Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Hathras Gangrape

হাথরস-কাণ্ডে ১১ দিন পর নেওয়া স্যাম্পলে ‘ধর্ষণ চিহ্ন’ মিলল না

ওই ফরেন্সিক রিপোর্টটি আদৌ নির্ভরযোগ্য নয় বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের।

নির্যাতিতার জন্য় ন্যায় বিচারের দাবিতে আন্দোলন চলছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।

নির্যাতিতার জন্য় ন্যায় বিচারের দাবিতে আন্দোলন চলছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।

সংবাদ সংস্থা
লখনউ শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২০ ১২:২৫
Share: Save:

হাথরস-কাণ্ডে নির্যাতিতাকে ধর্ষণ করা হয়নি বলে শুরু থেকেই দাবি করে আসছিল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। এ বার তাদের সেই দাবিতেই সিলমোহর দিল একটি ফরেন্সিক রিপোর্ট। তাতে বলা হয়েছে, নির্যাতিতাকে ধর্ষণ করা হয়েছে বা অভিযুক্তরা তাঁর সঙ্গে যৌন সঙ্গমে লিপ্ত হয়েছেন, এমন কোনও ইঙ্গিত মেলেনি। কিন্তু যে দিন নির্যাতিতার সঙ্গে ওই ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ, তার ১১ দিন পর তাঁর নমুনা ফরেন্সিক বিভাগের হাতে পৌঁছয়। তত দিনে সমস্ত প্রমাণ নষ্ট হয়ে যাওয়ার কথা। তাই ওই ফরেন্সিক রিপোর্টটি আদৌ নির্ভরযোগ্য নয় বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের।

গত ১৪ সেপ্টেম্বর বুলা গড়হী গ্রামেরই চার উচ্চবর্ণের যুবক নির্যাতিতাকে গণধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। নগ্ন ও ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় তাঁর দেহটি উদ্ধার করা হয়। প্রথমে আলিগড় মুসলিম ইউনিভার্সিটির জওহরলাল নেহরু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় নির্যাতিতাকে। সেখানে ২২ সেপ্টেম্বর নিজের বয়ান রেকর্ড করেন তিনি। ওই দিনই তাঁর নমুনা সংগ্রহ করা হয়। কিন্তু আগরার ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি (এফএসএল)-তে ওই নমুনা পৌঁছয় ২৫ সেপ্টেম্বর। কিন্তু মাঝে ১১ দিন কেটে গিয়েছে। কিন্তু শুক্রাণু যেহেতু ২-৩ দিনই বেঁচে থাকে, তাই এ ক্ষেত্রে ফরেন্সিক রিপোর্টে বীর্যের অস্বিত্ব মেলার সম্ভবনাই নেই বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

তবে ফরেন্সিক রিপোর্টে ধর্ষণের কোনও ইঙ্গিত মেলেনি বলে উল্লেখ করা হলেও, আলিগড়ের যে হাসপাতালে নির্যাতিতাকে প্রথমে ভর্তি করা হয়েছিল, তাদের রিপোর্টে মেয়েটির শরীরে লিঙ্গপ্রবেশের কথা বলা হয়েছিল। মেয়েটির গলায় ওড়নার ফাঁস লাগানো হয়েছিল এবং হাত-পা অবশ হয়ে যাওয়ার কথাও উল্লেখ ছিল ওই রিপোর্টে। হাসপাতালের চিফ মেডিক্যাল অফিসার আজিম মালিকের কথায়, ‘‘ধর্ষণের ১১ দিন পর নির্যাতিতার নমুনা সংগ্রহ করা হয়। অথচ সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী, ধর্ষণের ৯৬ ঘণ্টার মধ্যে ফরেন্সিক নমুনা সংগ্রহ করাই নিয়ম। তাই এই রিপোর্টে ধর্ষণের প্রমাণ না মেলাটাই স্বাভাবিক।’’

আরও পড়ুন: ঝরঝরে বাংলায় তনুশ্রী বললেন, কাউকেই ভয় পাই না। কাজ থামবে না​

ভিসেরা পরীক্ষায় ধর্ষণের ইঙ্গিত মেলেনি বলে এর আগে দাবি করেছিল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। নির্যাতিতার মৃত্যুর পর, পেট্রল ঢেলে রাতারাতি তাঁর দেহ পুড়িয়ে দেওয়া নিয়ে পরিস্থিতি যখন উত্তাল, সেইসময় গত ১ অক্টোবর সাংবাদিক বৈঠক করে পুলিশ আধিকারিক প্রশান্ত কুমার বলেন, ‘‘ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ঘাড়ে আঘাত পেয়েই মৃত্যু হয়েছে নির্যাতিতার। এফএসএল-এর রিপোর্টেও বীর্যের উপস্থিতির কোনও উল্লেখ নেই। বোঝাই যাচ্ছে, জাতপাত নিয়ে অশান্তি বাধানোর লক্ষ্যে ইচ্ছাকৃত ভাবে তথ্য বিকৃত করা হয়েছে। যে বা যারা এর জন্য দায়ী, খুব শীঘ্র তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হবে।’’

আরও পড়ুন: হাথরস স্টেশনে বসে বিবেকানন্দ, এগিয়ে এলেন স্টেশন মাস্টার...​

কিন্তু প্রথমে অভিযোগ নিতে না চাওয়া, দেরি করে নমুনা সংগ্রহ করা, তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই ধর্ষণের অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা এবং রাতারাতি মেয়েটির দেহ পুড়িয়ে দেওয়া, একের পর এক পদক্ষেপের জন্য শুরু থেকেই প্রশ্নের মুখে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের ভূমিকা। উত্তরপ্রদেশ পুলিশ রাজ্য সরকারের অধীনেই কাজ করে। অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য প্রশাসনের তরফে তাঁদের হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেছেন নির্যাতিতার পরিবার। তা নিয়ে ঘরে-বাইরে চাপের মুখে পড়ে গত সপ্তাহে যদিও সিবিআই তদন্তের সুপারিশ করেন যোগী আদিত্যনাথ, কিন্তু কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার উপরও তাঁদের আস্থা নেই বলে জানিয়েছেন নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যরা। সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy