ভগবন্ত মান, অরবিন্দ কেজরীওয়াল এবং ইসুদান গঢ়বী। ফাইল চিত্র।
মোবাইল আর ই-মেলে ভোটারদের মতামত সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছিল কয়েক সপ্তাহ আগেই। বিধানসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার পরের দিনই গুজরাতে দলের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থীর নাম প্রকাশ করলেন আম আদমি পার্টি (আপ)-র প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়াল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের রাজ্য দখলের জন্য এ বার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর বাজি গুজরাতে অন্যতম জনপ্রিয় টিভি ব্যক্তিত্ব ইসুদান গঢ়বী।
৪০ বছরের গঢ়বী গুজরাতের জনপ্রিয় টিভি সঞ্চালক এবং সাংবাদিক ছিলেন। একাধিক সংবাদ চ্যানেলের সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেছেন। দ্বারকা জেলার বাসিন্দা গঢ়বী আপের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।
শুক্রবার গঢ়বীর নাম ঘোষণার সময় কেজরীওয়ালের পাশে হাজির ছিলেন আপ নেতা তথা পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান। গত ফেব্রুয়ারিতে পঞ্জাব ভোটের আগে একই কৌশলে সরাসরি ‘জনতার দরবার’ থেকে ‘মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী’ হিসেবে মানকে বেছে নিয়েছিলেন কেজরীওয়াল। আর অকালি দল বনাম কংগ্রেসের কয়েক দশকের মেরুকরণ ভেঙে বিপুল গরিষ্ঠতা নিয়ে সে রাজ্যে সরকার গড়েছিল আপ।
ঘটনাচক্রে, সে সময়ই গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী পদে নামী আইনজীবী অমিত পালেকরের নামও ঘোষণা করেছিলেন কেজরী। যদিও তাতে সাফল্য আসেনি। তবে প্রাক্তন আমলা কেজরী যে ভাবে প্রথাগত রাজনীতির বৃত্তের বাইরে থাকা জনপ্রিয় মুখেদের বিভিন্ন রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করছেন, তা তাঁর রাজনৈতিক কৌশলের অঙ্গ বলেই মনে করছেন অনেকে। তাঁদের মতে, পোড় খাওয়া রাজনীতিকদের বড় অংশের সম্পর্কেই আমজনতার মনে ধারণা খুব ভাল নয়। সেটা আঁচ করেই কেজরীর এই পদক্ষেপ।
অক্টোবরের শেষ থেকেই ইমেল এবং মোবাইলে কলের মাধ্যমে গুজরাতের আম ভোটারদের থেকে ‘পছন্দের মুখ্যমন্ত্রী’ নাম সংগ্রহের পালা চলছিল। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় আনুষ্ঠানিক ভাবে সেই ‘পরীক্ষা’ শেষ হয়। শুক্রবার তার ‘ফল’ ঘোষণা করেন আপ প্রধান। চূড়ান্ত পর্বে গঢ়বীর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আপের গুজরাত শাখার সভাপতি গোপাল ইতিলিয়া। ছ’বছর আগে হার্দিক পটেলের নেতৃত্বে পাটিদার সংরক্ষণ আন্দোলনের অন্যতম মুখ ছিলেন গোপাল।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে গুজরাতের অনেক ভোটারের কাছে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে পছন্দের নাম জানার জন্য ফোন এসেছে। সেখানে রেকর্ড করা কণ্ঠস্বর গঢ়বী এবং গোপালের পাশাপাশি ‘অন্য কোনও পছন্দের’ জন্য বোতাম টেপার অনুরোধ জানিয়েছে। শুক্রবার কেজরী জানিয়েছেন, সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতেই বেছে নেওয়া হয়েছে প্রাক্তন সাংবাদিক তথা টিভি সঞ্চালক গঢ়বীকে।
২০১৭ সালের বিধানসভা ভোটে গুজরাতে ৯৯টি আসনে জিতে টানা পঞ্চম বারের জন্য ক্ষমতায় এসেছিল বিজেপি। কিন্তু ১৯৯০ সালের পর সেটাই ছিল বিজেপির সবচেয়ে কম আসনপ্রাপ্তি। অন্য দিকে, ২০১৭ সালের বিধানসভা ভোটে ৭৭টি আসনে জিতে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেককেই চমকে দিয়েছিল কংগ্রেস। নির্দল এবং অন্যেরা পেয়েছিল ৬টি আসন। এ বার অবশ্য আপ জোরকদমে ভোটের ময়দানে নেমেছে। সম্প্রতি সুরত-সহ কয়েকটি শহরের পুরভোটে কংগ্রেসকে পিছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে আপ। এর পর কেজরীওয়াল ধারাবাহিক ভাবে গুজরাত সফর শুরু করেছেন। তাঁর দাবি, বিধানসভা ভোটেও বিজেপির মূল লড়াই হবে আপের সঙ্গে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy