছর রাজ্যপালের সঙ্গে সংঘাত বেধেছিল। বিজেপি আমলে একাধিক রাজ্যপালের মতো আরিফও ‘গেরুয়া প্রভাবে’ কাজ করছেন, এই অভিযোগ উঠেছে আগেও। এ বারের সংঘাতের পরে রাজ্যপালের পক্ষ নিয়ে আসরে নেমে গিয়েছে কেরলের বিরোধী দল কংগ্রেস এবং বিজেপি। যদিও আরিফ ব্যাখ্যা দিয়েছেন, কালিকট বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু নিয়োগের জন্য আরএসএস-বিজেপি’র চাপ ছিল। কিন্তু তিনি সেই নিয়োগে সায় দেয়নি। তা হলে তিনি কী করে ‘বিজেপির লোক’ হলেন? এতে আবার খানিকটা ফাঁপরে পড়েছে বিজেপি! কেরল প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি কে সুধাকরন অবশ্য কটাক্ষ করছেন, ‘‘বিজেপি শিক্ষার গেরুয়াকরণ করছে। আর এখানে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সিপিএম ফ্যাক্টরি বানানো হচ্ছে!’’

এখন আরিফ কী করবেন? মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের পরে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘কোনও রকম হস্তক্ষেপ হবে না বলে নিশ্চয়তা পাওয়া গেলে ভেবে দেখা যাবে!’’

kerala Pinarai Bijayan

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}