শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাবের অধিকার ঘিরে বিতর্ক গড়িয়েছে আদালতে। ফাইল চিত্র।
পোশাকের অধিকারের মধ্যে কি পোশাক খোলার অধিকারও পড়ে? বুধবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব পরার সংক্রান্ত মামলার শুনানি পর্বে এই মন্তব্য করল সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি হেমন্ত গুপ্ত আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবী দেবদত্ত কামতের একটি মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বলেন, ‘‘আপনি বিতর্ককে অযৌক্তিক পরিণতিতে নিয়ে যেতে পারেন না। পোশাকের অধিকারের মধ্যে কি পোশাক খোলার অধিকারও অন্তর্ভুক্ত হবে?’’ বিচারপতির মন্তব্যের জবাবে দেবদত্ত বলেন, ‘‘স্কুলে কেউ পোশাক খুলছে না।’’
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মুসলিম ছাত্রীদের হিজাব পরার অধিকারের পক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে বিচারপতি হেমন্ত গুপ্ত এবং বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়ার বেঞ্চে আইনজীবী দেবদত্ত বুধবার বলেন, ‘‘অনেক শিক্ষার্থী ধর্মীয় প্রতীক হিসাবে রুদ্রাক্ষ বা ক্রস পরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসেন।’’ বিচারপতি তখন বলেন, ‘‘ওই ধর্মীয় প্রতীকগুলি পোশাকের ভিতরে পরা হয়। কেউ জামা তুলে দেখবে না যে রুদ্রাক্ষ পরেছে কি না।’’ পাশাপাশি দুই বিচারপতির বেঞ্চ জানায়, হিজাব পরার অধিকার নিয়ে কোনও বিতর্ক নেই। বিতর্ক শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ‘পোশাকবিধি’ (ড্রেস কোড) অমান্য হচ্ছে কি না, তা নিয়ে।’’
গত ফেব্রুয়ারি মাসে কর্নাটকের উদুপির একটি কলেজে হিজাব পরিহিত পড়ুয়াদের ক্লাস করতে না দেওয়ার অভিযোগ ঘিরে তোলপাড় হয়েছিল জাতীয় রাজনীতি। কর্নাটকের সীমানা পেরিয়ে হিজাব বিতর্ক ঢুকে পড়েছিল মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ এবং পুদুচেরিতেও। হিজাব নিষেধাজ্ঞার পক্ষে-বিপক্ষে একাধিক মামলা দায়ের হয় আদালতে। তার প্রেক্ষিতে কর্নাটক হাই কোর্ট পর্যবেক্ষণে জানায়, ইসলামের ধর্মীয় রীতি মেনে হিজাব পরা মুসলিম মহিলাদের জন্য অপরিহার্য নয় এবং তা ধর্মীয় অনুশীলনের স্বাধীনতা সংক্রান্ত মৌলিক অধিকারের মধ্যেও পড়ে না।
সেই সঙ্গে আদালত জানায়, ‘‘স্কুলের পোশাক একটি বিধি একটি সংবিধানসম্মত এবং গ্রহণযোগ্য বিষয়। এটা নিয়ে পড়ুয়াদের কোনও আপত্তি থাকতে পারে না।’’ মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ‘ধর্মীয় পোশাক’ পরা চলবে না বলেও ‘অন্তর্বর্তী নির্দেশে’ জানিয়েছিল কর্নাটক হাই কোর্ট।
কর্নাটক হাই কোর্টের সেই পর্যবেক্ষণ এবং নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন কয়েক জন মুসলিম ছাত্রী। মামলাকারীরা প্রশ্ন তোলেন, অন্যের ক্ষতি না করে কোনও পড়ুয়া হিজাব পরলে রাষ্ট্র হস্তক্ষেপ করতে পারে কি না। সেই পড়ুয়া হিজাব পরাকে যদি তাঁর ধর্মীয় অনুশীলনের অংশ বলে মনে করেন, তাতেই বা সমস্যা কোথায়?
প্রতিষ্ঠানের বেঁধে দেওয়া পোশাকবিধির কারণে এক জন নারীর মর্যাদা এবং শিক্ষার অধিকার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে কি না, সেই প্রশ্নও তোলেন মামলাকারী পড়ুয়ারা। গত ১৩ জুলাই শীর্ষ আদালত হিজাব পরিধান সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায়ের বিরোধিতায় দায়ের হওয়া আবেদন শুনতে সম্মত হয়। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এনভি রমণার (বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত) নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে শুনানি শুরু হয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy