(বাঁ দিকে) হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুখু এবং বিক্রমাদিত্য সিংহ। —ফাইল চিত্র।
হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুখুর বিরুদ্ধে তোপ দেগে বুধবার সকালে রাজ্যের মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন তিনি। সন্ধ্যায় সেই ইস্তফা প্রত্যাহার করে বিক্রমাদিত্য সিংহ বললেন, ‘‘আমার দল কংগ্রেসের পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে বৃহত্তর স্বার্থে এবং দলের ঐক্য বজায় রাখার লক্ষ্যে এই সিদ্ধান্ত নিলাম।’’
মঙ্গলবার রাজ্যসভার ভোটে কংগ্রেসের আইনজীবী-নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভিকে হারিয়ে বিজেপি প্রার্থী হর্ষ মহাজন নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই সুখু সরকারের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। এর পর বিক্রমাদিত্যের ইস্তফার পরে সরকার পতনের জল্পনা আরও জোরালো হয়। পরিস্থিতি সামলাতে তড়িঘড়ি রাজধানী শিমলায় পৌঁছন কংগ্রেস হাইকমান্ডের ‘দূত’, কর্নাটকের উপমুখ্যমন্ত্রী ডিকে শিবকুমার, হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র সিংহ হুডা এবং ছত্তীসগড়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বঘেল।তাঁদের সঙ্গে শিমলায় বৈঠকের পরেই ‘বৃহত্তর স্বার্থে’ ইস্তফা প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করেন বিক্রমাদিত্য।
বিক্রমাদিত্যের মা প্রতিভা হিমাচল প্রদেশ কংগ্রেস সভানেত্রী। প্রতিভার স্বামী প্রয়াত বীরভদ্র ছিলেন হিমাচলের ছ’বারের কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার ভোটপর্ব শুরুর আগেই প্রতিভা সরাসরি কংগ্রেস বিধায়কদলে ভাঙনের কথা জানিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী সুখুর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘বর্তমান সরকারের কার্যকলাপে কংগ্রেস বিধায়কদের একাংশের ক্ষোভ রয়েছে। রাজ্যসভা ভোটে তার প্রভাব পড়তে পারে।’’ রাত গড়াতেই স্পষ্ট হয়েছিল তাঁর অনুমান নির্ভুল।
কংগ্রেসের ছ’জন এবং ‘সরকার সমর্থক’ তিন নির্দল বিধায়কের ‘ক্রস ভোটিং’-এর জেরেই রাজ্যসভা ভোটে হেরে যান সিঙ্ঘভি। ৬৮ সদস্যের বিধানসভায় দু’পক্ষই ৩৪টি করে ভোট পাওয়ায় লটারির মাধ্যমে জয়-পরাজয় নির্ধারিত হয়। হিমাচলে রাজ্যসভার একটি আসনে সরাসরি লড়াই ছিল শাসক কংগ্রেস এবং বিরোধীদল বিজেপির। ফলে ক্রস ভোটিংয়ের কারণে কংগ্রেস প্রার্থী হেরে যাওয়ায় সরাসরি প্রশ্ন উঠেছে সুখুর সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে।
লোকসভা ভোটের আগেই সে রাজ্যের কংগ্রেস সরকারের পতন ঘটবে বলে মঙ্গলবার দাবি তুলেছে বিজেপি। বুধবার বিধানসভায় বিজেপি বিধায়কেরা স্লোগান তোলেন ‘জয় শ্রীরাম, বন গয়া কাম’। বাজেট পাশ করানোর আগেই বিজেপি বিধায়কদের প্রবল বিরোধিতার মুখে পড়তে হয় সরকারকে। শেষ পর্যন্ত বিরোধী দলনেতা জয়রাম ঠাকুর-সহ ১৫ জন বিজেপি বিধায়ককে বহিষ্কার করে পাশ করানো হয় বাজেট। হিমাচলের কংগ্রেসের সরকার ফেলতে মরিয়া বিজেপি ইতিমধ্যেই আস্থাভোটের দাবি জানিয়ে রাজ্যপাল শিবপ্রতাপ শুক্লের দ্বারস্থ হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে বিক্রমাদিত্যের ইস্তফা প্রত্যাহারের ঘোষণা কংগ্রেসকে কিছুটা স্বস্তি দেবে বলে মনে করা হচ্ছে। ঘটনাচক্রে, কংগ্রেসের যে বিধায়কদের ‘ক্রস ভোটিং’-এর জেরে সুখু সরকারের স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, তাঁদের অনেকেই প্রতিভা-বিক্রমাদিত্যের ‘ঘনিষ্ঠ’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy