Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
HD Kumaraswamy

নাৎসিদের মতো রাম মন্দিরে চাঁদা না দেওয়া পরিবার চিহ্নিত করছে আরএসএস: কুমারস্বামী

আরএসএস এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। সেই সঙ্গে জানিয়েও দিয়েছে, কুমারস্বামীর এই ধরনের মন্তব্য উত্তর দেওয়ার যোগ্য নয়।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
বেঙ্গালুরু শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৩:৫৪
Share: Save:

কোন পরিবার রাম মন্দিরের জন্য চাঁদা দিয়েছে, আর কারা দেয়নি, সেই সব বাড়িগুলোকে হিটলারের নাৎসি বাহিনীর মতো চিহ্নিত করছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস)। এমনই অভিযোগ তুলেছেন খোদ কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী। যদিও আরএসএস এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। সেই সঙ্গে জানিয়েও দিয়েছে, কুমারস্বামীর এই ধরনের মন্তব্য উত্তর দেওয়ার যোগ্য নয়।

শিবমোগায় এক অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন কুমারস্বামী। আরএসএস-কে আক্রমণ করে তাঁর মন্তব্য, “যাঁরা রাম মন্দিরের জন্য টাকা দিচ্ছেন না রাম মন্দির নিধি সমর্পণ অভিযান-এর স্বেচ্ছাসেবকরা সেই সব বাড়িগুলোকে চিহ্নিত করে নাম লিখে রাখছে। এ ব্যাপারে কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলতে না চাইলেও আমার সূত্র মারফৎ খবর পাচ্ছি যে, আরএসএস-এর লোকেরা এ সব করে বেড়াচ্ছেন।” এর পরই তিনি প্রশ্ন তোলেন, “আমরা কি নাৎসি জামানায় এসে পড়েছি? আরএসএস যা করছে নাৎসিরাও একই কাজ করেছে।” পরে একই বক্তব্য লিখে টুইটও করেন তিনি।

কুমারস্বামীর অভিযোগ, ‘‘মানুষের মৌলিক অধিকার হরণ করার একটা প্রয়াস চলছে। মানুষ ঠিক করে তাঁদের মতামতকে প্রকাশ করতে ভয় পাচ্ছে। এর নামই কি উন্নয়ন? কোথায় যাচ্ছে দেশ?’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘এমন একটা পরিবেশ তৈরি হচ্ছে, যেখানে মানুষ তাঁদের অনুভূতিগুলোকে ভাগ করতে ভয় পাচ্ছেন। আগামী দিনে সংবাদমাধ্যমগুলো যদি সরকারের মতকেই সমর্থন করতে শুরু করে তা হলে কী পরিস্থিতি তৈরি হবে? আমজনতার ভাগ্যই বা কোন পথে যাবে?’’

এর আগে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ‘চিহ্নিতকরণ’-এর অভিযোগ উঠেছে বিজেপি-র বিরুদ্ধেও। যোগীরাজ্য উত্তরপ্রদেশে নাগরিকত্ব আইনের প্রক্রিয়া চালু হওয়ার পর রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ মহল জেলাশাসকদের নির্দেশ দেয়, পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান থেকে আসা শরণার্থীদের চিহ্নিত করতে। তখনও বিরোধীরা এর সঙ্গে নাৎসিদের চিহ্নিতকরণের দৃষ্টান্ত টেনেছিল। এর পর সংসদে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জি-র বিরোধিতা করেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্র। নাগরিকত্ব বিতর্ক প্রসঙ্গে নাৎসি কনসেন্ট্রেশন শিবিরের উদাহরণও টেনে আনেন তিনি। বলে ছিলেন, ‘‘সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জি-র মাধ্যমে প্রথমে চিহ্নিতকরণ করা হবে। তার পর তাদের অধিকার কেড়ে নিয়ে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হবে।’’

জার্মানির ইতিহাস বলছে, ১৯৩৫ সালের সেপ্টেম্বরে নুরেমবার্গ আইনের মাধ্যমে ইহুদিদের নাগরিকত্ব বাতিল করা শুরু হয়। তবে এই প্রক্রিয়া শুরু হয় নাৎসিরা ক্ষমতায় আসার পরপরই। ১৯৩৩ সালে এক আইনের মাধ্যমে ইহুদি-সহ বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর নাগরিকত্ব বাতিল করে হিটলারের নাৎসি সরকার। ওই সময় প্রায় ৮ হাজার ইহুদির নাগরিকত্ব বাতিল হয়। ১৯৩৫ সালের দ্বিতীয় আইনটি ছিল জার্মান রক্ত সংরক্ষণের জন্য।

এই আইনে ইহুদি-সহ অন্য গোষ্ঠীর সঙ্গে জার্মানদের বিয়ে নিষিদ্ধ করা হয়। এরপর ১৯৪১ সালে ‘ডিক্রি’ জারির মাধ্যমে ইহুদিদের তাড়ানোর বড়সড় উদ্যোগ নেওয়া হয়। এই সময়ই ইহুদিদের চিহ্নিতকরণ করা হত। মোটামুটিভাবে ১৯৩৯ থেকে ১৯৪৫ এর মধ্যে খুব সুনির্দিষ্ট এবং সুচারু ভাবে এই চিহ্নিতকরণের কাজ করা হয়। এর পরই তাঁদের বন্দি শিবির ও শ্রম শিবিরে রেখে অত্যাচার করে হত্যা করা হয়। ইতিহাসে যা ‘হলোকাস্ট’ নামে পরিচিত। কুমারস্বামী এই ইতিহাস স্মরণ করিয়ে দিয়ে আরএসএস-এর সঙ্গে নাৎসিদের তুলনা টানলেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Nazi RSS Ram Temple HD Kumaraswamy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy