জলমগ্ন দিল্লির রাস্তা। যাতায়াতের মাধ্যম এখন নৌকা। ছবি: সংগৃহীত।
যমুনার জল ঢুকে ভাসছে দিল্লি। সুপ্রিম কোর্ট, রাজঘাট থেকে লালকেল্লা, জলের নীচে। তার মধ্যে শনিবার সন্ধ্যায় ফের নতুন করে বৃষ্টি রাজধানীতে। উদ্বেগে প্রশাসন।
গত কয়েক দিন টানা বৃষ্টির জেরে যমুনার জলস্তর রেকর্ড হারে বৃদ্ধি পেয়েছিল। সপ্তাহের শুরুতে তা ছিল ২০৮.৬৬ মিটার। তবে শনিবার সেই জলস্তর নামতে থাকে। মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল শনিবার বেলার দিকে আশ্বাস দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘যমুনার জলস্তর নামছে। আর বৃষ্টি না হলে পরিস্থিতি শীঘ্রই স্বাভাবিক হবে। তবে বৃষ্টি হলে তা স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে।’’ তিনি জানান, যমুনার বাঁধের পাঁচটি লকগেট খোলার চেষ্টা চলছে। তার মধ্যে কয়েকটি পলি পড়ে বন্ধ হয়ে রয়েছে। কিন্তু সন্ধ্যার বৃষ্টির কারণে জনজীবন আরও এক বার বিপর্যস্ত হল। তীব্র যানজট রাজধানীর রাস্তায়। তা নিয়ন্ত্রণ করতে মোতায়েন করা হয়েছে ৪,৫০০ ট্রাফিক পুলিশ কর্মী।
দিল্লির বেশ কিছু এলাকায় জলস্তর নামলেও ইন্দ্রপ্রস্থ এবং আইটিও চত্বরে এখনও জল। অ্যাপোলো, জসোলা মেট্রো স্টেশনেও জল দাঁড়িয়েছে। শুক্রবার দিল্লির সব থেকে বড় শ্মশান নিগম বোধ ঘাট বন্ধ রাখা হয়েছে। এই বন্যা পরিস্থিতির জন্য হরিয়ানা এবং কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের দিকে আঙুল তুলেছে দিল্লির আপ সরকার। জানিয়েছে, হরিয়ানার বাঁধগুলি থেকে দিল্লির দিকে জল ছাড়া হচ্ছে। সে কারণে প্লাবিত দিল্লি। হরিয়ানার মন্ত্রী অনিল ভিজ পাল্টা বলেন, ‘‘পঞ্জাব, হিমাচল প্রদেশ থেকেও আমাদের রাজ্যে জল ঢোকে। আমরা কাউকে দোষ দিইনি। আমরা ব্যবস্থাপনার চেষ্টা করছি।’’
গত কয়েক দিনে দিল্লি এবং নয়ডা থেকে গরু, কুকুর, ছাগল, খরগোশ-সহ ৯০০টি পশু উদ্ধার করেছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ)। তার মধ্যে রয়েছে এক কোটি টাকার একটি ষাঁড়। শুক্রবার দিল্লির জলমগ্ন রাস্তায় খেলতে নেমে ডুবে গিয়েছিল তিনটি বাচ্চা। শনিবার তাদের দেহ মিলল। জাহাঙ্গিরপুরির এইচ ব্লক এলাকার বাসিন্দা ছিল তারা। নাগরিকদের জলমগ্ন রাস্তা এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে পুলিশ। শনিবার দিল্লির পরিবেশ মন্ত্রী গোপাল রায় জানান, আপের সদর দফতরে ‘বন্যা ত্রাণ রান্নাঘর’ খোলা হয়েছে। সেখান থেকে খাবার পরিবেশন করা হবে দুর্গতদের। দিল্লি প্রশাসনের দেওয়া তথ্য বলছে, ইতিমধ্যে ২৫,৪৭৮ জনকে বন্যাবিধ্বস্ত এলাকা থেকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দিল্লি সরকার জানাচ্ছে, ২২ হাজার ৮০৩ জনকে ত্রাণ এবং আশ্রয় শিবিরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এখন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ১৬টি দল বন্যা-বিধ্বস্ত এলাকাগুলিতে উদ্ধারকাজ করছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy