Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪

কাশ্মীর নিয়ে ট্রাম্পের প্রস্তাব স্বাগত, জানালেন হুরিয়ত নেতারা 

বরাবরই কাশ্মীর নিয়ে মধ্যস্থতার প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে এসেছেন বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতারা।

ছবি: রয়টার্স।

ছবি: রয়টার্স।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্রীনগর শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৯ ০১:৪১
Share: Save:

বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতারা স্বাগত জানিয়েছেন। গত কাল স্বাগত জানিয়েও আজ কিছুটা সতর্ক মেহবুবা মুফতির পিডিপি। কাশ্মীর নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতার প্রস্তাব নিয়ে এমনই মিশ্র রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া দেখল উপত্যকা। আম কাশ্মীরির একাংশের অবশ্য মধ্যস্থতার ফলে সঙ্কট মিটলে আপত্তি নেই।

গত কাল ওয়াশিংটনে পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে বৈঠকের পরে ট্রাম্প জানান, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও তাঁকে কাশ্মীর নিয়ে মধ্যস্থতা করতে অনুরোধ করেছেন। মধ্যস্থতা করতে পারলে তিনি খুশিই হবেন। ট্রাম্পের প্রস্তাবকে স্বাগত জানান ইমরান। কিন্তু ভারতের তরফে বিবৃতি দিয়ে স্পষ্ট জানানো হয়, এমন কোনও অনুরোধ মোদী করেননি। কাশ্মীর দ্বিপাক্ষিক সমস্যা। দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমেই তার সমাধান করতে হবে।

বরাবরই কাশ্মীর নিয়ে মধ্যস্থতার প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে এসেছেন বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতারা। এ দিনও হুরিয়ত নেতা মিরওয়াইজ় উমর ফারুক ও সৈয়দ আলি শাহ গিলানি জানান, ট্রাম্পের এই প্রস্তাবের অর্থ বিশ্বের শক্তিশালী দেশগুলি ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে আলোচনা চাইছে। মিরওয়াইজ়ের কথায়, ‘‘কাশ্মীর সঙ্কটের ফলে কাশ্মীরিরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাই ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে আলোচনা শুরুর যে কোনও উদ্যোগকেই তাঁরা স্বাগত জানাবেন।’’ গিলানির বক্তব্য, ‘‘আমেরিকার অবশ্যই এই বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা উচিত। কাশ্মীর প্রসঙ্গ তোলার জন্য আমরা পাকিস্তানের কাছে কৃতজ্ঞ। এই সঙ্কট কাশ্মীরের আর একটি প্রজন্মকে গ্রাস করতে চলেছে।’’

গত কাল ট্রাম্পের প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছিলেন জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতি। আর এক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও প্রাক্তন বিদেশ প্রতিমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা অবশ্য ট্রাম্প ‘বাড়াবাড়ি করছেন’ বলে মন্তব্য করেছিলেন। তবে ভারত ট্রাম্পকে মিথ্যেবাদী প্রতিপন্ন করে কি না তা তিনি দেখতে চান বলে তির্যক মন্তব্যও করেছিলেন ওমর।

বিদেশ মন্ত্রকের কড়া বিবৃতির পরে কিছুটা সতর্ক অবস্থান নিয়েছে মূলস্রোতের দলগুলি। ওমরের দল ন্যাশনাল কনফারেন্সের মুখপাত্র ইমরান দার বলেন, ‘‘বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতির পরে বলার বিশেষ কিছু নেই। প্রাথমিক ভাবে আমরা বিস্মিত হয়েছিলাম। কারণ, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর তরফে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে কাশ্মীরে মধ্যস্থতা করতে বলা বিদেশনীতিতে বড় পরিবর্তন। তবে দ্বিপাক্ষিক স্তরে কাশ্মীর নিয়ে আলোচনা শুরু করা উচিত।’’

অন্য দিকে প্রবীণ পিডিপি নেতা রফি মিরের বক্তব্য, ‘‘আমরা সব সময়েই চাই কাশ্মীর নিয়ে আলোচনা হোক। ভারত-পাকিস্তানের দৃষ্টিভঙ্গি আলাদা হতে পারে। কিন্তু আলোচনা ছাড়া পথ নেই।’’ প্রবীণ সিপিএম নেতা এম ওয়াই তারিগামির বক্তব্য, ‘‘বিদেশ মন্ত্রক ব্যাখ্যা দিয়েছে ঠিকই। কিন্তু খোদ প্রধানমন্ত্রীর এ নিয়ে মুখ খোলা উচিত। কারণ, আমেরিকা কাশ্মীরে নাক গলালে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। আফগানিস্তান-সহ যে দেশেই ওয়াশিংটন নাক গলিয়েছে সে দেশই বড় ক্ষতির মুখে পড়েছে। দ্বিপাক্ষিক স্তরে শান্তিপূর্ণ ভাবে কাশ্মীর সমস্যা মেটাতে হবে।’’

লাল চকের ব্যবসায়ী মহম্মদ ইউসুফের বক্তব্য, ‘‘৩১ বছর ধরে একটানা রক্তপাত দেখছি কাশ্মীরে। আমাদের আর একটি প্রজন্ম এর মধ্যে দিয়েই যাক এমনটা আমি অন্তত চাইব না। ট্রাম্প বা অন্য কোনও রাষ্ট্রপ্রধানের হস্তক্ষেপে যদি সঙ্কট মেটে তবে আমার অন্তত আপত্তি নেই।’’

শ্রীনগরের বাসিন্দা আশিক কলেজের পড়ুয়া। লাল চকের পাশেই দাঁড়িয়ে তিনি বললেন, ‘‘এখানে কোনও চাকরির সুযোগ দেখতে পাচ্ছেন? ভারত সরকারের যে অর্থ উপত্যকায় আসে তার বেশির ভাগ অংশই খরচ হয় হতাহতদের ক্ষতিপূরণ দিতে আর বাহিনীর আধুনিকীকরণ করতে। যে কোনও মূল্যে সমস্যা মেটানো উচিত।’’

প্রায় একই সুর সরকারি কলেজের শিক্ষক মহম্মদ ইউসুফের। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আলোচনা ছাড়া সমস্যা কখনও মিটবে না।’’

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy