Advertisement
E-Paper

সিন্ধুর জল কী ভাবে আটকানো যাবে? স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি কিছু পরিকল্পনা নিয়ে তৈরি ভারত, আন্তর্জাতিক চাপ আসবে?

১৯৬০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর বিশ্বব্যাঙ্কের মধ্যস্থতায় ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। সিন্ধু এবং তার উপনদীগুলির মোট জলের উপর পাকিস্তানের অধিকার প্রায় ৮০ শতাংশ। ভারত পায় মাত্র ২০ শতাংশ জল।

How India is planning to stem Indus flow to Pakistan

পহেলগাঁও হামলার পর সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২৫ ১২:২৭
Share
Save

জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার ঘটনার পর পাকিস্তানের সঙ্গে স্বাক্ষরিত সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। এর ফলে সিন্ধু এবং তার উপনদীগুলির জল আটকে দেবে ভারত। সেই জল পাকিস্তানে যাতে না যেতে পারে, তার ব্যবস্থা করা হবে। কেন্দ্রীয় জলশক্তিমন্ত্রী সিআর পাতিল শুক্রবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকের পর হুঁশিয়ারির সুরে জানিয়েছেন, ‘‘এক বিন্দু জলও সিন্ধু থেকে পাকিস্তানে যাবে না, আমরা তা নিশ্চিত করব।’’ কিন্তু নদীর জল কী ভাবে আটকাবে ভারত? আন্তর্জাতিক আইন কী বলছে? বিশ্বব্যাঙ্কের দিক থেকে কোনও রকম চাপ এলে কী ভাবেই বা তার মোকাবিলা করবে নয়াদিল্লি?

১৯৬০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর বিশ্বব্যাঙ্কের মধ্যস্থতায় ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। চুক্তি অনুসারে, ভারতের নিয়ন্ত্রণে থাকবে সিন্ধুর পূর্বের তিন উপনদী— বিপাশা (বিয়াস), শতদ্রু (সাটলেজ়) এবং ইরাবতী (রাভি)-র জল। এ ছাড়া, সিন্ধু ও তার দুই উপনদী বিতস্তা (ঝিলম), চন্দ্রভাগার (চেনাব) জলের উপরে থাকবে পাকিস্তানের অধিকার। এই নদীগুলি ভারতের দিক থেকে পাকিস্তানের দিকে বয়ে যায়। জল আটকাতে হলে প্রাথমিক ভাবে বাঁধ দিতে হবে ভারতকে।

সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাড়িতে শুক্রবার যে বৈঠক হয়েছে, সেখানে সিন্ধু চুক্তি নিয়ে বিশদে আলোচনা হয়েছে। এই চুক্তি স্থগিত করার পরিকল্পনা কী ভাবে ভারত বাস্তবায়িত করবে, সামনে কী কী পথ খোলা আছে, তা স্থির হয় ওই বৈঠকে। শীঘ্রই তা কার্যকর করাও শুরু করবে নয়াদিল্লি। এক আধিকারিক এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘একাধিক দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা এখনও আলোচনার টেবিলে আছে। তবে আপাতত আমাদের এমন একটা পরিকল্পনা চাই, যা তাৎক্ষণিক এবং যার মাধ্যমে ভবিষ্যতের নকশা পাওয়া যাবে।’’

ভারতের সামনে কী কী পথ খোলা

স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা অনুযায়ী, ভারত সিন্ধু, বিতস্তা এবং চন্দ্রভাগার উপরে বাঁধগুলি পলিমুক্ত করে জলাধারের ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি করতে চায়। এর ফলে পাকিস্তানের দিকে জল যাওয়ার পরিমাণ অনেকটা কমবে। বিতস্তার উপনদীর উপর তৈরি কিষেণগঙ্গা এবং চন্দ্রভাগার উপনদীর উপর নির্মীয়মাণ রাতলে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই পাকিস্তান অভিযোগ জানিয়ে আসছে। তাদের দাবি, এই জলবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলির মাধ্যমে ভারত আসলে পাকিস্তানের জল আটকে দিচ্ছে। ২০১৬ সালে এ নিয়ে প্রথম আপত্তি জানিয়েছিল ইসলামাবাদ। তার পর থেকে টানাপড়েন চলছে। সিন্ধু চুক্তি স্থগিত করার পর পাকিস্তানের এই আপত্তি উড়িয়ে দেওয়া ভারতের পক্ষে আরও সহজ হবে।

দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা হিসাবে এই নদীগুলির উপরে বাঁধের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে পারে ভারত। আরও জলাধার তৈরি করে সিন্ধু, বিসস্তা এবং চন্দ্রভাগার জল আটকে দেওয়া যায়। এখনই এই পরিকল্পনা কার্যকর করা হচ্ছে না। তবে দুই পড়শির সম্পর্কের আরও অবনতি হলে এই ধরনের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার বাস্তবায়ন করতে পারে নয়াদিল্লি। সেগুলিও আলোচনায় রয়েছে।

আন্তর্জাতিক চাপ

সিন্ধু চুক্তি স্থগিত করার ভারতের সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেছে পাকিস্তান। ইতিমধ্যে তারা জানিয়েছে, সিন্ধুর জল বন্ধ করা হলে তা ‘যুদ্ধ’ হিসাবে দেখা হবে। এমনিতে সিন্ধু এবং তার উপনদীগুলির মোট জলের উপর পাকিস্তানের অধিকার প্রায় ৮০ শতাংশ। ভারত পায় মাত্র ২০ শতাংশ জল। পাকিস্তানের কৃষি এই জলের উপরেই নির্ভরশীল। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ভারত বা পাকিস্তান নিজেদের প্রয়োজনে এই জল ব্যবহার করলেও কোনও অবস্থাতেই জলপ্রবাহ আটকে রাখতে পারবে না। যেহেতু বিশ্বব্যাঙ্কের মধ্যস্থতায় এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, ভারত তা স্থগিত করলে আন্তর্জাতিক সাহায্য চাইতে পারে পাকিস্তান। সে ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাঙ্ক বা অন্য কোনও আন্তর্জাতিক সংগঠন থেকে ভারতের উপর চাপ আসতে পারে। সে দিকটিও মাথায় রেখে এগোচ্ছে নয়াদিল্লি। এই ধরনের পরিস্থিতিতে আইনি ভাষায় কী জবাব দেওয়া হবে, তা তৈরি রাখা হচ্ছে। সেই সঙ্গে কেন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ করা হয়েছে, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সেই বার্তা পৌঁছে দেওয়ার কূটনৈতিক প্রচেষ্টাও চালিয়ে যাচ্ছে ভারত।

সংক্ষেপে
  • সংঘর্ষবিরতিতে রাজি ভারত এবং পাকিস্তান। গত ১০ মে প্রথম এই বিষয় জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পরে দুই দেশের সরকারের তরফেও সংঘর্ষবিরতির কথা জানানো হয়।
  • সংঘর্ষবিরতি ঘোষণার পরেও ১০ মে রাতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে গোলাবর্ষণের অভিযোগ ওঠে। পাল্টা জবাব দেয় ভারতও। ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠে। তবে ১১ মে সকাল থেকে ভারত-পাক সীমান্তবর্তী এলাকার ছবি পাল্টেছে।
Indus Water Treaty India Pakistan Pakistan Pahalgam

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।