ফাইল চিত্র।
গুজরাতের পাটীদার নেতা হার্দিক পটেল কংগ্রেস ছাড়ার দু’সপ্তাহের মাথায় যেটা সম্ভাব্য ছিল, সেটাই নিশ্চিত হল। আগামী ২ জুন, বৃহস্পতিবার গান্ধীনগরে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সি আর পাটিলের উপস্থিতিতে পদ্ম শিবিরে যোগ দিচ্ছেন হার্দিক। কংগ্রেস ছাড়ার পরে ধারাবাহিক ভাবে কংগ্রেসকে আক্রমণ করে আসছিলেন তিনি। এমনকি পদত্যাগ করার আগেই বিজেপির প্রশংসা শোনা গিয়েছিল তাঁর গলায়। সব মিলিয়ে রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য ছিল, হার্দিকের মোদী-শিবিরে যোগ দেওয়া সময়ের অপেক্ষামাত্র।
বিজেপি শিবিরের দাবি, হার্দিককে পাওয়া গুজরাত ভোটের আগে যথেষ্ট স্বস্তিজনক। গত গুজরাত বিধানসভা ভোটের আগে যখন যেখানে সভা করেছিলেন হার্দিক, গড়ে আড়াই লাখ মানুষের ঢল ছিল। বিজেপির রাতের ঘুম কেড়ে নিয়ে সুরাত থেকে রাজকোট মোদী-বিরোধী স্লোগানে ভরিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। পাটীদার সংরক্ষণ নিয়ে আন্দোলনই ছিল হার্দিকের রাজনীতিতে আসার প্রাথমিক কারণ।
তবে রাজনৈতিক শিবিরের একটি অংশ বলছে, হার্দিকের বিজেপিতে যোগদান কিন্তু আসলে ঘরে ফেরাই। তাঁর বাবা ভরতভাই পটেল ছিলেন গুজরাতের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী আনন্দীবেন পটেলের রাখি-ভাই। তিনি প্রচার করতেন ভরতভাইয়ের জিপে চড়েই। পরে অবশ্য হার্দিক তাঁর রাজনীতি শুরু করলে ভরতভাইকেও কিছুটা পাল্টি খেতে দেখা যায়। তবে এ সবের পিছনেই আনন্দীবেনের হাত ছিল, এমনটাও মনে করেন অনেকে।
আজ কংগ্রেস নেতৃত্বের দাবি, হার্দিক পটেল বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন ঠিকই। কিন্তু পাটীদার সমাজের নেতা হিসেবে হার্দিক নিজেকে যে উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিলেন, বিজেপিতে তাঁর সেই গুরুত্ব থাকবে না। তার প্রমাণ হল, হার্দিকের বিজেপিতে যোগদান দিল্লিতে দলের সদর দফতরে হচ্ছে না। আমদাবাদে বিজেপির রাজ্য দফতরে তা হচ্ছে। গুজরাত থেকে এআইসিসি-র নেতা শক্তিসিন গোহিল বলেন, ‘‘বিজেপি আসলে হার্দিককে ‘কাট টু সাইজ়’ করে ফেলছে। যে দিন হার্দিক সনিয়া গান্ধীকে পদত্যাগপত্র পঠিয়েছিলেন, সে দিনই বলেছিলাম, ওই পদত্যাগপত্রও বিজেপির লিখে দেওয়া। হার্দিক এত দিন বলার চেষ্টা করছিলেন, তিনি বিজেপিতে যাবেন না আম আদমি পার্টিতে যাবেন— তা নিয়ে ভাবছেন। বাস্তবে হার্দিক এখন বিজেপির হাতের পুতুল। তাঁর প্রতিটি পদক্ষেপ বিজেপিই ঠিক করে দেবে। হয় তাঁকে ইডি বা গোপন সিডি-র ভয় দেখানো হয়েছে, না হলে লোভ দেখানো হয়েছে।’’
পাঁচ বছর আগে গুজরাতের বিধানসভা নির্বাচনে হার্দিকের পাটীদারদের জন্য সংরক্ষণের দাবিতে আন্দোলনের সুফল কুড়িয়েছিল কংগ্রেস। এ বার হার্দিক বিজেপিতে গেলে কংগ্রেস পাটীদার ভোট পুরোপুরিই হারাবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। গোহিলের দাবি, পাটীদারদের জন্য চাকরিতে সংরক্ষণ ও অন্যান্য দাবি বিজেপি মেনে নেয়নি। তা সত্ত্বেও হার্দিক বিজেপিতে যাচ্ছেন। বিজেপি পাটীদারদের দাবি মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, এমনও নয়। তা হলে কিসের ভিত্তিতে পাটীদার সমাজ হার্দিককে ভরসা করবে?
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy