রাজীব গাঁধীর ৭৬তম জন্মবার্ষিকীতে রাহুলের শ্রদ্ধার্ঘ্য। বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লির বীরভূমিতে। পিটিআই
বিজেপি যতই তাঁর বিদেশ যাওয়া নিয়ে কটাক্ষ করুক, তাঁকে ‘এই আছি এই নেই রাজনীতিকের’ তকমা দিক, রাহুল গাঁধীর দাবি, তিনি লম্বা দৌড়ের জন্য এসেছেন। চ্যালেঞ্জ ছেড়ে পালাবেন না।
বিদেশ যাওয়ার ব্যাখ্যা দিয়ে তাঁর দাবি, দেশে অষ্টপ্রহর তাঁকে নিরাপত্তা কর্মীরা ঘিরে থাকেন। নিজের বাড়ির ভিতরে না-থাকলে তাঁর ব্যক্তিগত পরিসর খুই কম। কিন্তু ভারতের বাইরে তিনি অনেকটাই নিজের মতো করে থাকতে পারেন। বিভিন্ন দেশের মানুষের সঙ্গে মিশতে ভালবাসেন। অন্য দেশের সংস্কৃতি থেকে শিক্ষা নিতে পছন্দ করেন। রাহুলের দাবি, কিন্তু তা-ই বলে তাঁর রাজনীতিতে আগ্রহ নেই, তিনি শুধুই বিদেশে বেড়াতে যেতে ভালবাসেন, এমন নয়।
কংগ্রেসের একটা বড় অংশ রাহুলকে ফের দলের সভাপতি পদে ফেরাতে চাইছেন। উল্টো দিকে বিজেপি তাঁকে ‘হেরো’ তকমা দিতে চাইছে। তাঁকে ‘এই আছি, এই নেই রাজনীতিবিদ’ বলে বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরা কটাক্ষ করছেন। সদ্য প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে রাহুলের জবাব, ‘‘সত্যিটা হল, আমি আরএসএস-বিজেপির প্রচণ্ড রাজনৈতিক যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছি। তারা আমাকে রাতদিন নিশানা করে। তারা আমাকে, আমার চিন্তাধারাকে বিপদ হিসেবে দেখে। আমাকে নিরুৎসাহী, বোধবুদ্ধিহীন, এমন একজন যে শুধু বিদেশে ছুটি কাটাতে যায়, সেই ভাবে তুলে ধরাটা তাদের জন্য জরুরি।’’
তাঁর কথা হেসে উড়িয়ে দেওয়া হলেও বাস্তবে যে সত্যি বলেই প্রমাণিত হয়, সেটা বোঝাতে আজ রাহুল বলেন, “যখন আমি করোনার বিপদ নিয়ে সতর্ক করেছিলাম, আমাকে নিয়ে হাসাহাসি হয়েছিল। আজ আমি বলছি, গত ৭০ বছরে এই প্রথম দেশের তরুণদের চাকরি দেওয়া যাবে না।” ভিডিয়ো কনফারেন্সে ছত্তীসগঢ় কংগ্রেসের এক অনুষ্ঠানে রাহুল বলেন, “আমাকে বিশ্বাস না করলে আমার কথা শুনবেন না। আমার সঙ্গে একমত না হলে ছ’-সাত মাস পরে মিলিয়ে নেবেন।” তরুণদের চাকরির অভাবের জন্য মোদী সরকারের নীতিকে দায়ী করে রাহুল বলেন, “দেশে ৯০ শতাংশ চাকরি অসংগঠিত ক্ষেত্রে হয়। প্রধানমন্ত্রী মোদী সেই ব্যবস্থাটা ভেঙে দিয়েছেন। এতে ছোট-মাঝারি শিল্প ভেঙে পড়বে। একের পর এক সংস্থা মুখ থুবড়ে পড়বে।”
বৃহস্পতিবার প্রয়াত রাজীব গাঁধীর জন্মবার্ষিকীর সকালে রাহুল বীরভূমিতে শ্রদ্ধা জানাতে যান। তার পর টুইট করেও বাবাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে বাবার দূরদৃষ্টির কথা স্মরণ করেন। কংগ্রেসের নেতাদের মতে, কোভিড, অর্থনীতি নিয়ে আগাম সতর্কতা রাহুলের দূরদর্শিতাও প্রমাণ করে দিয়েছে। কংগ্রেসের সিংহভাগ নেতারই মত, রাহুলকেই দলের হাল ধরতে হবে।
যদিও লোকসভা ভোটে হারের দায় নিয়ে পদত্যাগের পর রাহুল নিজেই বলেছিলেন, গাঁধী পরিবারের বাইরের কারও কংগ্রেস সভাপতি হওয়া উচিত। সদ্য প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরাও একই মত দিয়েছেন। কিন্তু দলের নেতাদের মত তা নয়। প্রবীণ নেতারা বরং কংগ্রেসের অন্দরমহলে প্রশ্ন তুলেছেন, রাহুলকেই দায়িত্ব নিতে হলে কেন দেরি করা হচ্ছে? সনিয়া গাঁধী অন্তর্বর্তী সভানেত্রী হলেও তিনি অসুস্থ। কেন আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া সেরে রাহুল দায়িত্ব নিচ্ছেন না? রাহুল এ নিয়ে মুখ খোলেননি। কিন্তু বলেছেন, “রাজনীতিতে লম্বা দৌড়ের জন্য এসেছি। আমি চ্যালেঞ্জ থেকে পালিয়ে যাই না।” তবে দলীয় সূত্রে খবর, ২২ বা ২৪ তারিখ কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছে। সাংগঠনিক নির্বাচনের প্রস্তুতি সেখান থেকে শুরু হতে পারে। তবে কিছুই এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy