প্রতীকী ছবি।
মোদী সরকারের প্রথম জমানায়, ২০১৭ সালে ‘অ্যাফর্ডেবল’ বা কম দামি আবাসনকে পরিকাঠামো শিল্পের তকমা দিয়েছিলেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। ২০১৯ সালের বাজেটে গুরুর পথে হেঁটে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনও বাজি ধরলেন সেই আবাসনেই। ক্রেতাদের জন্য গৃহঋণের সুদে আয়কর ছাড়ের সীমা বাড়ালেন। কম দামি ফ্ল্যাটগুলির মাপ বাড়িয়ে আরও বেশি ক্রেতা-বিক্রেতাকে আনলেন এই বাজারের আওতায়। লক্ষ্য, আবাসন শিল্পকে অক্সিজেন জোগানোর পাশাপাশি মধ্যবিত্তের মন জয়। ইঙ্গিত, বাড়তে পারে কর্মসংস্থানও।
শুক্রবার তাঁর প্রথম বাজেট পেশ করতে গিয়ে নির্মলা জানান, কম দামি আবাসন কিনলে গৃহঋণের সুদে বাড়তি দেড় লক্ষ টাকা আয়কর ছাড় মিলবে। এতদিন যে সীমা ছিল দু’ লক্ষ। অর্থাৎ এখন ৪৫ লক্ষ টাকা বা তার কম দামের বাড়ি কিনলে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা পর্যন্ত সুদের উপর আয়করে ছাড়। অর্থমন্ত্রীর দাবি, এতে ১৫ বছরের গৃহঋণে প্রায় ৭ লক্ষ টাকা সুরাহা হবে মধ্যবিত্ত ক্রেতার।
সঙ্গে ‘অ্যাফর্ডেবল হাউজিং’-এর সংজ্ঞা বদলের প্রস্তাবও দিয়েছেন নির্মলা। এতদিন বড় শহরে এই ধরনের ফ্ল্যাটের সর্বোচ্চ মাপ ছিল ৩০ বর্গ মিটার কার্পেট এরিয়া (দেওয়াল বাদে মেঝের মাপ)। তা বেড়ে হয়েছে ৬০ বর্গ মিটার। ছোট শহরে সেই প ছিল ৬০ বর্গ মিটার। বেড়ে দাঁড়াল ৯০ বর্গ মিটার। এ ধরনের ফ্ল্যাট বা বাড়ির দামের ঊর্ধ্বসীমাও ধরা হয়েছে ৪৫ লক্ষ টাকা।
এই জোড়া উপহারেই এ বার ঘুরে দাঁড়ানোর আশায় বুক বাঁধছে নির্মাণ শিল্প। ক্রেডাইয়ের হবু প্রেসিডেন্ট হর্ষবর্ধন পাটোডিয়া জানান, ‘‘নতুন সুবিধার দৌলতে মধ্যবিত্ত বাড়ি বিক্রির হার বার্ষিক ৬ থেকে ৮ শতাংশ বাড়বে।’’ সম্প্রতি এগুলিতে জিএসটিও যেখানে ৮% থেকে কমে ১% হয়েছে। স্থানীয় নির্মাণ সংস্থার কর্তারা স্বস্তিতে। কারণ মুম্বই, দিল্লি, বেঙ্গালুরুর তুলনায় কলকাতার বাজার এই বাড়ির উপরে বেশি নির্ভরশীল, দাবি ক্রেডাই সদস্য রাজীব ঘোষ ও ঋষি জৈনের।
সরবরাহ মসৃণ রাখতে অর্থমন্ত্রী রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার জমিতে এই আবাসন তৈরির ছাড়পত্র দিয়েছেন। ক্রেডাই বেঙ্গলের দুই কর্তা নন্দু বেলানি ও সুশীল মোহতার দাবি, এই সুবিধা শহরাঞ্চলে প্রকল্প গড়তে সাহায্য করবে। কারণ জমির চাহিদার তুলনায় সরবরাহ না থাকায় তার দাম বেড়ে যায়। ফলে কম দামি আবাসন করে লাভের টাকা ঘরে তোলা কঠিন হয়।
এ দিন মডেল ভাড়াটিয়া আইন তৈরির কথাও বলা হয়েছে। নির্মলা জানান, যে আইন রয়েছে তাতে ভাড়াটে ও বাড়িওয়ালার সুযোগ-সুবিধায় ভারসাম্য নেই। পরামর্শদাতা সংস্থা নাইট ফ্র্যাঙ্ক ইন্ডিয়ার প্রধান শিশির বৈজাল বলেন, ‘‘এই আইন বাড়ি ভাড়ায় দিতে সাহস জোগাবে। অনেকেই দ্বিতীয় বাড়ি কিনতে উৎসাহী হবেন। কারণ লগ্নির টাকা ভাড়া দিয়ে উঠে আসবে।’’
সব মিলিয়ে বাজেটে ‘সান্তা’র উপহারে ভর করেই ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছে আবাসন শিল্প।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy