Advertisement
E-Paper

‘জাত’ চেনানোর লড়াইয়ে জয়ী বিজেপির হার্দিক-অল্পেশ, দল না বদলেও মানরক্ষা জিগ্নেশের

হার্দিক, অল্পেশ এবং জিগ্নেশ—২০১৭ সালের গুজরাত বিধানসভা নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন এই ত্রয়ী। এই বারের নির্বাচনে কী ফল করলেন তাঁরা?

হার্দিক-অল্পেশ মোদীর গড় রক্ষা করেছেন। কংগ্রেস এবং নিজের সম্মান রক্ষা করেছেন জিগ্নেশও।

হার্দিক-অল্পেশ মোদীর গড় রক্ষা করেছেন। কংগ্রেস এবং নিজের সম্মান রক্ষা করেছেন জিগ্নেশও। ফাইল চিত্র ।

রুদ্রদেব ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০২২ ১৮:১৪
Share
Save

হার্দিক পটেল, অল্পেশ ঠাকুর, জিগ্নেশ মেবাণী।

গুজরাত বিধানসভা নির্বাচনে বিশেষ নজর ছিল ওই রাজ্যের তিন ‘তরুণ তুর্কির’ উপর। এঁদের মধ্যে দু’জন নেমেছিলেন মোদীর গড় রক্ষার বিশ্বস্ত প্রহরী হয়ে। আর এক জনের লড়াই ছিল সম্মান রক্ষার। হার্দিক-অল্পেশ মোদীর গড় রক্ষা করতে সফল হয়েছেন। কংগ্রেস এবং নিজের সম্মান রক্ষা করেছেন জিগ্নেশও।

আমদাবাদ জেলায় তাঁর নিজের শহর ভিরামগাম কেন্দ্র থেকেই হার্দিককে প্রার্থী করেছিল বিজেপি। কংগ্রেসের প্রার্থী তথা ভিরামগামের বিধায়ক লখা ভারওয়াদ এবং আম আদমি পার্টির অমরসিংহ ঠাকুরকে হারিয়ে ৫১ হাজারেরও বেশি ভোটে জয়ী হয়েছেন বিজেপির এই যুব প্রার্থী। গান্ধীনগর দক্ষিণ থেকে বিজেপির হয়ে ভোটময়দানে নামেন অল্পেশ। কংগ্রেসের হিমাংশু পটেল এবং আপের দৌলত পটেলকে হারিয়ে তিনিও বিজেপির মান রেখেছেন। অল্পেশের জয় হয়েছে ৪৩ হাজারেরও বেশি ভোটে।

কঠিন প্রতিপক্ষ পেয়ে জিতেছেন কংগ্রেসের জিগ্নেশও। ২০১৭-এর নির্বাচনে কংগ্রেস সমর্থিত নির্দল প্রার্থী হিসাবে দাঁড়িয়ে জিগ্নেশ বডগাম থেকে জিতেছিলেন। এ বারও তিনি কংগ্রেসের হয়ে ওই একই কেন্দ্র থেকে লড়েছিলেন। তাঁর বিপরীতে বিজেপির প্রার্থী করেছিল হেভিওয়েট মণিলাল ভগেলাকে। আপের প্রার্থী ছিলেন দলপত ভাটিয়া। মণিলাল এবং দলপতকে হারিয়ে আবার বডগাম দখল করলেন জিগ্নেশ। ভোটগণনার প্রথম থেকেই মণিলালের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর শেষবেলায় এসে মণিলালের থেকে ৪,৯২৮ ভোট বেশি পেয়ে জিতে যান তিনি।

হার্দিক পটেল জিতেছেন ৫১,৭০৭ ভোটে।

হার্দিক পটেল জিতেছেন ৫১,৭০৭ ভোটে। ফাইল চিত্র।

হার্দিক, অল্পেশ এবং জিগ্নেশ— ২০১৭ সালের রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের আখ্যান গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন এই ত্রয়ী। রাজনীতির আঙিনায় তিন জনেই তরুণ। ২০১৭ সালে গুজরাত নির্বাচনে রাজনীতির খেলা ঘোরানোর পর তাঁদেরও ‘তারকা প্রার্থী’রই তকমা দিয়েছেন ভোটপণ্ডিতরা। এ বার তিন জনেই নেমেছিলেন নিজেদের ‘জাত’ চেনানোর লড়াইয়ে।

জাতপাতভিত্তিক রাজনীতি থেকে এই তিন তরুণ তুর্কির উত্থান এবং পরে ২০১৭-র নির্বাচনে ‘তারকা প্রার্থী’ হয়ে ওঠা। যদিও রাজনীতির আঙিনায় তিন জনেই দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন আরও আগে।

ওবিসি নেতা অল্পেশ ঠাকুরের উত্থান গুজরাতে রমরমিয়ে চলা অবৈধ মদের ব্যবসা বন্ধ করার লড়াই থেকে। পরে আবার পাটিদার আন্দোলন নিয়ে উল্টো সুর গেয়েছিলেন তিনি। যে পাটিদার আন্দোলন আবার রাজনীতিতে জায়গা করে দিলেছিল হার্দিককে। পাটিদারদের জন্য সংরক্ষণ চেয়ে রাস্তায় নেমেছিলেন হার্দিক। আর অল্পেশের দাবি ছিল, ওবিসিদের জন্য থাকা সংরক্ষণ থেকে পাটিদারদের ভাগ দেওয়া চলবে না। তবে এ বারের নির্বাচনে তাঁরা ছিলেন গলায়-গলায়। কারণ দু’জনেই গেরুয়া শিবিরের প্রার্থী। তবে দু’জনেই আগে ছিলেন কংগ্রেসে। ২০১৯-এর আগে পর্যন্ত অল্পেশের মুখে এবং কয়েক মাস আগে পর্যন্ত হার্দিকের মুখে বিজেপি বিরোধী স্লোগান এবং বক্তব্যই শোনা যেত। কিন্তু অল্পেশ ২০১৯ সালে ‘হাত’ ছেড়ে পদ্মশিবিরে যোগ দেন। যদিও অল্পেশ কংগ্রেসের টিকিটে ২০১৭-এর বিধানসভা নির্বাচনে রাধনপুর কেন্দ্র থেকে লড়েছিলেন এবং ৪৮.২৩ শতাংশ ভোট পেয়ে জিতেছিলেন। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে ওই একই কেন্দ্রের উপনির্বাচনে কংগ্রেসের রঘুভাই দেশাইয়ের কাছে হেরে যান তিনি।

হার্দিক বিজেপিতে যোগ দেন চলতি বছরে। কংগ্রেসে কার্যকরী সভাপতির পদ পাওয়ার পরও দলে গুরুত্ব পাচ্ছেন না জানিয়ে, দলীয় নেতৃত্বকে দুষে এবং বিজেপির ভূয়সী প্রশংসা করে পদ্মে প্রবেশ হার্দিকের।

অল্পেশ ঠাকুর জয়ী ৪৩,০৬৪ ভোটে।

অল্পেশ ঠাকুর জয়ী ৪৩,০৬৪ ভোটে। ফাইল চিত্র।

হায়দরাবাদের ছাত্রনেতা রোহিত ভেমুলার মৃত্যুর পর সরকার বিরোধী আন্দোলনে আওয়াজ তুলেছিলেন দলিত পরিবারের ছেলে জিগ্নেশ। পরে ভীমা কোরেগাঁও হিংসার ঘটনাতেও সরব হয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। কংগ্রেসের মনে হয়েছিল তাদের ‘তুরুপের তাস’ হয়ে উঠতে পারেন জিগ্নেশ। তিনিও অবশ্য কংগ্রেসের দেওয়া প্রস্তাব ফেলেননি। ২০২১-এ বামসঙ্গ ছেড়ে আসা চর্চিত নেতা কানহাইয়া কুমারের হাত ধরে কংগ্রেসে যোগ দেন তিনি। দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব লাগানোর অভিযোগে চলতি বছরের এপ্রিলে অসম পুলিশের হাতে গ্রেফতারও হতে হয়েছিল জিগ্নেশকে। অসমের বিজেপির এক নেতার অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁর গ্রেফতারের পর কংগ্রেসের দাবি ছিল, গুজরাতে জিগ্নেশের উত্থান বিজেপিকে ভয় ধরাচ্ছে। আর সেই কারণেই এই গ্রেফতারি। বৃহস্পতিবারের নির্বাচনের ফলও সেই কথাই বলছে। গুজরাতে জিগ্নেশের কংগ্রেসে যোগদান সেই সময় গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছিল। সেই গুরুত্ব তিনি বজায় রাখতে পেরেছেন। দল বদল না করেও বাগডাম থেকে জিতেছেন জিগ্নেশ।

৪,৯২৮ ভোটে জিতেছেন জিগ্নেশ।

৪,৯২৮ ভোটে জিতেছেন জিগ্নেশ। ফাইল চিত্র।

Gujarat Assembly Election 2022 Hardik Patel Alpesh Thakor Jignesh Mevani

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।