অমিত শাহ।
এনআরসি এবং নয়া নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-এর বিরুদ্ধে দেশ জোড়া বিক্ষোভের মুখে প্রায় প্রতিদিনই নতুন ব্যাখ্যা দিচ্ছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। বিরোধীদের অভিযোগ, সেই ব্যাখ্যায় সন্দেহ দূর হওয়ার বদলে আরও ঘোরালো হয়ে উঠছে পরিস্থিতি। ঠিক যেমন হয়েছিল নোটবন্দির পরে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নিত্যনতুন নির্দেশিকায়।
আজ মন্ত্রকের তরফে নাগরিকত্ব আইনের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, প্রথমত, ১৯৮৭ সালের ১ জুলাইয়ের আগে যাঁরা ভারতে জন্মেছেন, তাঁরা সকলেই এ দেশের নাগরিক। দ্বিতীয়ত, ১ জুলাই ১৯৮৭ সাল থেকে ৩ ডিসেম্বর ২০০৪-এর মধ্যে যাঁরা জন্মেছেন এবং যাঁদের বাবা-মায়ের মধ্যে কোনও এক জন ভারতের নাগরিক, তিনিও ভারতীয়। তৃতীয়ত, ৩ ডিসেম্বর ২০০৪ সালের পরে যাঁরা জন্মেছেন এবং যাঁদের বাবা-মা দু’জনেই ভারতের নাগরিক কিংবা এক জন ভারতীয় নাগরিক এবং অন্য জন সেই সময়ে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী নন, তাঁরাও ভারতের নাগরিক হিসেবে গণ্য হবেন।
কিন্তু বিরোধীদের বক্তব্য, ১৯৮৭ সালের ১ জুলাইয়ের আগে যখন জন্মের নথিকরণ বাধ্যতামূলক ছিল না, তখন যাঁদের জন্ম, তাঁরা কী নথি দেখাবেন? তা ছাড়া, ২০০৪ সালের ৩ ডিসেম্বরের পরে জন্মানো কেউ যদি বাবা বা মায়ের মধ্যে কোনও এক জনকে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে প্রমাণ করতে না পারেন, তা হলে তাঁর নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। কিন্তু তিনি যে হেতু ভারতে জন্মেছেন, তাই অ-মুসলিম হলেও নিজেকে শরণার্থী হিসেবে দাবি করে নয়া নাগরিকত্ব আইনের সুবিধা নিতে পারবেন না। এই সমস্ত জটিলতার সমাধান কী?
এর স্পষ্ট জবাব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ব্যাখ্যায় মেলেনি। যদিও মন্ত্রকের কর্তাদের দাবি, দেশ জুড়ে এনআরসি চালু করার সময় যে নিয়মকানুন তৈরি হবে, তাতে বৈধ নাগরিকদের কারও কোনও সমস্যা হবে না। জন্মের নথি বা স্কুলে পড়ার নথি দাখিলের মাধ্যমে নাগরিকত্বের আবেদন করা যাবে। নিরক্ষর ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে। তাঁদের ক্ষেত্রে জন্মের সাক্ষী থাকা কোনও ব্যক্তি বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের শংসাপত্রের ভিত্তিতে নাগরিকত্বের আবেদন করা যাবে। দেশ জুড়ে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) তৈরি হওয়ার পরে তাতে নাম উঠলে মিলবে ন্যাশনাল সিটিজেনশিপ কার্ড। ভোটার কার্ড বা আধার কার্ড নয়, সেটিই হবে এ দেশের নাগরিক হওয়ার পরিচয়।
এ দিনই বিজেপির সরকারি টুইটার হ্যান্ডল থেকে একটি পুরনো টুইট তুলে নেওয়ায় জল্পনা তৈরি হয়েছে। গত এপ্রিলে লোকসভা ভোটের প্রচারে দার্জিলিঙে অমিত শাহ বলেছিলেন, গোটা দেশে এনআরসি হবে এবং হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ বাদে বাকি সব অনুপ্রবেশকারীকে তাড়ানো হবে। আজ সেই টুইট মুছে ফেলায় বিরোধীদের কটাক্ষ, স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ দেখেই মনে হয় পিছু হটেছেন শাহ।
এ দিকে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক আজ জানিয়েছে, এনআরসি কবে হবে, তার দিনক্ষণ বা ভিত্তিবর্ষ নির্ধারিত হয়নি। তবে এ জন্য নতুন আইনের প্রয়োজন নেই। কারণ ২০০৪ সালের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনেই এনআরসি করার সুযোগ রয়েছে। সিএএ নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সঙ্গে আইন মন্ত্রকের আলোচনা চলছে জানিয়ে বলা হয়েছে, কোনও রাজনৈতিক দল বা অসরকারি সংগঠন চাইলে ওই আইন নিয়ে আপত্তি বা সুপারিশ মন্ত্রককে পাঠাতে পারে। মন্ত্রক তা খতিয়ে দেখবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy