পরবর্তী নির্দেশ পর্যন্ত বহাল জ্ঞানবাপী মসজিদের ‘শিবলিঙ্গের’ সুরক্ষা। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদের ওজুখানার জলাধারে তথাকথিত শিবলিঙ্গের (মতান্তরে ফোয়ারা) নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ১৭ মের অন্তর্বর্তী নির্দেশের সময়সীমা পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বাড়াল সুপ্রিম কোর্ট। শুক্রবার শুনানির পরে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, ওই ‘শিবলিঙ্গের’ সুরক্ষার বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের আর্জি জানিয়ে হিন্দু পক্ষ বারাণসী জেলা আদালতে আবেদন করতে পারবে।
ওই ‘শিবলিঙ্গে’র বয়স নির্ধারণে প্রয়োজনীয় পরীক্ষার জন্য হিন্দুপক্ষের আবেদন মেনে ইলাহাবাদ হাই কোর্ট সোমবার ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ (আর্কিয়োলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া বা এএসআই)-এর মহানির্দেশককে ‘সার্ভে কমিশনার’ নিয়োগ করে পরীক্ষা চালিয়ে লিখিত ভাবে মতামত জানানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই নির্দেশে আপত্তি জানিয়ে শুক্রবার ‘অঞ্জুমান ইন্তেজ়ামিয়া (জ্ঞানবাপী) মসজিদ কমিটি’ আবেদন জানায় শীর্ষ আদালতের কাছে। এ বিষয়ে তিন সপ্তাহের মধ্যে হিন্দু পক্ষকে ‘জবাব’ দিতে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ।
গত ১৭ মে বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ অন্তর্বর্তী নির্দেশ দিয়েছিল, নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার নির্দেশ দিতে পারে বারাণসীর আদালত। কিন্তু কোনও ভাবেই মসজিদে নমাজ বন্ধ করা যাবে না। সেই অন্তর্বর্তী নির্দেশের সময়সীমা শনিবার শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পরবর্তী নির্দেশ ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্ট তা বহাল রেখেছে।
১৭ মে শীর্ষ আদালতের ওই নির্দেশের আগেই বারাণসী নিম্ন আদালতের বিচারক রবিকুমার দিবাকরের এজলাসে আদালত নিযুক্ত কোর্ট কমিশনার এবং ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ (আর্কিওলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া বা এএসআই)-এর বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত পর্যবেক্ষক দলের সমীক্ষা এবং ভিডিয়োগ্রাফি সংক্রান্ত প্রাথমিক রিপোর্ট পেশ করা হয়েছিল। এর পর বিচারক রবিকুমার দিবাকর মসজিদের অন্দরের ওজুখানা ও তহ্খানা সিল করার নির্দেশ দেন। নির্দেশে বলা হয়, বারাণসীর জেলাশাসক, পুলিশ কমিশনারের পাশাপাশি সিআরপিএফের এক জন কমান্ড্যান্ট (সুপার) স্তরের আধিকারিককে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। কাউকেই প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না।
সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে আবেদন জানিয়েছিল জ্ঞানবাপী মসজিদ কমিটি। তারই প্রেক্ষিতে ওই নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি চন্দ্রচূড়। এর পর মামলাটি বারাণসী নিম্ন আদালত থেকে বারাণসী জেলা আদালতে স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। এর পর বারাণসী জেলা আদালতে মসজিদ কমিটি দাবি করেছিল, ১৯৯১ সালের ধর্মীয় উপাসনাস্থল রক্ষা (বিশেষ ব্যবস্থা) আইন অনুযায়ী এ সংক্রান্ত আবেদনের শুনানি হতে পারে না। কিন্তু গত ১২ সেপ্টেম্বর সেই আবেদন খারিজ করে দেন জেলা বিচারক অজয়কুমার বিশ্বেস।
প্রসঙ্গত, ২০২১-এর অগস্টে পাঁচ হিন্দু মহিলা জ্ঞানবাপীর ‘মা শৃঙ্গার গৌরী’ (ওজুখানা ও তহখানা-সহ) এবং মসজিদের অন্দরের পশ্চিমের দেওয়ালে দেবদেবীর মূর্তির অস্তিত্বের দাবি করে তা পূজার্চনার অনুমতি চেয়েছিলেন বারাণসী দায়রা আদালতে। এর পর দায়রা আদালতের বিচারক রবিকুমার নিযুক্ত কমিটি মসজিদের অন্দরে সমীক্ষা ও ভিডিয়োগ্রাফির নির্দেশ দিয়ে পর্যবেক্ষক দল গঠন করেছিল। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ইলাহাবাদ হাই কোর্টে মুসলিম পক্ষের দায়ের করা আবেদন এখনও বিচারাধীন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy