Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪

ইরফান হাবিবের নামে গুন্ডামির অভিযোগ রাজ্যপালের!

গেরুয়া শিবিরের অনেকে হাবিবকে ‘গুন্ডা’ আখ্যা দিয়ে তাঁকে গ্রেফতার করার দাবি তুলেছেন। 

হাবিবকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ছবিটি টুইট করেছেন কেরলের রাজ্যপাল।

হাবিবকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ছবিটি টুইট করেছেন কেরলের রাজ্যপাল।

কুন্তক চট্টোপাধ্যায়
কান্নুর শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:২৯
Share: Save:

নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ছায়া ফেলল ভারতীয় ইতিহাস কংগ্রেসের মঞ্চেও।

কান্নুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ ইতিহাস কংগ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ভাষণে কেরলের রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান নাগরিকত্ব আইনের সপক্ষে বলতে শুরু করলে মঞ্চাসীন ইতিহাসবিদ ইরফান হাবিব এবং দর্শকাসন থেকে অনেকে তার প্রতিবাদ করেন। পরে রাজ্যপালের টুইটার হ্যান্ডল থেকে অভিযোগ করা হয়, হাবিব শুধু রাজ্যপালের বক্তৃতায় বাধাই দেননি, তাঁর এডিসি ও নিরাপত্তা আধিকারিককে ধাক্কা মেরেছেন! অশীতিপর ইতিহাসবিদ কী করে এডিসি-কে ধাক্কা মারবেন— রাজ্যপালের অভিযোগ শুনে বিস্মিত শিক্ষাজগৎ। বরং ঘটনার সময় মঞ্চের কাছে থাকা সংগঠনের লোকজন এবং শিক্ষকদের বক্তব্য, রাজ্যপালের নিরাপত্তারক্ষীরাই হাবিবকে ঠেলে সরিয়ে দিয়েছেন। রাজ্যপালের টুইটার থেকে যে সব ছবি টুইট করা হয়েছে, তাতেও স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, কখনও হাবিবকে সরিয়ে দিচ্ছেন, কখনও বা তাঁর হাত ধরে রেখেছেন রাজ্যপালের এডিসি। গেরুয়া শিবিরের অনেকে এখন হাবিবকে ‘গুন্ডা’ আখ্যা দিয়ে তাঁকে গ্রেফতার করার দাবি তুলেছেন।

এ দিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি-বক্তা ছিলেন কেরলের রাজ্যপাল। তিনি বক্তৃতায় নাগরিকত্ব আইন, নাগরিকপঞ্জি এবং কাশ্মীর প্রসঙ্গ উত্থাপন করতেই অধিবেশনের এক দল প্রতিনিধি নাগরিকত্ব আইন এবং নাগরিক পঞ্জির বিরোধী পোস্টার তুলে ধরে বিক্ষোভ দেখান। মঞ্চে উপস্থিত হাবিবকেও উঠে দাঁড়িয়ে কিছু বলার চেষ্টা করতে দেখা যায়। তার পরেই কেরলের পুলিশকর্মীরা রীতিমতো ঝাঁপিয়ে পড়ে টানতে টানতে সরিয়ে দেন বিক্ষোভকারীদের। কার্যত ধাক্কা মারতে মারকে পাঁচ জনকে তুলে নিয়ে গিয়ে আটকও করা হয়। পরে মঞ্চ থেকেই ইতিহাস কংগ্রেসের সম্পাদিকা অধ্যাপিকা মহালক্ষ্মী রামকৃষ্ণন অবিলম্বে বিক্ষোভকারীদের মুক্তি দাবি করেন। তার পরেই খবর আসে, ওই ৫ জনকে মুক্তি দিয়েছে পুলিশ।

আরও পড়ুন: ১৪ দিন-১৪ রাত পার করেও মহিলাদের ধর্না, সড়কেই সংসার

বামশাসিত কেরলেও পুলিশের এই আচরণের ‘অতিসক্রিয়তা’ নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। পরে রাজ্যপালের তরফে দাবি করা হয়, ‘‘রাজ্যপাল মৌলানা আবুল কালাম আজাদের বক্তব্য উদ্ধৃত করার সময়ে মঞ্চে উপস্থিত ইরফান হাবিব তাঁকে বাধা দেন। হাবিব বলেন, রাজ্যপালের উচিত নাথুরাম গডসের বক্তব্য উদ্ধৃত করা। রাজ্যপালের এডিসি ও নিরাপত্তা আধিকারিক হাবিবকে বাধা দিলে তিনি তাঁদের ধাক্কা মারেন।’’ রাজ্যপালের দফতরের তরফে এও বলা হয়, ‘‘আগের বক্তারা এমন কিছু কথা বলেছিলেন যার জবাবে সংবিধানের রক্ষক হিসেবে কিছু কথা বলতে চেয়েছিলেন রাজ্যপাল। তাঁর কথায় মঞ্চ ও দর্শকের আসন থেকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা অগণতান্ত্রিক মনোভাবের পরিচায়ক।’’ প্রত্যক্ষদর্শীদের কিন্তু বক্তব্য, রাজ্যপাল বক্তৃতায় দাবি করছিলেন, নাগরিকত্ব আইন গাঁধী এবং নেহরুর প্রতিশ্রুতি পূরণ করছে! তখনই হাবিব উঠে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করে বলেন, গাঁধী-নেহরুর বদলে গডসের নাম করা উচিত!

পুরনো কংগ্রেসি আরিফ মহম্মদ খানের বিরুদ্ধে সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ ইদানীং বারবারই উঠছে। তিনি একাধিক বার নয়া নাগরিকত্ব আইন ও নাগরিক পঞ্জির পক্ষে সওয়াল করেছেন। আজ অবশ্য বিক্ষোভের মুখে পড়ে তড়িঘড়ি বক্তব্য শেষ করেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, তাঁকে বলতে বাধা দেওয়া হয়েছে, সেটা অসহিষ্ণুতার পরিচয়।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy