ছবি: এএফপি।
গত দেড় দশকে ব্রহ্মপুত্রের এমন রূপ দেখেনি গুয়াহাটি। চক্রেশ্বর মন্দিরের পিছনে ব্রহ্মপুত্রের বুকে ১৫ ফুট উঁচুতে রয়েছে বিষ্ণুর যোগনিদ্রার মূর্তি। জল বাড়তে বাড়তে আজ সকালে সেই বিষ্ণুকেও গ্রাস করে নিল ব্রহ্মপুত্র। ফ্যান্সিবাজারে প্রধান সড়কের দেওয়াল ভেঙে রাস্তায় উঠতে চাওয়া জল কোনও মতে বালির বস্তা ফেলে আটকে রাখা হয়েছে। রাতেই সতী রাধিকা উদ্যান, জাহাজঘাটের মাছ বাজার উপচে উজানবাজারে ঢুকেছে জল। জল ঢুকে গৃহবন্দী পান্ডু, সাদিলাপুরের মানুষ। চুনচালি জলে ডুবেছে। নারেঙ্গি থেকে চন্দ্রপুর যাওয়ার রাস্তা জলের তলায়।
বিপদসীমা যেখানে ৪৯ সেন্টিমিটার, সেখানে ব্রহ্মপুত্র ৫১ সেন্টিমিটার ছুঁতে চলেছে। কামরূপ মহানগর প্রশাসন জানায় মোট ক্ষতিগ্রস্তর সংখ্যা ৫৬ হাজার। সব চেয়ে শোচনীয় অবস্থা সোনাপুর ও চন্দ্রপুরের। কাজিরাঙার পুরোটাই বানভাসি। আশ্রয়ের খোঁজে চলছে প্রাণীদের সাঁতার। ২৩টি হরিণ, ২টি বুনো শুয়োর, তিনটি গন্ডার, একটি হাতি-সহ মৃত পশুর সংখ্যা এখন পর্যন্ত ৩০। একই ভাবে পবিতরা অভয়ারণ্য, ওরাঙ জাতীয় উদ্যান-সহ অন্য অরণ্যও জলমগ্ন। গুয়াহাটি থেকে পবিতরা যাওয়ার রাস্তার চিহ্নও দেখা যাচ্ছে না। বিভিন্ন স্থানে সেনাবাহিনী উদ্ধারকাজে সাহায্য করছে। ধুবুড়ি জেলার কারাগারে জল ঢোকায় সেখানকার ৪০৯ বন্দিকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
আজ পর্যন্ত রাজ্যের ৩২টি জেলা বন্যা কবলিত। ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ৪৫ লক্ষ মানুষ। ২২৬টি ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন লক্ষাধিক। মৃতের সংখ্যা ১৯। বন্যা পরিস্থিতির দিকে তাকিয়ে ১৮ জুলাই থেকে শুরু হতে চলা বিধানসভা অধিবেশন পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। ১৯ ও ২০ জুলাই গুয়াহাটিতে ভারত-বাংলাদেশ শিল্প সম্মেলন ছিল। বাতিল করা হয়েছে তা-ও।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গত সন্ধ্যায় বন্যা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালের সঙ্গে কথা বলেন। আজ কেন্দ্রীয় জলসম্পদমন্ত্রী গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াত অসমে এসে আকাশপথে ডিব্রুগড়, তিনসুকিয়া, শিবসাগর, লখিমপুর, মাজুলির বন্যা পরিস্থিতি দেখেন। মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে নিজের বেতনের অর্ধেক দান করেছেন অ্যাথলিট হিমা দাস। সন্ধ্যায় গজেন্দ্র সিংহ, জলসম্পদ বিভাগের প্রধান সচিব অবিনাশ জোশী, ব্রহ্মপুত্র বোর্ডের অধ্যক্ষ রাজীব যাদব মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানান, বন্যার ক্ষতি যাচাই করতে শীঘ্রই কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল অসমে আসবে। অর্থমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা জানান, কেন্দ্র ২৫১.৫৫ কোটি টাকা আপৎকালীন সহায়তা দিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy