Advertisement
২৪ ডিসেম্বর ২০২৪
নির্ভয়ার ছায়া

রোহতকে মৃত্যুদণ্ড সাত ধর্ষককে

গণধর্ষণের পরে খুন করা হয়েছিল তাঁকে। মৃত্যুর আগে সহ্য করতে হয়েছিল নৃশংস অত্যাচার। ধর্ষকেরা তাঁর শরীরের মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়েছিল লাঠি, পাথর, ব্লেড, ব্যবহার করা কন্ডোম...। না, নির্ভয়া-কাণ্ড নয়।

সংবাদ সংস্থা
রোহতক শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৪:০৭
Share: Save:

গণধর্ষণের পরে খুন করা হয়েছিল তাঁকে। মৃত্যুর আগে সহ্য করতে হয়েছিল নৃশংস অত্যাচার। ধর্ষকেরা তাঁর শরীরের মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়েছিল লাঠি, পাথর, ব্লেড, ব্যবহার করা কন্ডোম...।

না, নির্ভয়া-কাণ্ড নয়। যদিও দুই ঘটনায় এ পর্যন্ত মিল অনেক। রোহতকের গণধর্ষণ-কাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত (পদম, পবন, সুনীল, সরওয়ার, রাজেশ, সুনীল ও মানবির) ৭ জনকে আজ মৃত্যুদণ্ড দিল হরিয়ানার বিশেষ আদালত। জরিমানা করা হয়েছে ১.৭৫ লক্ষ টাকা। এক নাবালক অভিযুক্তের বিচার চলছে জুভেনাইল কোর্টে। নবম অভিযুক্ত সাম্বির আত্মহত্যা করেছিল পুলিশের হাতে ধরা পড়ার ঠিক পরেই। নির্ভয়া-কাণ্ডে যেমন এক অভিযুক্ত রাম সিংহ আত্মঘাতী হয়েছিল জেলে।

কী ঘটেছিল?

এ বছর ৪ ফেব্রুয়ারির ঘটনা। তিন দিন নিরুদ্দেশ থাকার পর হরিয়ানার আকবরপুর গ্রামের কাছে রোহতক-হিসার জাতীয় সড়কের ধারে একটি পরিত্যক্ত এলাকা থেকে উদ্ধার হয় এক নেপালি তরুণীর ক্ষতবিক্ষত দেহ। দেহ না বলে দেহাংশ বলাই ভাল। ময়নাতদন্ত করতে গিয়ে শিউরে উঠেছিলেন চিকিৎসক এস কে দত্তারবাল। জানিয়েছিলেন, তিরিশ বছরের কর্মজীবনে তাঁর এমন অভিজ্ঞতা হয়নি। দেহের বাঁ দিকের অংশ ছিল না বললেই চলে। হাত দু’টো ছিঁড়ে নিয়ে গিয়েছিল কুকুর। ধর্ষণ করে দেহের গোপন অঙ্গে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল লাঠি, পাথর, ব্লেড। ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে হত্যার পর ধর্ষকরা তাঁর দেহটা ফেলে গিয়েছিল আবর্জনার ধারে। সেখানেই তিন দিন পড়েছিল মৃতদেহটা।

রোহতকে দিদি-জামাইবাবুর সঙ্গে থাকতেন বছর আঠাশের মানসিক প্রতিবন্ধী মেয়েটি। ঘটনার দিন সকলের অজান্তে কোনও ভাবে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। পুলিশের জেরার মুখে অপরাধীরা জানায়, মেয়েটিকে প্রথমে তারা ধর্ষণ করে। তার পর তরুণী যখন জ্ঞান হারান, তারা ইট দিয়ে মারতে থাকে। যত ক্ষণ না মৃত্যু হয়। পুলিশ জানিয়েছে, এক জন ওই তরুণীর হাত দু’টো মুচড়ে দেয়। অন্য দু’জন চেপে ধরে পা। অপরাধীদের মধ্যে রাজেশ এর পর পাথর, ব্লেড নিয়ে আক্রমণ করে মেয়েটিকে। দোষীদের এক জন পরে পুলিশকে বলেছে, ‘‘যা হয়েছে, সব নেশার ঘোরেই হয়েছে। ওকে খুন করতে চাইনি আমরা।’’

অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক সীমা সিঙ্ঘল অবশ্য কোনও কথাই কানে তোলেননি। শুক্রবার ওই সাত জনকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। আজ সাজা ঘোষণার সময় সিঙ্ঘল বলেন, ‘‘এই মামলায় অপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হল। ওদের ফাঁসি হওয়াই উচিত।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এক জন বিচারকের পাশাপাশি আমি এক জন মানুষও। স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছি ওই মেয়েটির আর্তনাদ। এই সমাজে মেয়েরা এখনও অপরাধ এবং লিঙ্গ বৈষম্যের শিকার। এই মুহূর্তে সমাজের উদ্দেশে একটা কড়া বার্তা দেওয়ার প্রয়োজন সব চেয়ে বেশি।’’

এখানেই শেষ নয়। গত ১৬ ডিসেম্বর যন্তর মন্তরের সামনে মেয়ের স্মরণসভায় নির্ভয়ার মা আশা দেবী বলেছিলেন, ‘‘আমার মেয়ের নাম জ্যোতি।’’ তার প্রতিধ্বনিই আজ শোনা যায় বিচারক সীমা সিঙ্ঘলের গলায়। বলেন— ‘নির্ভয়া’ বা অন্য কোনও নামের আড়ালে লুকনোর প্রয়োজন নেই। সগর্বে নাম বলা উচিত মেয়েদের।

অন্য বিষয়গুলি:

MostReadStories
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy