ইতিহাসবিদ রোমিলা থাপার। ফাইল চিত্র।
ন্যাশনাল কাউন্সিল অব এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং (এনসিইআরটি)-এর পাঠ্যপুস্তকে কাটছাঁট নিয়ে এ বার গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করলেন দেশের একদল ইতিহাসবিদ। অতিমারিতে পড়াশোনার ক্ষতি এবং পড়ুয়াদের উপরে চাপের কথা মাথায় রেখে পাঠ্যক্রমে কিছু কাটছাঁট করা হয়েছে বলে এনসিইআরটি-র তরফে যে দাবি করা হয়েছে, বিবৃতি জারি করে তা খারিজ করেছেন তাঁরা। পাশাপাশি, তাঁদের বক্তব্য, পাঠ্যপুস্তক থেকে কিছু ঐতিহাসিক তথ্য মুছে দিয়ে ‘ছদ্ম ইতিহাস’ রচনার পরিসর তৈরি করা হচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, হোয়াটসঅ্যাপ-সহ বিভিন্ন সমাজমাধ্যমে ‘ইতিহাস’ তৈরির প্রবণতা নিয়েও সরব হয়েছেন রোমিলা থাপার, ইরফান হাবিবের মতো ইতিহাসবিদেরা।
পাঠ্যবই ঘিরে সাম্প্রতিক বিতর্কের শুরু এনসিইআরটি-র দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাস বই নিয়ে। ওই বই থেকে মোগল যুগের ইতিহাস বাদ পড়েছে বলে হইচই শুরু হয়। এ ছাড়াও, সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বই থেকে বাদ গিয়েছে গান্ধীহত্যা সম্পর্কিত বেশ কিছু তথ্য। একাদশ শ্রেণির সমাজবিদ্যার বই থেকে বাদ পড়েছে গুজরাত হিংসার উল্লেখ। ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির সমাজবিজ্ঞানের কোনও বইতেই এখন আর ওই ঘটনার উল্লেখ নেই। এনসিইআরটি-র বক্তব্য, রাতারাতি কিছু বদল হয়নি। অতিমারিকালে পড়ুয়াদের উপর পড়াশোনার চাপের বিষয়টি নজরে রেখে গত বছরই পাঠ্যক্রমে কিছু বাদ পড়েছে। তার প্রেক্ষিতে ইতিহাসবিদদের প্রশ্ন, এখন তো আর দেশে কোভিড পরিস্থিতি নেই। এখন তো স্কুলে পড়াশোনাও স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে গিয়েছে। অনলাইনেও এখন পড়াশোনা হয় না। তা হলে এখনও কেন পাঠ্যক্রম কাটছাঁট করা হচ্ছে?
রোমিলা, ইরফান ছাড়াও বিবৃতিতে স্বাক্ষর রয়েছে ইতিহাসবিদ জয়তী ঘোষ, মৃদুলা মুখোপাধ্যায়, অপূর্বানন্দ, উপিন্দর সিংহদের। ঘটনাচক্রে, এঁদের অধিকাংশই কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের ‘সমালোচক’ বলে পরিচিত জাতীয় স্তরে। বিবৃতিতে তাঁদের মত, পাঠ্যপুস্তকের মাধ্যমেই ছাত্রছাত্রীদের ইতিহাস সচেতন করা তোলা উচিত। সেই পথ থেকে সরে এসে যদি এ ভাবে পাঠ্যক্রম কাটছাঁট করা হতে থাকে, তাতে ‘ছদ্ম ইতিহাস’-এর জমি তৈরি হতে থাকে। বিবৃতিতে লেখা হয়েছে, ‘‘এখন তো হোয়াটসঅ্যাপ এবং অন্য সমাজমাধ্যমগুলির মাধ্যমে অন্য ইতিহাস ছড়িয়ে দেওয়ার প্রয়াস দেখা যাচ্ছে।’’
মোগল অধ্যায়, গান্ধীহত্যার খুঁটিনাটি এবং গুজরাত প্রসঙ্গ বাদ পড়া নিয়ে সরব হয়েছে বিভিন্ন মহলই। বাম নেতৃত্ব, শিবসেনা, ডিএমকে-র মতো দল গোড়া থেকেই প্রতিবাদ জানিয়েছে। রাজ্যসভার সাংসদ কপিল সিব্বল টুইটে কটাক্ষ করে লিখেছেন, “আধুনিক ভারতের ইতিহাস ২০১৪ থেকে শুরু করলেই হয়!” এ প্রসঙ্গে এনসিইআরটি-র দাবি, গোটা বিষয়টাকে নিয়ে “তিলকে তাল” করা হচ্ছে। ডিরেক্টর দীনেশ সাকলানি জানান, এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। বিশেষজ্ঞ কমিটি নিরপেক্ষ ভাবেই পুনরাবৃত্তি আর অপ্রাসঙ্গিকতার মানদণ্ডে বিচার করে যা বাদ দেওয়ার, বাদ দিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy