পূজা, হরলিন, রিয়া ইত্যাদি নামে এই চক্র চালাচ্ছে পাক চররা।
পূজা, হরলিন, মুসকান, ববিতা— না, এগুলি নিছক কোনও নাম নয়। এই ধরনের নামের আড়ালেই চলছে যৌনতার বিশাল বড় নেটওয়ার্ক। শিকার ভারতীয় সেনা, পুলিশ, বিএসএফের জওয়ানরা। যৌনতার টোপ দিয়ে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে ভারতের প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা-সহ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। নেপথ্যে পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই।নেটমাধ্যমে বন্ধুত্ব, যৌনতা, নগ্ন ছবি এবং তার পর লাগাতার ব্ল্যাকমেল! প্রক্রিয়াটা ঠিক এই ভাবেই চলে। আর গোটা প্রক্রিয়ার নিয়ন্ত্রণ থাকে সীমান্তের ও পারে পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশের হায়দরবাদের পাক সেনা ক্যান্টনমেন্টে।
মাঝেমধ্যেই শোনা যায়, রাজস্থান বা গুজরাতে সেনাকর্মী যৌনতার ফাঁদে পা দিয়ে এ দেশের গুরুত্বপূর্ণ নথি পাচার করে দিয়েছেন। এ সেই চক্রের গোটা প্রক্রিয়াটি কী ভাবে চলে তার পর্দা ফাঁস করেছেন গোয়েন্দারা। মূলত পাকিস্তানের সীমান্ত লাগোয়া রাজস্থান এবং গুজরাতের সেনাচৌকিতে কর্মরত সেনাদের নিশানা বানায় এই চক্র।
ভারতীয় সেনার অন্দরের কথা জানতে পাক সেনার গোয়েন্দা ইউনিট ৪১২ সিন্ধ প্রদেশের হায়দরাবাদ থেকে এই ‘হানিট্র্যাপ’ মডিউল তৈরি করেছে। এই মিশন চালানোর জন্য মূলত স্থানীয় যৌনকর্মী, গরিব মহিলা এবং কলেজ ছাত্রীদের কাজে লাগানো হয়। এঁদের পাকিস্তান ইন্টেলিজেন্স অপারেটিভ (পিআইওপি) প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। পাক সেনার ক্যাপ্টেন পদমর্যাদার আধিকারিকারিকদের অধানে এই মহিলাদের প্রশিক্ষণ চলে। তাঁদের নাম বদলে পূজা, মুসকান, হরলিন, ববিতা— ইত্যাদি নাম দেওয়া হয়। তাঁদের পঞ্জাবি, রাজস্থানি, হিন্দি এবং আরও বেশ কয়েকটি ভাষা শিখিয়ে দেওয়া হয়। শুধু তাই-ই নয়, তাঁদের চালচলন, হাবভাব এবং পোশাকআশাক কোনও কিছু দেখে বোঝার বিন্দুমাত্র উপায় থাকে না যে এই মহিলারা পাকিস্তানের চর!
পাক সেনা এই মহিলাদের বিভিন্ন নামে পরিচয়পত্র তৈরি করে হোটেল বুক করে দেয়। সেই হোটেল মহিলারা থেকেই ভারতে শিকার ধরার জাল ফেলেন। হোটেলের ঘরকে একেবারে কোনও পারিবারিক ছবিতে বদলে ফেলা হয়। হিন্দু দেব-দেবীর ছবি রাখা হয়। যাতে শিকার বুঝতে পারেন ইনি কোনও ভারতীয় মহিলা।
তার পর ওই হোটেল থেকেই ভারতীয় সেনা, বিএসএফ বা পুলিশের আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আগে থেকেই তাঁদের কাছে সেই সব শিকারের যাবতীয় তথ্য দিয়ে রাখে পাক সেনা। ফলে অনেক সাবলীল ভাবে সেই সব সেনাকর্মী বা পুলিশকর্মীদের ফাঁদে ফেলতে পারেন ওই পাক মহিলারা। +৯১ থাকা ফোন নম্বর জোগাড়ের জন্য ভারতে স্লিপার সেলকে কাজে লাগানো হয়। তার পর শুরু হয় হোয়াটসঅ্যাপ কল।
প্রথমে বন্ধুত্ব। নিজেদের ভারতীয় তরুণী বা মহিলা হিসেবে পরিচেয় দেওয়া। তার পর আরও ঘনিষ্ঠ কথোপকথন। এবং শেষে নগ্ন ছবি বা ভিডিয়ো পাঠিয়ে সেনা বা পুলিশকর্মীদের জালে এমন ভাবে ফাঁসায় যে, তাঁর গড়গড় করে এ দেশের যাবতীয় তথ্য পাচার করে ফেলেন। তার পরই শুরু হয় ব্ল্যাকমেলিং, হুমকি। ভয় দেখিয়ে বিপুল অঙ্কের টাকা হাতানো হয়। নগদে নয়, ক্রিপ্টোকারেন্সিতে।
সম্প্রতি জোধপুরের এক সেনাকর্মী যৌনতার ফাঁদে পড়েন। রিয়া নামে এক পাকিস্তানি চরের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় তাঁর। ওই সেনাকর্মীকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। ধীরে ধীরে রিয়ার জালে কখন ফেঁসে গিয়েছেন বুঝতেই পারেননি ওই সেনাকর্মী। হঠাৎ তাঁকে নগ্ন ভিডিয়ো পাঠান রিয়া। জওয়ানের ভিডিয়োও রেকর্ড করে নেন। তার পর দেশের প্রতিরক্ষা বিষয়ক খবর দেওয়ার জন্য ব্ল্যাকমেল করা শুরু করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy