Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Menstruation

ঋতুমতীদের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা সরানোর প্রস্তাব, কেন্দ্রকে নোটিস গুজরাত হাইকোর্টের

এর আগে, সুপ্রিম কোর্ট অনুমতি দেওয়ার পরেও শবরীমালা মন্দিরে ঋতুমতীদের প্রবেশ নিয়ে ধুন্ধুমার বেধেছিল।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০২১ ১৩:১৪
Share: Save:

ঋতুমতীদের নিয়ে সামাজিক ছুঁত্‌মার্গ দূর করার প্রস্তাব দিল গুজরাত হাইকোর্ট। সরকারি, বেসরকারি বা কোনও ধর্মীয় স্থানে ঋতুমতীদের যাতে কোনও রকম হেনস্থার শিকার না হতে হয়, সে ব্যাপারে পদক্ষেপ করার জন্য রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের মতামত চাইল আদালত। এ নিয়ে জনমানসে কী ভাবে সচেতনতা তৈরি করা যায় তা নিয়েও পরামর্শ চাওয়া হয়েছে।

২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে গুজরাতের ভুজে শ্রী সহজানন্দ গার্লস ইনস্টিটিউটের হস্টেলে ৬৮ জন ঋতুমতীকে হেনস্থার অভিযোগ ওঠে। জানা যায়, ঋতুস্রাবের দিনগুলিতে সেখানে হস্টেলের মূল ভবনের নীচে একটি ঘরে মেয়েদের আলাদা থাকা বাধ্যতামূলক। কেউ কেউ ঋতুস্রাবের কথা লুকিয়ে সকলের সঙ্গে মিলেমিশে থাকছে বলে গুজব ছড়ায় সেখানে। তার জেরে ৬৮ জন কলেজ পড়ুয়াকে নগ্ন করে ‘সত্যতা’ যাচাই করেন হস্টেল কর্তৃপক্ষ। বলা হয়, ঋতুস্রাবের কথা লুকনোয় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের পবিত্রতা নষ্ট হয়েছে।

বিষয়টি সামনে আসতেই প্রতিবাদের ঝড় ওঠে সর্বত্র। যার পর ঋতুমতীদের প্রতি এই বৈষম্য নিয়ে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন সমাজকর্মী নির্ঝরী সিন্‌হা মাট্টার। মঙ্গলবার বিচারপতি জেবি পর্দিওয়ালা নেতৃত্বাধীন ডিভিশনে মামলা চলাকালীন নির্ঝরীর আইনজীবী মেঘা জানি আদালতে জানান, ঋতুস্রাব একটি শারীরবৃত্তীয় ঘটনা। প্রত্যেক মহিলাকে এই প্রজনন চক্রের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। তার পরেও বিষয়টি নিয়ে ছুঁত্‌মার্গ দূর হয়নি। বলা হয় ঋতুমতী অবস্থায় মেয়েরা অপবিত্র হয়ে ওঠে, চারপাশের পরিবেশকে দূষিত করে। যে কারণে দৈনন্দিন জীবনে আজও বৈষম্য এবং হেনস্থার শিকার হতে হয় মেয়েদের। ওই দিনগুলিতে একঘরে করে রাখা হয় তাঁদের। রান্নাঘরে ঢুকতে দেওয়া হয় না, বাসনপত্র ছুঁতে দেওয়া হয় না, ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানেও যোগ দিতে পারেন না।

এর পরই আদালতের তরফে ৯টি পয়েন্টের একটি নির্দেশিকার প্রস্তাব দেওয়া হয়। বলা হয়, সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হস্টেল, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান-সহ সমস্ত জায়গায় ঋতুস্রাবের জন্য মেয়েদের যাতে একঘরে করে না রাখা হয়, তার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে সরকারকে। স্বাস্থ্যকর্মী, কিশোরী মেয়ে এবং তাঁদের বাবা-মায়েদের মধ্যে এ নিয়ে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। প্রয়োজনে বিষয়টি তুলে ধরতে হবে স্কুলের পঠনপাঠনেও।

এর আগে, সুপ্রিম কোর্ট অনুমতি দেওয়ার পরেও শবরীমালা মন্দিরে ঋতুমতীদের প্রবেশ নিয়ে ধুন্ধুমার বেধেছিল। সে বার মন্দির কর্তৃপক্ষের পক্ষই নিতে দেখা গিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকারের একাধিক মন্ত্রী-আমলাকে। তবে গুজরাত হাইকোর্ট জানিয়েছে, তারা শুধু ছুঁত্‌মার্গ দূর করতে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তার প্রস্তাব দিয়েছে। সিদ্ধান্ত শোনায়নি। আদালতের তৈরি নির্দেশিকা নিয়ে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকার কী মতামত জানায়, তার পরেই সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে। আগামী ৩০ মার্চ এই মামলার পরবর্তী শুনানি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy