‘কাশ্মীর ফাইলস’ নিয়ে বিতর্ক যেন থামতেই চাইছে না। ফাইল চিত্র।
আরও অনেক দূর গড়াল ‘কাশ্মীর ফাইলস’ বিতর্কের জল। এ বার ভারতে নিযুক্ত ইজ়রায়েলি রাষ্ট্রদূত নায়োর গিলনকে টুইটারে মেসেজ করে জনৈক ব্যক্তি লিখলেন, “হিটলার মহান ব্যক্তি ছিলেন। তিনি আপনার মতো অযোগ্যদের পুড়িয়ে দিয়েছিলেন।” একই সঙ্গে ওই মেসেজে লেখা হয়, “যত শীঘ্র সম্ভব ভারত থেকে বেরিয়ে যান।” তবে যে ব্যক্তি এই মেসেজটি করেছেন, নিরাপত্তার কারণেই তাঁর নাম এবং পরিচয় প্রকাশ্যে আনতে চাননি গিলন।
তবে একই সঙ্গে টুইটে তিনি জানান, বিতর্কের পরও ভারতের বহু মানুষের সম্মান ও ভালবাসা পেয়েছেন তিনি। তাতে তিনি ধন্য হয়েছেন বলেও দাবি করেন গিলন। কিছু দিন আগে গোয়ায় আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের মঞ্চে এই বিতর্কের সূত্রপাত। ইজ়রায়েলি পরিচালক লাপিড নাদাভ ওই চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত বিবেক অগ্নিহোত্রী পরিচালিত ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস্’ ছবিটিকে ‘অশ্লীল’, ‘প্রচারধর্মী’ বলে মন্তব্য করে বসেন। যা বেকায়দায় ফেলে দেয় দেশের শাসকদলকে। কারণ উপত্যকা থেকে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের বিতাড়নের ঘটনাকে অবলম্বন করে নির্মিত এই ছবির প্রশংসা করতে শোনা গিয়েছিল খোদ প্রধানমন্ত্রীকে। এই ছবির সমালোচনার খবর আগুনের মতো ছড়িয়ে পড়ে। সমাজমাধ্যমে ওই পরিচালকের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
I’m touched by your support. The mentioned DM is in no way reflective of the friendship we enjoy in , including on social media. Just wanted this to be a reminder that anti-Semitism sentiments exist, we need to oppose it jointly and maintain a civilized level of discussion🙏. https://t.co/y06JJNbKDN
— Naor Gilon (@NaorGilon) December 3, 2022
বিতর্কটিকে লঘু করতে পরিচালকের বক্তব্য নিয়ে ভারতের কাছে ক্ষমা চান ইজ়রায়েলি রাষ্ট্রদূত গিলন। শুধু তা-ই নয়, নিজের দেশের পরিচালককে তীব্র ভর্ৎসনা করেন তিনি। গিলন একটি খোলা চিঠি লেখেন। তিনি লাপিদ নাদাভের উদ্দেশে লেখেন, ‘‘আপনার লজ্জা হওয়া উচিত। ইজ়রায়েল নিয়ে আপনার যা নেতিবাচক মনোভাব রয়েছে মন খুলে বলুন। কিন্তু অন্য দেশকে নিয়ে এ রকম নেতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করবেন না।’’ ভারত ও ইজ়রায়েলের সম্পর্কের উপর যাতে পরিচালকের মন্তব্যের কোনও বিরূপ প্রভাব না পড়ে, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করার চেষ্টা করে যান গিলন।
বিতর্কের মুখে ক্ষমা চেয়ে নেন লাপিডও। তাঁর বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। যাঁদের খারাপ লেগেছে, তাঁদের কাছে পরিচালক ক্ষমা চেয়ে নেন। তবে একই সঙ্গে তিনি দাবি করেন, বিবেক অগ্নিহোত্রী পরিচালিত ‘দ্য কাশ্মীর ফাইল্স’ ছবিটি ‘অশালীন’, ‘হিংসাত্মক’ এবং ‘প্রচারমূলক’।
প্রসঙ্গত, কাশ্মীর ফাইলস সিনেমাটি মুক্তি পাওয়ার পরই সিনেমাটি নিয়ে বিতর্কের ঝড় ওঠে। দেশের শাসক দলের একাংশ সিনেমাটিতে ‘প্রকৃত ইতিহাস’ তুলে ধরা হয়েছে বলে দাবি করলেও, সমালোচকদের অনেকেই জানান যে, ইতিহাসের আড়ালে নির্দিষ্ট একটি সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়িয়ে দিতেই সিনেমাটি বানানো হয়েছে। অপর দিকে জার্মানির একনায়ক হিটলার তাঁর ইহুদি-বিদ্বেষের জন্য ইতিহাসে কুখ্যাত হয়ে আছেন। অভিযোগ, তাঁর আমলে বহু ইহুদিকে বিনা কারণে হত্যা করা হয়। ইজ়রায়েলে মূলত ইহুদি সম্প্রদায়ের মানুষ বাস করেন। তাই হিটলারকে ‘মহান’ বলে ইতিহাসের সেই ক্ষতকে উস্কে দিতে চেয়েই মেসেজটি করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy