অনুজ্ঞা ঝা ও ইন্দুলেখা পরদান
এক জন উদ্দীপিত ‘পরিবর্তন’-এর ভোট-ফলে। ঝাড়খণ্ডের সেই তরুণী বলছেন, গোটা দেশের জন্যই এটা একটা বার্তা। আর অন্য জন জানালেন, তাঁকে হেনস্থা হতে হয়েছে বলে যে খবর ছড়াচ্ছিল, সেটা ভুয়ো। কেরলের প্রতিবাদী তরুণী বলছেন, যা করেছেন, মনের ডাকে সাড়া দিয়েই করেছেন।
অনুজ্ঞা আর ইন্দুলেখা। দু’জনেই আইনের ছাত্রী। সম্প্রতি খবরের শিরোনামে এসেছিলেন দু’জনেই। ইন্দুলেখা কেরলের মেয়ে, দিল্লিতে পাঠরত অনুজ্ঞা ঝাড়খণ্ডের।
সিএএ-র বিরুদ্ধে আন্দোলনে শামিল হয়েছিলেন জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী অনুজ্ঞা ঝা। যে দিন তাঁদের ক্যাম্পাসে পুলিশ ঢুকেছিল বলে অভিযোগ ওঠে, সে দিন টিভি চ্যানেলের ক্যামেরার সামনে অনুজ্ঞা ফুঁসে উঠেছিলেন। আন্দোলন যে শুধু বিশেষ কোনও ধর্মসম্প্রদায়ের নয়, সেটা বোঝাতে চেয়েছিলেন জোর গলায়। তাঁর রাজ্যে এ বার পালাবদল ঘটেছে। দ্বিতীয় বর্ষের এই ছাত্রী বলছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আমাদের রাজ্যে এসে বলেছিলেন, ‘জঙ্গলমে রহেনেওয়ালে মেরে ভাইয়ো!’ তার মানে কী? ঝাড়খণ্ডের মানুষকে জঙ্গলের লোক ভেবে যা খুশি বলে দেওয়া যায়?’’ বুধবার ফোনে ঝাঁঝিয়ে উঠলেন অনুজ্ঞা। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘যে রাজ্য বিরসা মুন্ডার নেতৃত্বে স্বাধীনতা আন্দোলনে এত বড় ভূমিকা নিয়েছিল, সে রাজ্যের ঐতিহ্য মোদী ভুলে গেলেন কী করে?’’
জামিয়ার আন্দোলনের এই মুখ নিজের রাজ্য সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন। তাঁর মন্তব্য, ‘‘মানুষ একটা কথা স্পষ্ট বুঝতে পেরেছে। গত পাঁচ বছর ধরে এখানে একটা জিনিস হচ্ছিল, যা আগে কোনও দিন হয়নি। সেটা হচ্ছে, বিভাজনের রাজনীতি।’’ তা হলে ঝাড়খণ্ড কি গোটা দেশকেই বার্তা দিল? অনুজ্ঞা বললেন, ‘‘অবশ্যই। মানুষ উন্নয়ন চায়। দৈনন্দিন বেঁচে থাকাটাই যারা ওলোটপালট করে দেয়, তাদের কেউ চায় না।’’
এর্নাকুলমের আইনের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ইন্দুলেখা হিজাব পরে কিছু দিন আগে একটি ছবি পোস্ট করেছিলেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেখানে মোদীকে তাঁর প্রশ্ন ছিল, ‘‘পোশাক দেখে আমায় চিনতে পারছেন?’’ সে ছবি ভাইরাল হওয়ার পরে তাঁর বাবা-মা উদ্বেগে পড়েছিলেন। বুধবার ইন্দুলেখা বললেন, ‘‘ওটা ভাইরাল হবে ভেবে তো কিছু করিনি। একটা দায়বদ্ধতা থেকে করেছিলাম। কলেজের সিনিয়ররা সবাই সে দিন এই নিয়ে কথা বলছিল। মনে হল, যোগ দেব।’’
প্রতিবাদ জানাতে এসে তরুণীর দাবি, কোনও রাজনৈতিক দলের তরফে তিনি কিছু বলছেন না। সংবাদমাধ্যমের নজরেও পড়তে চান না। ইন্দুলেখার সাফ কথা, ‘‘কারও মন বদলাতে পারব না। সিএএ কেউ সমর্থন করতে পারেন, কেউ না-ও পারেন। আমরা চাই, বিষয়টা যেন সবাই ঠিক ভাবে বুঝতে পারে।’’
গত কাল তাঁর টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে একটি পোস্ট ভাইরাল হয়, যাতে লেখা— ‘‘হ্যালো প্রধানমন্ত্রী, আপনার বেটি পড়াও, বেটি বচাও প্রকল্পের কী হল? নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছি। তার জন্য আপনার আইটি সেলের সদস্যদের হাতে হেনস্থা হতে হচ্ছে।’’ আজ ফোনে ইন্দুলেখা পরদান কিন্তু নিজে আনন্দবাজারকে বললেন, ‘‘ওই টুইট আমার নয়, অ্যাকাউন্টটাও ভুয়ো।’’ তবে তিনি সিএএ-র বিরোধিতার জায়গা থেকে এক চুলও সরেননি। বাবা-মা চিন্তিত দেখে তাঁদের বুঝিয়ে বলেছেন, ‘‘আমি প্রধানমন্ত্রীকে একটা প্রশ্ন করছি মাত্র। ওঁর বিরুদ্ধে কোনও অবমাননাকর মন্তব্য করিনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy